সাতক্ষীরার মাধবকাটিতে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। গত সোমবার গভীর রাতে সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবকাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার গৃহবধূ খাদিজা খাতুন (১৯) উপজেলার নারায়ণজোল গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক মালীর মেয়ে। তাঁর স্বামী ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবকাটি গ্রামের আমিরুল ইসলাম।

গৃহবধূর স্বজন নারায়ণজোল গ্রামের মনিরুল ইসলামের ভাষ্য, তিন মাস আগে সদর উপজেলার মাধবকাটি গ্রামের আমিরুলের সঙ্গে নারায়ণজোল গ্রামের খাদিজার বিয়ে হয়। কিছুদিন পর সে শ্বশুরের কাছ থেকে যৌতুকের ২ লাখ টাকা আনার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেয়।

খাদিজা টাকা আনতে বাবার বাড়িতে যেতে রাজি না হওয়ায় তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে আমিরুল। এর জেরে সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে সে লাঠি দিয়ে স্ত্রী খাদিজার মাথায় আঘাত করে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করে বলে জানান মনিরুল।

ঘটনার পর আমিরুল উন্মাদের মতো আচরণ শুরু করে জানিয়ে মনিরুল বলেন, সকালে বাড়িতে এসে সে আসবাব ভাঙচুর শুরু করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় জনতা তাকে ঘরে আটকে রাখে। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা সিদ্দীক মালী বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহত গৃহবধূর গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর স্বামী আমিরুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মে মাসে বিজিবির অভিযানে ১৩৩ কোটি টাকার চোরাচালান জব্দ

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৩ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।

বিজিবি জানায়, জব্দ করা চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১ কেজি ৫১২ গ্রাম স্বর্ণ, ১০ হাজার ৫৪৪টি শাড়ি, ৫ হাজার ১৪০টি কাপড়, ৩ হাজার ৪৭২টি তৈরি পোশাক, ১৯ হাজার ৩১৪ মিটার থান কাপড়, ২ লাখ ৫২ হাজার ২৯টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৫ হাজার ৪৪৩টি ইমিটেশন সামগ্রী, ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৫১টি আতশবাজি, ১৭ হাজার ৫২৩ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ১৫১ কেজি চা পাতা, ৯২ হাজার ৪৮৭ কেজি সুপারি, ৫৩ হাজার ৪০ কেজি চিনি, ২০ হাজার ৪৪২ কেজি সার, ২৯ হাজার ৯৮৫ কেজি কয়লা, ১০০ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ৩৪১টি মোবাইল, ১৭ হাজার ৬৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৬ হাজার ৫৪০টি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১৫,১১২টি চশমা, ৬ হাজার ৫৪৩ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫ হাজার ৯৬০ কেজি ভোজ্য তেল, ১০১০ লিটার ডিজেল/অকটেন, ১ হাজার ৫২৬ কেজি পিঁয়াজ, ৮ হাজার ৮২৬ কেজি রসুন, ২০ হাজার ৬৪২ কেজি জিরা, ১১ হাজার ২৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৫০ হাজার ১৯১ কেজি ফুচকা, ৯ হাজার ১৭৯ কেজি মাছ, ৫০ হাজার ৬০৩ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ৯৩৪ কেজি কফি, ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৩ পিস চকোলেট, ১ হাজার ১৩১টি গরু/মহিষ, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১৩টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ১৫টি পিকআপ, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯২টি নৌকা, ২৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৭২টি মোটরসাইকেল এবং ২২টি বাইসাইকেল।

আরো পড়ুন:

ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ

ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ

উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ৫টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ৯মি.মি. পিস্তল, ২টি শট/পাইপ গান, ৫টি ম্যাগাজিন, ৪টি ককটেল, ২৪টি গুলি এবং ১টি হ্যান্ড গ্রেনেড।

এছাড়া গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৯৬৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১০ কেজি ৯৩৫ গ্রাম হেরোইন, ২৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১ কেজি ৪১০ গ্রাম কোকেন, ১০ হাজার ৫২১ বোতল ফেনসিডিল, ৮ হাজার ৯৮৩ বোতল বিদেশি মদ, ৭১.২৫ লিটার বাংলা মদ, ৮১৩ বোতল ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৯১৩ কেজি ৬৩০ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৬০২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩০ হাজার ১১৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫৪ ঞাজার ৩৪৭ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫ বোতল এলএসডি, ২০ হাজার ৪৯৩টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৭৩৭টি এমকেডিল/কফিডিল এবং ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৪ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট।

সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৫ জন চোরাকারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৭১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৯০ জন মিয়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ