মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাউদার্ন কমান্ডের আওতাধীন এলাকায় চলাচল করা একটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। তাঁর দাবি, জাহাজটি মাদক বহন করছিল। গতকাল শুক্রবার এমন দাবি করেন তিনি।

দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিপুলসংখ্যক মার্কিন সেনা মোতায়েনের মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটল। মাদক বহন করা জাহাজ সন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় হামলার ঘটনা এটি। ট্রাম্প প্রশাসন ওই এলাকায় ১০টি যুদ্ধবিমান পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। গত শনিবার পুয়ের্তো রিকোতে পাঁচটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান অবতরণ করতে দেখা গেছে।

দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিপুলসংখ্যক মার্কিন সেনা মোতায়েনের মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটল। মাদক বহনকারী জাহাজ সন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় হামলার ঘটনা এটি। ট্রাম্প প্রশাসন ওই এলাকায় ১০টি যুদ্ধবিমান পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। গত শনিবার পুয়ের্তো রিকোতে পাঁচটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান অবতরণ করতে দেখা গেছে।

গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, তাঁর নির্দেশে পেন্টাগন ওই হামলা চালিয়েছে। এতে জাহাজে থাকা তিন মাদকসন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।

ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে জাহাজটি অবৈধ মাদক পাচার করছিল এবং এটি মাদক পাচারের জন্য পরিচিত একটি পথ ধরে চলছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল মার্কিন নাগরিকদের বিষপ্রয়োগ করা।’

ইউএস সাউদার্ন কমান্ড (সাউথকম) দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের মোট ৩১টি দেশকে নিরাপত্তা সহযোগিতা দিয়ে থাকে।

ট্রাম্প তাঁর দাবির বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেননি। তবে তিনি উড়োজাহাজ থেকে ধারণ করা এক মিনিটের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে পাশাপাশি দুটি ভিডিও রাখা হয়েছে। দুটিই জাহাজের ভিডিও। একটি ভিডিও রঙিন ও আরেকটি সাদা-কালো।

ভিডিওর শুরুতে জাহাজটিকে চলতে দেখা যায়। ভিডিওর মাঝামাঝি এসে দেখা যায়, জাহাজটিতে অন্তত একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে এবং সঙ্গে সঙ্গে সেটি বিস্ফোরিত হয়। ভিডিওর শেষ অংশে দেখা যায়, ভাসমান জাহাজটিতে আগুন জ্বলছে।

জাহাজটি কোথা থেকে ছেড়ে এসেছিল কিংবা হামলাটি ঠিক কোথায় চালানো হয়েছে, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ছাড়াও বর্তমানে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত সাতটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েন রয়েছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে আরেকটি হামলা চালিয়েছিল। ভেনেজুয়েলার একটি কথিত মাদক চক্রের যুক্তরাষ্ট্রগামী জাহাজকে লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে আরেকটি হামলা চালিয়েছিল। ভেনেজুয়েলার একটি কথিত মাদক চক্রের যুক্তরাষ্ট্রগামী জাহাজকে লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা সরকারের কাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের যৌক্তিকতা জানতে চাইলেও ট্রাম্প প্রশাসন প্রথম দুটি হামলা সম্পর্কে খুবই সীমিত তথ্য দিয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, ২ সেপ্টেম্বর প্রথম যে জাহাজটিতে হামলা চালানো হয়, সেটিতে ভেনেজুয়েলার অপরাধী চক্র ত্রেন দে আরাগুয়ার সদস্যরা ছিলেন।

ভেনেজুয়েলা সরকার বলছে, দেশকে মাদকের হাত থেকে রক্ষায় তারা হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। ত্রেন দে আরাগুয়ার জাহাজে হওয়া ওই হামলার ঘটনায় কেউ মারা যাননি।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো বারবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে তারা তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে। ওয়াশিংটন গত মাসে মাদুরোর গ্রেপ্তার–সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার জন্য পুরস্কার দ্বিগুণ করে পাঁচ কোটি ডলার নির্ধারণ করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক পাচার ও অপরাধী চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে মাদুরো সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

চলতি মাসের শুরুতে পুয়ের্তো রিকোর কাছে এক যুদ্ধজাহাজে থাকা সেনা ও নাবিকদের উদ্দেশ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, তাঁরা (ওই সেনারা) ক্যারিবীয় এলাকায় প্রশিক্ষণের জন্য মোতায়েন হননি; বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে তাঁদের সেখানে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুনহুতিদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র: জাহাজে হামলা বন্ধের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে১৭ মার্চ ২০২৫

সন্দেহজনক জাহাজ জব্দ ও ক্রুদের আটক না করে হামলা চালিয়ে সেটি ধ্বংস করে দেওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের আওতায় যুদ্ধ ঘোষণা করার ক্ষমতা কংগ্রেসের। তবে প্রেসিডেন্টরা সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচিত হওয়া প্রেসিডেন্টদের কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই বিদেশে সামরিক অভিযান চালাতে দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

আরও পড়ুনঝুঁকিপূর্ণ ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান–জাহাজ নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র২০ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র এল ক য় জ হ জট

এছাড়াও পড়ুন:

‘নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অসুবিধা দেখা দেবে না বলে আমরা আশা করি।” 

তিনি আরো বলেন, “নির্বাচন হবে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ও উৎসবমুখর। এ জন্য পুলিশ ও প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” 

নিরাপত্তা ইস্যু—কার্গো অগ্নিকাণ্ড, অস্ত্র চুরির ঘটনা থেকে শুরু করে অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী পক্ষ এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও উপদেষ্টা জানান, তদন্ত চলছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অতীতের নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কিছু বিতর্কিত ওসিদের পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে স্বীকার করলেও জানান, সীমাবদ্ধতার কারণে সবাইকে একযোগে বদলি করা সম্ভব হচ্ছে না। 

“যারা পরপর তিনটি নির্বাচনে দায়িত্বে ছিলেন, তাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে,” বলেন তিনি।

আলোচনায় উস্কানিমূলক বক্তব্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক প্রচারণা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কেও প্রশ্ন ওঠে। 

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে এবং কেউ আইনের বাইরে গেলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ