সোনারগাঁয়ে দেড় কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি প্রতারণা করে দখলের অভিযোগ
Published: 8th, August 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে দেড় কোটি টাকার খ-তপসিলভূক্ত সরকারী সম্পত্তি প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে দখলের অভিযোগ উঠেছে ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে এলাকার অস্তিত্বহীন মানুষের নাম ব্যবহার করে এ সম্পত্তি দখলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পেরাব গ্রামের মো. শহিদুল্লাহ বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বেলাব গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র পালের ছেলে উজ্জ্বল চন্দ্র পাল নামে জামপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ নেন। পরে গত বছরের ১৯মার্চ ২৯৯৯ নং দলিলে পাওয়ার অব এ্যাটর্নীর মাধ্যমে ২৫শতাংশ খ-তপসিলভূক্ত সরকারী নাল জমি হাতিয়ে নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে এ সম্পত্তি অর্থের বিনিময়ে ভূমি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে নামজারি করে নেয়। এর আগেই এ সম্পত্তি রেকর্ডীয় মালিক হিসেবে পারুল প্রভা সুন্দরী পাল স্বামী গোপাল চন্দ্র পাল হাল সাং ভারত পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের খ-তপসিলে অর্ন্তভূক্ত হয়।
পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পালপাড়া গ্রামের উজ্জ্বল চন্দ্র পাল নামের এক ব্যাক্তি আশা লতাকে তার মা সাজিয়ে ওই সম্পত্তি নিজের দাবি করেন। কিন্তু রেকর্ডীয় মালিক পারুল প্রভা সুন্দরী পালকে তার নানি দাবি করেন।
প্রকৃত পক্ষে জাতীয় পরিচয় পত্রে আশা লতার মায়ের নাম বকুল রানী পাল। পরে এ সম্পত্তি আমমোক্তার দলিলের মাধ্যমে জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য মো.
তবে আশা লতার মায়ের নাম সম্পদের পর্চার রেকর্ডে প্রভা সুন্দরী পাল কিন্তু জাতীয় পরিচয় পত্রে বকুল রানী নামের অন্তর্ভূক্ত আছে। বর্তমানে তারা জীবিত রয়েছেন। তবে আশা লতাকে মৃত দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ নেন উজ্জ্বল চন্দ্র পাল।
এছাড়াও ওয়ারিশ সনদে উজ্জ্বল চন্দ্র পালকে একক মালিকানা দেখানো হয়েছে। তার মা আশা লতা পাল, বাবা নারায়ণ চন্দ্র পাল, এক ভাই ও অন্তরা পাল নামের এক বোন রয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পালপাড়া গ্রামের ইমরান নামের এক যুবক জানান, সরকারী সম্পত্তি দাবিদার উজ্জ্বল চন্দ্র পালের মা আশা লতা, বাবা নারায়ণ চন্দ্র পাল ও বোন অন্তরা পাল ও আরো এক ভাই চঞ্চল চন্দ্র পাল তারা জীবিত রয়েছেন। তার বাবা নারায়ণ চন্দ্র পাল নবীনগর পৌর এলাকার বড়বাজারে গুড় ব্যবসায়ী।
পেরাব গ্রামের মো. শহিদুল্লাহর দাবি, জমির মূল্য বৃদ্ধির কারনে স্থানীয় দালাল চক্র সরকারী সম্পত্তির ওপর নজর পড়েছে। দেড় কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি ভূয়া ওয়ারিশ ও ইউনিয়ন পরিষদের সনদ ব্যবহার করে কব্জায় নিয়েছে। সেই সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ভাগ ভাটোয়ারা করে নিয়েছেন। রেকর্ডীয় মালিক পারুল প্রভা সুন্দরী পালের তারা কোন আত্মীয় স্বজন নন।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য মো. বদরুজ্জামান বলেন, সকল কাগজপত্র সঠিক ও আসল দাতার কাছ থেকে এ জমি ক্রয় করে নেওয়া হয়েছে। এখানে কোন প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়নি।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বলেন, সাবেক এক চেয়ারম্যানের প্যাডে এ ওয়ারিশ সনদ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। স্মারক ঘেঁটে সনদের তথ্য যাচাই করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া মেলেনি।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সরকারী সম্পত্তি প্রতারণা করে দখলের অভিযোগের কপি এখানো তিনি হাতে পাইনি। কপি হাতে পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ন ম র এক স ন দর র কর ড উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে শহীদ আব্দুল কাইয়ূমের শাহাদাত বার্ষিকী পালন
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ূমের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ও ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হারুনসহ হলের হাউজ টিউটর, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যা: তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি
জবি প্রশাসনের ‘দায়সারা’ জবাবের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
এ সময় শিক্ষার্থীরা শহীদ আব্দুল কাইয়ূমের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
দোয়া মাহফিলে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, “কাইয়ূম ভাই আমার পাশের রুমেই থাকতেন। তার সঙ্গে যখন দেখা হত, তখন তিনি সবাইকে আপনি করে সম্বোধন করতেন। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন এবং সবাইকে নামাজ পড়ার জন্য আহ্বান করতেন। তিনি বেশিরভাগ সময় নিজের বাসায় থাকতেন এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। আমরা চাই পরবর্তীতে যেই প্রশাসন আসুক, এই দিনটি যেন পালন করা হয়।”
কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ মো. হারুন বলেন, “যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তার (আব্দুল কাইয়ূম) ছবি দেখতে পাই, তখন মনে হয়েছিল ছেলেটি অসম্ভব ভালো ছেলে। পরবর্তীতে বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠানে মাধ্যমে তার সম্পর্কে জানতে পারি, আমার ধারণা ঠিক ছিল। আজকে যখন তার বাবার সঙ্গে দেখা হয়, তখন একজন পিতা হিসেবে তাকে স্বান্তনা দিতে পারিনি। জানি না তিনি কীভাবে সহ্য করছে একজন সন্তান হারানোর কষ্ট।”
তিনি বলেন, “আমরাও কারো না কারো সন্তান। তাই কোনো কিছু করার আগে আমাদের চিন্তা করা উচিত আমাদের পিতা-মাতার কথা। আমরা এখানে একটি পরিবার হিসেবে আছি। তাই সবাই সবার বিপদে এগিয়ে যাব ও সহোযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আব্দুল কাইয়ূম কুবির কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী