বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার সিদ্ধান্তের নিন্দায় যুক্তরাষ্ট্র
Published: 5th, August 2025 GMT
অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের মামলার বিচার শুরুর আগে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার আদেশ দেন।
নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ক্ষমতা ধরে রাখতে অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্র করেছিলেন অভিযোগে বলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলার বিচারকাজ শুরুর আগে তাঁকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিলেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
ব্রাজিলের সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলসোনারো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন মিত্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্যুরো অব ওয়েস্টার্ন হেমিস্ফিয়ার অ্যাফেয়ার্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানায়।
ব্রাজিলের সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলসোনারো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন মিত্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্যুরো অব ওয়েস্টার্ন হেমিস্ফিয়ার অ্যাফেয়ার্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানায়।পোস্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিচারপতি মোরায়েস বিরোধীদের দমনসহ গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলতে ব্রাজিলের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে যাচ্ছেন।
পোস্টে আরও বলা হয়, জনসমক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থেকে বলসোনারোকে আরও বেশি বঞ্চিত করা কোনো জনসেবা নয়। বলসোনারোকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।
আরও পড়ুনব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বাড়ি ও কার্যালয়ে তল্লাশি১৮ জুলাই ২০২৫বলসোনারোকে গৃহবন্দী রাখার নির্দেশের ফলে দেশটির ডানপন্থী এই রাজনীতিক ও আদালতের মধ্যকার টানাপোড়েন আরও বাড়ল।
২০২২ সালের নির্বাচনে লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে পরাজিত হন বলসোনারো। পরে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতা ধরে রাখতে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা হয়।
বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগে ওঠায় গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে গত মাসে ৭০ বছর বয়সী বলসোনারোর পায়ে ইলেকট্রিক কড়া পরানোর নির্দেশ দেন দেশটির আদালত। পাশাপাশি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তাঁর ভাষণ অনলাইনে প্রচারের ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের৬ ঘণ্টা আগেবলসোনারোর প্রতি সংহতি জানিয়ে গত রোববার ব্রাজিলের কয়েকটি শহরে সমাবেশ হয়। এর মধ্যে রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ছেলের সঙ্গে তাঁর সরাসরি ফোনালাপ সম্প্রচার করে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা হয়। এ ঘটনায় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেক্সান্দ্রে ডি মোরায়েস ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। আদালতের বিধিনিষেধ বারবার অমান্য করায় বলসোনারোর সমালোচনা করে তাঁকে গৃহবন্দী রাখার নির্দেশ দেন এই বিচারপতি। একই সঙ্গে দেশটির সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে তাঁর আইনজীবী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে দেখা করতে কিংবা মুঠোফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করেন আদালত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র বলস ন র র বলস ন র ক ব যবহ র গ হবন দ দ শট র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা: সাদিক কায়েম
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদেরের বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা মো. আবু সাদিক কায়েম। তিনি দাবি করেছেন, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গতকাল রোববার মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।
এর আগে গতকাল রাতে এক ফেসবুক পোস্টে আবদুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যারা সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করত, তারা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিচয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সাদিক কায়েম এমন কয়েকজনকে বাঁচাতে তদবির করেন বলে অভিযোগ তোলেন আবদুল কাদের।
আরও পড়ুনছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনের অংশীদার হতেন ‘ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা’, দিলেন অনেকের পরিচয়১৪ ঘণ্টা আগেআবদুল কাদেরের বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে ছাত্রশিবির নেতা সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
১. বিপ্লবের পর দুইটি কনসার্ন ছিল। প্রথমটি ছিল অপরাধের বিচার। দ্বিতীয়টি ছিল বিচারের নামে নিরীহ কোনো ব্যক্তির হয়রানি না হওয়া।
সে সময় অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানান যে ‘তারা ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত থাকলেও কোনো ফৌজদারি অপরাধ করেননি এবং ব্যক্তিগত আক্রোশবশত মামলায় তাদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে।’
স্বাভাবিকভাবেই গণহারে মামলার আশঙ্কা থাকলে কে অপরাধী আর কে নিরপরাধ, তা যাচাই করার জন্য আন্দোলনে সক্রিয় নানা স্টেকহোল্ডারের কাছে তথ্যগুলো ফরওয়ার্ড করে পারস্পরিক ফিডব্যাকের ভিত্তিতে ভেরিফাই করাটা জরুরি ছিল। তাই বেশ কয়েকটি কনসার্ন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পেয়ে আমি এনসিপি নেতা ও সংস্কার কমিশনের এক সদস্য আরমান হোসেন এবং মাহিনকে ফরওয়ার্ড করি অধিকতর তদন্তের জন্য।
তাদের বলেছি, এমন একটি দাবি এসেছে যে তারা হামলায় যুক্ত ছিলেন না, এই দাবিটি খতিয়ে দেখতে, যাতে অসচেতনতা বশত নিরপরাধ কেউ ভিকটিম না হন।
২. এনসিপি থেকে শুরু করে সব দলের নেতারাই সে সময় এ রকম বিভিন্ন সুপারিশ পেয়েছেন এবং নিজেদের মধ্যে চালাচালি করেছেন ভেরিফাই করার জন্য।
আবদুল কাদের নিজেই উল্লেখ করেছেন, মামলার তালিকাগুলো আমরা পারস্পরিক আলোচনা করে প্রস্তুত করেছি। এখন, নিজেদের মধ্যে কথা না বললে কীভাবে জানব—আসলে কেউ অপরাধী, নাকি তাকে হয়রানি করা হচ্ছে?
৩. স্ক্রিনশটে যাদের নাম যুক্ত আছে, তারা কেউই শিবিরের কেউ না। ৫ আগস্টের পর থেকেও তারা শিবিরের কোনো পদে বা কর্মসূচিতে ছিলেন না।
ফলে, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
৪. সাঈদী নামের এক ছেলেকে মামলা থেকে বাঁচাতে আমি নাকি বিভিন্ন জায়গায় কল করেছি—এটাও একটি মিথ্যা।
সাঈদী অপরাধী, এবং তাকে বাঁচানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।
৫. মুহসিন হলের একজনের সাথে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ উক্ত শাহাদাতকে আমি চিনিই না।
তা ছাড়া, কাদের লিখেছে, ‘চব্বিশ সালের সেপ্টেম্বরে এই মামলা হওয়ার পরে শাহাদাতকে নিয়ে একজন পোস্ট করেন। পরবর্তীতে ওই পোস্টদাতার সাথে শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম যোগাযোগ করেন।’
আচ্ছা, আমি যদি ফোন দিতেই চাইতাম, তাহলে তো সেটা মামলা হওয়ার আগেই দেওয়ার কথা ছিল। মামলা হওয়ার পরে কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট দিলে সেই পোস্টদাতাকে ফোন দেওয়ার কী দরকার!
এলাকায় থাকতে কোনো সময় শিবির করেছে, তামিরুল মিল্লাতে অধ্যয়নরত অবস্থায় শিবিরের কোনো আয়োজনে অংশ নিয়েছে, শিবিরের নেতা হিসেবে বা শিবির কানেকশন ব্যবহার করে জুলাইয়ের বড় নেতাও হয়েছে—কিন্তু এখন উগ্র শিবিরবিদ্বেষী—এমন মানুষের সংখ্যাও কম না।
যদি জীবনের কোনো এক ধাপে সাময়িক সময়ের জন্য ব্যক্তিগত সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে কেউ শিবিরের সাথে যোগাযোগ রাখে, পরবর্তীতে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিবিরবিরোধী ভূমিকা নেয় অথবা ছাত্রলীগে যুক্ত হয়—এবং, এমন নরপশুদের কর্তৃক ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা নিয়মিত ভিক্টিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের কর্মকাণ্ডের দায়ভার যদি শিবিরকে নিতে হয়, তাহলে শিবির ছেড়ে বাগছাস-এনসিপিতে চলে যাওয়া ব্যক্তিদের কৃতিত্ব, দুর্নীতিসহ অন্যান্য নেতিবাচক ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের দায়ভারও তো শিবিরকে নিতে হবে!
সেটা কি যৌক্তিক হবে?