শরীয়তপুরের জাজিরায় রমজান মোল্লা (৩৮) নামে এক ব্যক্তির দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে তার হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের রুপবাবুরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তের নাম সুমন শিকদার। তিনি মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে রমজান মোল্লা তার ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা নিয়ে জাজিরা থেকে নাওডোবা যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে রুপবাবুরহাট এলাকায় অটোরিকশার গতিরোধ করেন সুমন শিকদারসহ ৪-৫ জন।

পরে রমজান মোল্লাকে ধরে সুমন শিকদারের বাড়ির পেছনে বাঁশবাগানে নিয়ে যান তারা। সেখানে রমজানকে মারধরের পর দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয় এবং হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।

স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেলে সুমন শিকদার ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শাহজাহান সম্রাট নামে একজনকে আটক করা হয়। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। এদিকে, ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুমন শিকদারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবুল হোসেন শিকদার বলেন, ‘‘বাঁশঝাড়ের ভেতরে একজনকে আটকে রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, সুমন শিকদারসহ আরো কয়েকজন এক লোককে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন। এ সময় আমাদের দেখে সুমনসহ সবাই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। বাকিরা পালিয়ে গেলেও শাহজাহান সম্রাট নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছি।’’

ভুক্তভোগী রমজান মোল্লা বলেন, ‘‘জাজিরা থেকে নাওডোবা যাচ্ছিলাম। পথে সুমন শিকদার, সোহেল চাপরাসী, সোহেল চৌকিদার, শাহজাহান সম্রাট, বাচ্চু সুমনসহ আরো কয়েকজন আমার অটোরিকশা থামানোর সংকেত দেয়। গাড়ি থামালে আমাকে বাঁশবাগানে নিয়ে যায় তারা। সেখানে মারধরের পর আমার দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয় ও হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়।’’

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহমেদ পারভেজ সেলিম বলেন, ‘‘এক ব্যক্তির দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে ও হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশের সহায়তায় আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

এর আগে, বরিশালের মুলাদীতে পারিবারিক বিরোধের জেরে দুই ভাই লোকজন নিয়ে আরেক ভাইয়ের দুই চোখ তুলে নেয় বলে অভিযোগ উঠে। গত ২৭ আগস্ট এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ঢাকা/আকাশ/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ ত প য় র রগ ক ট র দ ই চ খ উপড় রমজ ন ম ল ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ