টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয়ে উন্নয়ন কাজের নামফলক ভাঙতে গিয়ে পিটুনির শিকার হয়েছেন শ্রমিক দল ও আওয়ামী লীগের দুই নেতা। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামারপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল শনিবার উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শ্যামল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নামফলকে টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভর নাম থাকায় তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

পিটুনির শিকার দুই নেতা হলেন– উপজেলা শ্রমিক দলের প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক শরিফ সিকদার। 

স্থানীয়রা জানান, ভাওড়া ইউনিয়নের কামারপাড়া বাজারে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত ‘কামারপাড়া-শশধরপট্টি’ সড়কের ভিত্তিপ্রস্তরের নামফলক রয়েছে। এতে সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভর নাম আছে। বৃহস্পতিবার রাতে ফলকটি আবুল কালাম ও শরিফ সিকদার ভাঙতে শুরু করেন।

খবর পেয়ে ইউপি সদস্য শ্যামল তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দেন। এ সময় লিখিত নির্দেশনা চাইলে তারা দেখাতে পারেননি। একপর্যায়ে কামারপাড়া বাজারে থাকা স্থানীয় লোকজন তাদের পিটুনি দেন। পরে ক্ষমা চেয়ে তারা সেখান থেকে চলে যান।

শরিফ শিকদার বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ওই এলাকায় ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিলাম। ফলক ভাঙার খবর পেয়ে গেলে এলাকার মানুষ আমাকে ভুল বোঝে।’ এ বিষয়ে আবুল কালামের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কুব্বত আলী মৃধা বলেন, যদি এ ধরনের কাজ সংগঠনের কেউ করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, শরিফ পৌর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক হলেও এখন বিএনপির রাজনীতি করেন।

বিষয়টি শুনেছেন জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল সাজ-রিজনের বলেন, এ নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলব। তিনি যে পরামর্শ দেবেন, সেভাবে বিষয়টি দেখা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ