যুবদল নেতাকে পেটালেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা
Published: 19th, January 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে জাকির হোসেন নামে এক যুবদল নেতাকে প্রতিপক্ষ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার মিরিকপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত যুবদল নেতাকে নোয়াখালী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন সদর উপজেলা (পূর্ব) স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
জাকির (৩৫) বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি ও একই গ্রামের আলী আহম্মদ সওদাগরের ছেলে।
ভুক্তভোগী জাকির অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে তার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের আনোয়ার হোসেন, কবির হোসেন ও কৃষক দলের নেতা মিঠুর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। শনিবার রাতে মিরিকপুর বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে আনোয়ার হোসেন ও তার লোকজন হামলা চালান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আনোয়ার হোসেন, কবির হোসেন ও মিঠু। তাদের ভাষ্য, জাকিরের ওপর কে বা কারা হামলা করেছে বিষয়টি তাদের জানা নেই। এ ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের বিচার দাবি করেন তারা।
স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট মহসিন কবীর স্বপন বলেন, হামলার ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। হামলার ঘটনায় যদি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা পরিচয়ে কেউ জড়িত থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন।
এদিকে ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলা যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিম লিটন।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বদল দল ন ত য বদল ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।