পূর্বাচলে অবৈধ বালুর গদিতে উচ্ছেদ অভিযান
Published: 19th, August 2025 GMT
রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরের অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা বালুর গদি গুঁড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার (১৮আগস্ট) বেলা ১১ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত পূর্বাচল নতুন শহরের ৪ নম্বর সেক্টরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেড ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
এ সময় ৪ নম্বর সেক্টরে রাজউকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গড়ে তোলা বালুর গদির অফিস ভেঙ্গে সঞ্চালন পাইপ বিকল ও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৯ টি বালুর গদিতে থাকা বালু খোলা নিলামে দেড় লাখ টাকা বিক্রি করা হয়।
এসময় একই সেক্টরে অবৈধভাবে বসানো শিমুলিয়া গরুর হাট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেড।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ একটি মহল পূর্বাচল ৪, ১৩ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে রাজউকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ বালুগদি তৈরী করে ব্যবসা করে আসছে।
এতে এসব সেক্টরের সড়ক গুলোর বিভিন্নস্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। এমনকি এসব বালুর গদির পানি ও বালু পানি নিস্কাশনের ড্রেন ভরাট করে ফেলায় স্কুলে পানি ডুকে লেখাপড়ার বিঘ্ন সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন,এ ছাড়া রাজউক থেকে এসব বালুর গদি অপসারনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের প্রতি তাগিদ ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরের আমরা অভিযান পরিচালনা করি।
এ সময় কয়েকটি বালুর গদির অফিস গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ৯ টি গদির বালু নিলামের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ সপ্তাহের মধ্যে এসব বালু সেখান থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) তাছবীর হোসেন, রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলামসহ রাউজউকের কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস