রাজনীতি বনাম রুপালি পর্দা: সফলতা-ব্যর্থতার দীর্ঘপথ, বিজয় কী পারবে
Published: 27th, August 2025 GMT
তামিল সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর; যাকে সবাই থালাপাতি বিজয় নামেই চেনেন। রুপালি পর্দার ক্রেজ নিয়েই রাজনীতির মাঠে যাত্রা শুরু করেছেন তিনি। ফলে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন এই নায়ক।
ফিল্মি কায়দায় নির্মিত রাজনৈতিক মঞ্চ, সেই মঞ্চে নায়কোচিত এন্ট্রি; বিজয়কে ঘিরে ভক্ত-অনুরাগীদের মাতামাতি চোখে পড়ার মতো। মানুষের উন্মাদনার ঢেউয়ে ভাসছেন বিজয়। রুপালি পর্দার তারকা খ্যাতি আর রাজনৈতিক ময়দানের দর্শকপ্রিয়তা বা ভোট ব্যাংক এক নয়—এ কথা হরহামেশাই শোনা যায়। এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা করলে, রাজনৈতিক মাঠে বিজয়ের জয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কেবল তাই নয়, তার পূর্বসূরি মেগাস্টার চিরঞ্জীবীর রাজনৈতিক ইতিহাসও উদাহরণ হিসেবে সামনে চলে আসে। প্রশ্ন উঠে—চিরঞ্জীবীর মতো মেগাস্টারও যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে বিজয় কতটা সাফল্য পাবেন?
২০০৮ সালে রুপালি পর্দার নায়ক চিরঞ্জীবী ‘প্রজা রাজ্যম পার্টি’ নামে রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেন। তার শুরুটা বিজয়ের চেয়েও কয়েক গুণ বেশি উন্মাদনার মাধ্যমে সূচনা হয়েছিল। চিরঞ্জীবীর শুরুটা হয়েছিল এক বিন্দু জল থেকে, যা অল্প সময়ের মধ্যে রূপ নিয়েছিল প্রবল বন্যায়। রাজনৈতিক দল লঞ্চিং অনুষ্ঠানের দিন মানুষের স্রোত বয়ে গিয়েছিল।
অনুষ্ঠানস্থলের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলো কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যানজটে রূপ নিয়েছিল। প্রায় ১০ লাখ মানুষ একে অপরের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে জায়গা করে নিচ্ছিলেন, অসংখ্য চোখ তাকিয়ে ছিল প্রস্তুত মঞ্চের দিকে, যেখানে তাদের প্রিয় নায়ক যেকোনো মুহূর্তে হাজির হবেন। আর চিরঞ্জীবী যখন এলেন, তখন একপ্রকার হুড়োহুড়ি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। নায়ক মঞ্চে উঠে ‘দুধ আর মধু’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
চিরঞ্জীবীকে ভালোবেসে সবাই ‘চিরু’ নামে ডাকেন। তার ‘প্রজা রাজ্যম পার্টি’ খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। পার্টি উদ্বোধনের সময় যে দশ লাখ মানুষ হাজির হয়েছিলেন, তারা ভোটের সময় চিরুর পতাকা বহন করেননি। তার অনুরাগীরা, যারা তার নির্দেশে রক্ত দিতেও দ্বিধা করতেন না, ভোটের সময়ে তারা তাদের নায়ককে নিরাশ করেন। কয়েক বছরের মধ্যেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ‘প্রজা রাজ্যম পার্টি’; পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসে মিশে যায়।
গত বছর চিরঞ্জীবীর ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটান বিজয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিনেমা ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন বিজয়। এ ঘোষণার ৮ মাস পর প্রথমবার নিজের দলের জনসভায় ভাষণ দেন। গত বছরের ২৭ অক্টোবর, তামিলনাড়ু রাজ্যের বিক্রবান্দি শহরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ জনসভায় ‘তামিলাগা ভেটরি কাজাগম’ (টিভিকে) নামে রাজনৈতিক দলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন এই নায়ক।
এ জনসভায় তারকা বিজয়কে দেখতে আসা মানুষেরা উচ্ছ্বাস নিয়ে তাকে শুনেন। কীভাবে অন্যরা তার রাজ্যকে লুটে নিচ্ছে, কীভাবে তিনি সমতাভিত্তিক সমাজ গড়বেন, আর কেন গরিব, প্রান্তিক ও বঞ্চিতদের তাকে ভোট দেওয়া উচিত। তবে চিরঞ্জীবীর তুলনায় এই ভিড় ছিল অনেক কম। চিরঞ্জীবীর জনসভায় ১০ লাখ মানুষ উপস্থিত ছিলেন আর বিজয়ের জনসভায় উপস্থিত ছিলেন কয়েক লাখ মানুষ।
গত ২১ আগস্ট, তামিল নাড়ুর মাদুরাইতে অনুষ্ঠিত হয় বিজয়ের রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় জনসভা। সেদিন সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সব উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। কলেজ শিক্ষার্থী, গৃহিণী, যুবক-যুবতীসহ নানা পেশার নানা বয়সি মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয় সমাবেশস্থল। কেউ কেউ ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েও জনসভায় যোগ দেন। তবে এ জনসভায় মানুষের যে উপস্থিতি ছিল, সেটাও চিরঞ্জীবীর জনসভার মানুষের চেয়েও কম।
থালাপাতি বিজয়ের বড় সংখ্যক ভক্ত-অনুরাগী রয়েছেন। শুধু তামিল নাড়ুতেই ৮৫ হাজার ফ্যান ক্লাব রয়েছে। অতীতে ভক্ত-অনুসারীদের রাজনীতির মাঠে কাজে লাগানোর ইতিহাসও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছে। ষাটের দশকে রাজনীতিতে পা রাখেন অভিনেতা এম.
মাদুরাই পূর্ব আসন থেকে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিজয়। নির্বাচনে কোনো জোটে যাবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে বিজয়ের ভক্ত-অনুরাগীরা অভিনেতা এম. জি. রামাচন্দ্রনের অনুসারীদের মতো হবেন, না কি ভোটের সময়ে চিরঞ্জীবীর ভক্ত-অনুরাগীদের মতো আচরণ করবেন, তার জবাব সময়ই দেবে।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক ম র র জন ত উপস থ ত জনসভ য় র জনসভ অন ষ ঠ ন ব জয় ব জয় র হয় ছ ল র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার’ ও ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ইন ফিজিক্স’ প্রদানের জন্য দেশের পদার্থবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কোন সালের জন্য পুরস্কার —ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের গবেষণা কাজের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
পুরস্কার মল্যমান কত —১. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য পুরস্কার পাওয়া গবেষককে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
২. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষককে নগদ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ —আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে—আবেদনকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কপি আবেদনপত্র, তিন প্রস্থ জীবনবৃত্তান্ত, তিন প্রস্থ গবেষণাকর্ম এবং তিন কপি ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকাশিত গবেষণাকর্ম পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে।
২. যৌথ গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গবেষণা পুরস্কারের অর্থ সমান হারে বণ্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগী গবেষক বা গবেষকের অনুমতি নিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. আবেদনকারী যে বছরের জন্য আবেদন করবেন পাবলিকেশন ওই বছরের হতে হবে।
৪. একই পাবলিকেশন দিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না।
৫. কোন কারণে একজন প্রার্থী পুরস্কারের জন্য আবেদন করলে প্রার্থিতার স্বল্পতা বিবেচনা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে।
৬. পরীক্ষক তাঁর গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ না করলে তাঁকে পুরস্কারের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।
৭. পদার্থবিজ্ঞানে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার একবার প্রাপ্ত গবেষকও পরবর্তী সময়ে আবেদন করতে পারবেন।
৮. নতুন গবেষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৯. যদি মানসম্মত গবেষণা কাজ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পূর্বের পুরস্কার পাওয়া গবেষকের নতুন গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য পরীক্ষকের সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।
# আবেদন জমা দেওয়ার ঠিকানা: প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।