পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, পশু-পাখিদের অভয়ারণ্য তৈরি ও সবুজ বাংলাদেশ বিনির্মাণে শরীয়তপুরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় জেলাব্যাপী পর্যায়ক্রমে ৩ লাখ গাছের চারা রোপণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা পরিষদের উদ্যোগে সদর উপজেলার দেওভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন—সহকারী পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রাফেউল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা কামাল, জেলা বন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রাসেল নোমান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিনসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ।

জেলা প্রশাসক তাহমিনা বেগম বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও সবুজায়নের জন্য এ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। শরীয়তপুর জেলায় আগামী তিন বছরের মধ্যে আমরা ৩ লাখ গাছ রোপণ করব। এর মধ্যে চলতি বছরেই ১ লাখ চারা রোপণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেছেন, গাছ আমরা যেভাবে গাছ কাটি, সেভাবেই চারা রোপণ করা প্রয়োজন। এই দায়িত্ববোধ থেকেই আমাদের এ উদ্যোগ। সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনও এ কার্যক্রমে অংশ নেবে বলে আমরা আশাবাদী। জেলা প্রশাসন সব সময় এই কাজে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।

ঢাকা/আকাশ/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।

ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।

১৫ দফা প্রস্তাবনা

সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।

১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ