কম্পিউটার বা ল্যাপটপে অতিরিক্ত তথ্য সংরক্ষণের জন্য এক্সটার্নাল স্টোরেজ ডিভাইসের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বাজারে সবচেয়ে প্রচলিত দুটি সমাধান হলো ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ এবং এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ। নাম আলাদা হলেও দুটোই ইউএসবি ইন্টারফেসের মাধ্যমে ডিভাইসে যুক্ত হয়ে তথ্য সংরক্ষণের কাজ করে। তবে ব্যবহার, সুবিধা-অসুবিধা ও নির্ভরযোগ্যতার দিক থেকে এদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।

ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ

ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ পেন ড্রাইভ বা থাম্ব ড্রাইভ নামেও পরিচিত। ছোট আকারের ও সহজে বহনযোগ্য এই ডিভাইস ফ্ল্যাশ মেমোরি মডিউল ব্যবহার করে। যার ভেতরে কোনো যান্ত্রিক অংশ নেই। ফলে পড়ে গেলে বা ধাক্কা লাগলেও এগুলোর কোনো ক্ষতি হয় না। দ্রুত তথ্য আদান–প্রদানের জন্য এটি সহজ সমাধান হলেও দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরযোগ্যতায় কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। প্রতিবার নতুন তথ্য লেখার সময় মেমোরি সেল ক্ষয় হতে থাকে। কম দামের ড্রাইভে উন্নত ওয়্যার-লেভেলিং প্রযুক্তি না থাকায় এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। আরেকটি সীমাবদ্ধতা হলো, সচরাচর ২ টেরাবাইটের বেশি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি।

এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ

আকারে বড় এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ সাধারণত আলাদা কেব্‌ল দিয়ে যুক্ত করতে হয়। এতে চুম্বকীয় ডিস্ক বা প্ল্যাটার ব্যবহার করে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। যেহেতু ভেতরে যান্ত্রিক অংশ থাকে, তাই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে দাম ও স্টোরেজ সুবিধার হিসাব করলে হার্ড ড্রাইভ অনেক এগিয়ে। পরিচিত ব্র্যান্ডের ড্রাইভে ২৮ টেরাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ পাওয়া যায়, যা ফ্ল্যাশ ড্রাইভের নাগালের বাইরে। তবে বড় স্টোরেজের ডিভাইস কেবল ইউএসবি দিয়ে চালানো যায় না। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রয়োজন হয়। ফলে বহনযোগ্যতা কিছুটা সীমিত হয়।

গতি ও নির্ভরযোগ্যতা

তথ্য স্থানান্তরের গতি নির্ভর করে ইউএসবির সংস্করণ ও ডিভাইসের মানের ওপর। একই প্রজন্মের ইউএসবি পোর্টে ফ্ল্যাশ ড্রাইভ সাধারণত হার্ড ড্রাইভের চেয়ে দ্রুত হয়। কারণ, হার্ড ড্রাইভে ডিস্ক ঘোরানো ও রিড/রাইট হেড সরাতে বাড়তি সময় লাগে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে নির্ভরযোগ্যতার দিক থেকে হার্ড ড্রাইভই এগিয়ে। এগুলো বারবার তথ্য রিড/রাইট ও দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণের জন্য তৈরি। অন্যদিকে ফ্ল্যাশ ড্রাইভের রাইট ক্ষমতা সীমিত। প্রতিবার নতুন তথ্য যুক্ত করার সময় মেমোরি সেল ক্ষয় হতে থাকে। বিশেষ করে কম দামের ড্রাইভে যেখানে উন্নত ওয়্যার–লেভেলিং প্রযুক্তি থাকে না, সেগুলোতে এ সমস্যা আরও বেশি।

কোনটি উপযুক্ত

যদি আকারে ছোট, সহজে বহনযোগ্য ও দ্রুত তথ্য স্থানান্তরের দরকার হয়, তবে ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভই উপযোগী। তবে নির্ভরযোগ্য বড় স্টোরেজের প্রয়োজন হলে এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ ভালো। দামের দিক দিয়েও হার্ড ড্রাইভ তুলনামূলকভাবে অনেক সাশ্রয়ী।

তৃতীয় সমাধান: এক্সটার্নাল এসএসডি

ফ্ল্যাশ মেমোরি ব্যবহারের কারণে এক্সটার্নাল এসএসডিও দ্রুতগতি ও টেকসই সমাধান। এগুলো দীর্ঘ মেয়াদে নির্ভরযোগ্য এবং ৮ টেরাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ পাওয়া যায়। তবে দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। মূলত পেশাদার বা বেশি তথ্য সংরক্ষণের কাজে এগুলো ব্যবহার করা হয়।

সূত্র: বিজিআর ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ভরয গ য ব যবহ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ