আসামে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি, এক বছরের জন্য বহিষ্কার ৫
Published: 17th, September 2025 GMT
আসামের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি) শিলচরে মারামারির ঘটনায় বাংলাদেশের পাঁচ শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টার, তথা এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থী তৃতীয় বর্ষের।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা ৯ সেপ্টেম্বর তাঁদের র্যাগিংয়ের উদ্দেশ্যে ডেকে পাঠায়। তাঁরা সেখানে না গেলে দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি থেকে মারপিট শুরু হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। জানা গেছে, দুই পক্ষই বাংলাদেশের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, মূলত মারপিটের অভিযোগেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরে তাঁদের কয়েকজনের কাছে মাদকও পাওয়া গেছে। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে এনআইটিতে পড়াশোনা করছিলেন।
বহিষ্কৃতদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু ভারতের কোনো সরকারি সূত্রে এখনো এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানানো হয়নি।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলেও জানা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আসামে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ৫ বাংলাদেশি ছাত্রকে বহিষ্কার
ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’ (এনআইটি) ক্যাম্পাসের ভিতরে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই পাঁচজন শিক্ষার্থীর সকলেই ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস’ (আইসিসিআর) স্কলারশিপের অধীনে আসামের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত ছিল।
উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রিমিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আসামের এনআইটি’র ডিরেক্টর অধ্যাপক দিলীপ কুমার বৈদ্য রবিবার জানিয়েছেন, “ওই পাঁচ শিক্ষার্থী যে ক্যাম্পাসের ভিতর সহিংসতার ঘটনায় সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল, আমাদের কাছে তার পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে। এই ঘটনায় তাদের দুইটি সেমিস্টারের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। যেহেতু এই সময়কালে তাদের ক্লাসে যোগদানের অনুমতি নেই, তাই শিগগির পাঁচজনকেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।”
আরো পড়ুন:
আমি খুব কেঁদেছিলাম: মোহিনী
পাকিস্তানকে সহজেই হারিয়ে ‘সুপার ফোরে’ এক পা ভারতের
এনআইটি’র ডিরেক্টর অধ্যাপক দিলীপ কুমার বৈদ্য আরো জানান, “আমরা বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করেছি এবং অবশেষে পাঁচজন প্রধান অভিযুক্তকে একটি শিক্ষাবর্ষের জন্য বরখাস্ত করেছি। শাস্তির অংশ হিসেবে গত ১২ সেপ্টেম্বর তাদের হোস্টেল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।”
এনআইটি সূত্রে খবর, গত ৯ সেপ্টেম্বর এই হামলার ঘটনা ঘটে। যেখানে বাংলাদেশ থেকে এনআইটি-তে অধ্যায়ন করতে আসা তৃতীয় বর্ষের একদল ছাত্র তাদেরই দেশের ফাইনাল বর্ষের আরেকদল শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত, ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হোস্টেলের ২০৬ নম্বর রুমে বাংলাদেশের পাঁচজন শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের বাংলাদেশি সহপাঠীদের উপর আক্রমণ করে। আক্রমণকারী ছাত্ররা লোহার রড, ছুরি এবং স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে চূড়ান্ত বর্ষের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উপর প্রায় ৩০ মিনিট ধরে আক্রমণ চালায়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে অন্তত দুজন ছাত্র গুরুতর আহত হয়। আহত ছাত্রদের শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (এসএমসিএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। সহপাঠীদের মতে, তাদের মধ্যে দুজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে, রক্তক্ষরণ হয়, ফলে তাদের মাথায় সেলাই করতে হয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র বলেন, অভিযুক্তরা প্রথমে তাদের নিজস্ব ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। যখন সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাতে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে, আক্রমণকারীরা তাদের আলোচনার জন্য একটি ক্লাস রুমে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর হঠাৎ আলো নিভিয়ে দেয় এবং অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর আক্রমণ শুরু করে।
এই হামলার ঘটনার পরেই তদন্তে নামে এনআইটি কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত এক ছাত্রের ঘর থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। আরেক ছাত্রের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় ছুরি এবং লোহার রড। যদিও এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনো এফআইআর দায়ের করা হয়নি।
এনআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তারা তাদের মতো করে তদন্ত করেছে। গুয়াহাটি জোনের একজন ঊর্ধ্বতন আইসিসিআর কর্মকর্তাও শনিবার ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন।
‘স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার’ এর ডিন এস এস ধর বলেন, “প্রাথমিকভাবে, ক্যাম্পাসের ভেতরে সহিংসতার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী কমিটি হামলার অভিযোগ এবং মাদকদ্রব্য পাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছে।”
‘স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার’ এর ডিন আরো জানান, “আমরা আমাদের তদন্ত এবং গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট। তাই, আমরা পুলিশকে অবহিত করিনি। তাছাড়া ক্যাম্পাস পরিদর্শনকারী গুয়াহাটির আইসিসিআর কর্মকর্তাও আমাদের তদন্ত এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট।”
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ