কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেছেন, ১৭ বছর আওয়ামী লীগের নির্যাতন সহ্য করেছি। মাত্র ৬ মাস পার হলো না, সেই আওয়ামী লীগের প্রতি এত মায়া কেন? আবার যদি আওয়ামী লীগ ফিরে আসে তাহলে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাটক্ষেতে ঘুমাতে হবে। শান্তিতে রাত কাটাতে পারবে না কেউ।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী ইউনিয়ন কৃষক দল আয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ৫ তারিখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হয়েছে ঠিক। তবে নানাবিধ ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। চোখ কান খোলা রাখতে হবে। আবার যদি ভোটের জন্য রাজপথে ডাক আসে, তাহলে আবার রাজপথে নামতে হবে।

শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আগামীতে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি আছি। গত ১৭ বছরের দুঃশাসন আমরা ভুলি নাই। আমরা হাসিনার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলেছি। অনেক অন্যায় অত্যাচার সহ্য করেছি, তারপরও হাসিনার শাসন আমরা মেনে নেই নাই। আগামী দিনের যেকোনো লড়াইয়ে আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবোই। মানুষের শান্তির জন্য জাতীয়তাবাদী দল যেকোনো ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত। 

নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি মহিউদ্দিন রানার সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য গিয়াসউদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাড লিয়াকত আলী ভুলু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুজ্জামান অনু, পৌর বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, নগরকান্দা উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি বিলাল হোসেন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন ইয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, সালথা উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষক দলের আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ মামুন প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ব এনপ উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ