রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন উপলক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগাঠনিক সম্পাদক মো. আমানউল্লাহ আমান।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাকে আড্ডা দিতে দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

‘রাকসু নির্বাচনে গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে সাইবার ইউনিট’

রাকসু নির্বাচন: একটি ভোটের জন্য ১৪ সেকেন্ড বরাদ্দ

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে বসে রয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান। তার সঙ্গে রাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ফার্সি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তাহের রহমানসহ শাখা ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে অবস্থান করতে দেখা যায়।

এদিকে, রাকসুর নির্বাচন উপলক্ষে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া কয়েকদিন ধরে হলগুলোতে যাতে কোনো বহিরাগত না থাকে, সেজন্য তল্লাশি কার্যক্রম চালায় নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

মো. মাহবুবর রহমান বলেন, “আশ্চর্য! সে কীভাবে ভেতরে ঢুকল, তা আমাদের জানা নেই। প্রতিটি গেটে চেকপোস্ট রয়েছে, আমরা কঠোর নিরাপত্তা দিচ্ছি। তারপরও কীভাবে সে প্রবেশ করল, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”

রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, “উনি ঢুকলেন কীভাবে? উনার তো আসার কথা না এখানে। আচ্ছা, বিষয়টা আমি দেখছি।”

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতা আমানউল্লাহ আমানকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলে তিনি সাড়া দেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

শিবির–সমর্থিত প্যানেলের সভার জন্য আনা নাশতা ফেরত পাঠাল নির্বাচন কমিশন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রোজেকশন মিটিংয়ে (পরিচিতি সভা) বিতরণের উদ্দেশ্যে আনা পাঁচ বস্তা খাবার ফিরিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আজ সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল ও খালেদা জিয়া হলে পরিচিতি সভায় বিতরণের জন্য এসব খাবার আনা হয়েছিল।

এর আগে হলের সভায় খাবার বিতরণ করা আচরণবিধি লঙ্ঘন দাবি করে নির্বাচন কমিশনে গত মঙ্গলবার ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল।

প্রত্যক্ষদর্শী, নির্বাচন কমিশন ও ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ফুটেজ সূত্রে জানা যায়, আজ সন্ধ্যায় ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল খালেদা জিয়া ও মন্নুজান হলে সভার আয়োজন করে। তারা খালেদা জিয়া হলের শিক্ষার্থীদের বসার জন্য বাইরে থেকে চেয়ার ভাড়া করে। তবে হল প্রশাসন তাদের হলের ভেতরের চেয়ার-টেবিল দিয়েই কার্যক্রম চালাতে বলে। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার (স্যান্ডউইচ, চকলেট, সস) আনে প্যানেলটি। এ সময় হল ফটকে উপস্থিত হয়ে তাদের খাবার প্রবেশে বাধা দেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোস্তফা কামাল আকন্দসহ অন্যরা। পরে সেখান থেকে ৫ বস্তায় আনা প্রায় ৮০০ প্যাকেট খাবার ফেরত পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন এবং হল প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মৌখিক অভিযোগ জানান প্যানেলটির প্রার্থী ও ছাত্রশিবিরের নেতারা। আলোচনা শেষে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল এখন পর্যন্ত নির্বাচনের লিখিত আচরণবিধির একটিও ভঙ্গ করেনি। ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল ক্লাস রুমে গিয়ে প্রচারণাসহ একাধিক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা নির্বাচন কমিশনে হতাশা ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছি, নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্টরা যদি এভাবে অপেশাদারমূলক আচরণ করেন এবং একটি দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করতে থাকেন, তাহলে কোনোভাবেই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

পরিচিতি সভায় অসযোগিতার অভিযোগ তুলে মুজাহিদ ফয়সাল আরও বরেন, ‘আজকে একটি হলের পরিচিতি সভায় প্রথমেই হলের অভ্যন্তরে আমাদের চেয়ার প্রবেশ করতে দেয়নি হল প্রশাসন। পরে আমাদের দেশের সংস্কৃতির অংশস্বরূপ দাওয়াত করা মেহমানদের জন্য খাবার নিয়ে গেলে সেটিও বিতরণ করতে দেওয়া হয়নি। যদিও খাবারের বিষয়ে আচরণবিধিতেও স্পষ্ট কিছু বলা নেই। অন্যান্য প্যানেল খাবার বিতরণ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

ছাত্রশিবিরের সঙ্গে আলোচনা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সব হল পরিদর্শনে বেরিয়েছি। খালেদা জিয়া হল থেকে বের হওয়ার সময় গেটে দেখি, কিছু খাবারের প্যাকেট নিয়ে একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, এখানে সম্মিলিত ছাত্র জোটের একটি পরিচিতি সভা হচ্ছে, সেই উপলক্ষে এই খাবার আনা হয়েছে। তখন আমি তাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিই, এভাবে খাবার বিতরণ করা যাবে না। এরপর খাবারগুলো যেখান থেকে আনা হয়েছে, সেখানে ফেরত নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিই। আমাদের নির্দেশের পর খাবারগুলো ফেরত পাঠানো হয়।’

কেন খাবার বিতরণে বাধা দেওয়া হলো, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হয়তো পরিচিতি সভা করে এভাবে খাবার দেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। কিন্তু জোটবদ্ধ প্রার্থীরা সেটা পারছে। এতে প্রার্থীদের মধ্যে একটি বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই, সবার জন্য সমান সুযোগ থাকুক এবং নির্বাচন আচরণবিধির মধ্যে থেকে সবাই প্রচারণা চালাক।’

নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে তাঁরা নিয়মিত হলগুলো পরিদর্শন করছেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। কোনো প্রার্থী নিয়মবহির্ভূতভাবে উপহার দিচ্ছেন কি না বা কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের পর জরিমানা গুনলেন জাদরান
  • ‘রাকসু নির্বাচনে গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে সাইবার ইউনিট’
  • চাকসুর ভোট গ্রহণ শেষ, পক্ষপাতের অভিযোগ ছাত্রদলের
  • রাকসু নির্বাচন কাল, ভোট দেবেন যেভাবে
  • আচরণবিধি ভঙ্গ, ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা
  • রাকসু: ছাত্রশিবিরের পরিচিতি সভার খাবার ফেরত দিল নির্বাচন কমিশন
  • শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত প্রার্থী-সমর্থকেরা, সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আশা-নিরাশার দোলা
  • ছাত্রশিবিরের প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
  • শিবির–সমর্থিত প্যানেলের সভার জন্য আনা নাশতা ফেরত পাঠাল নির্বাচন কমিশন