পদ্মার ভাঙনে বিলীন বিজিবির একটি বিওপি
Published: 11th, September 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙনে সীমান্তে স্থাপিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি বিওপি বিলীন হয়ে গেছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার সর্বশেষ সীমান্তঘেঁষা উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ নদীতে বিলীন চলে যায়।
কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ‘‘ভাঙনের আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। কয়েক দিন আগে সেখান থেকে বিজিবির সব সদস্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাশের চর চিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। চর চিলমারী বিওপি থেকেই উদয়নগর এলাকায় টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হচ্ছে।’’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেন, তিন মাস আগের পর্যবেক্ষণে পদ্মা-গড়াই নদ–নদীর অন্তত ১৭টি স্থানে ভাঙনের ঝুঁকি আছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এ বছর পানি বাড়ার সঙ্গে সেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। বর্তমানে পানি কমছে, আর এতে ভাঙন আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনকবলিত এলাকার মধ্যে দৌলতপুরের উদয়নগর বিওপি ছিল অন্যতম। সেখানে জিওব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও ভাঙনের তীব্রতায় তা কাজে আসেনি।
বিজিবি সূত্র জানায়, সীমান্তঘেঁষা উদয়নগর বিওপিতে ২২ থেকে ২৫ জন সদস্য থাকতেন। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বিওপির বেশির ভাগ অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। অবশিষ্ট অংশও কয়েক দিনের মধ্যে ভেঙে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাউবোর কুষ্টিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ‘‘সকালে উদয়নগর বিওপি এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি দেখা হয়েছে। পানি কমায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। বিওপিটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। দৌলতপুর ও ভেড়ামারার আরো কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’’
ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’