উপন্যাসটি পড়ে পাঠকেরা চমকে উঠবেন: স্বকৃত নোমান
Published: 25th, January 2025 GMT
কীর্তিমান কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান। উপন্যাস ও গল্প তার সাহিত্য-সাধনার ক্ষেত্র। পাশাপাশি লেখেন নানা বিষয়ে মুক্তগদ্য। এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল হুমায়ূন আহমেদ তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার, এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার, আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কারসহ ভূষিত হয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মাননায়। ২০২৫ বইমেলায় বাংলাদেশের অন্যপ্রকাশ এবং কলকাতার অভিযান পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হচ্ছে স্বকৃত নোমানের উপন্যাস ‘আচার্য ও তার অলীক পাণ্ডুলিপি।’ উপন্যাসটি নিয়ে ইতোমধ্যে দুই বাংলার পাঠকমহলে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। উপন্যাসটির নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্বরলিপি।
রাইজিংবিডি : ‘আচার্য ও তাঁর অলীক পাণ্ডুলিপি’ উপন্যাসের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।
স্বকৃত নোমান : মীর আসরার জামান নামক একজন প্রখ্যাত লেখক, তার স্ত্রী এবং লেখকের একান্ত সচিব এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। মীর আসরার জামানকে সবাই চেনে। তিনি ছিলেন সুরম্যনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তার উপাধি ছিল আচার্য। তার ছিল এক আশ্চর্য সম্মোহনী ক্ষমতা। নিজের প্রতি যে কাউকে আকৃষ্ট করতে পারতেন সহজেই। সামনে এলে পরম শ্রদ্ধায় মাথা নোয়াত তার ছাত্রছাত্রী ও ভক্ত-শিষ্যরা। তিনি যখন হাঁটতেন, পেছনে হাঁটত তারা। যখন কথা বলতেন, তন্ময় হয়ে শুনত তারা। যেন বর্তমানের কোনো মানুষ নন, কথা বলছেন প্রাচীন ভারতের কোনো ঋষি। এবং নারীরা তার ব্যক্তিত্বের প্রেমে পড়ে যেত সহজেই। অথচ স্ত্রী রাফিদা জাহানের কাছে তিনি ছিলেন এক নিকৃষ্ট চরিত্রের মানুষ। সোফিয়া যেমন উৎপীড়ন করতেন তলস্তয়কে, তেমনি মীর আসরার জামানকে করতেন রাফিদা। কিন্তু আচার্যের ছিল বিস্ময়কর সহ্যক্ষমতা। স্ত্রীর উৎপীড়ন তিনি হাসিমুখে এড়িয়ে যেতেন। একদিন, তিনি যখন রবীন্দ্রনাথের সুরে মগ্ন, কম্পিউটারে যখন বাজছিল, ‘এই তো তোমার প্রেম ওগো হৃদয়হরণ.
অনন্ত আতিক নামের এক তরুণ লেখক ছিল আচার্যের একান্ত সচিব। আচার্যের প্রয়াণের পর আতিকের বিরুদ্ধে রাফিদা জাহান তোলেন আচার্যের অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি এবং বিস্তর লেখা চুরির গুরুতর অভিযোগ। সেই অভিযোগ নির্বিচারে বিশ্বাস করে অনন্তের নিন্দা করতে থাকে সবাই। চুরি করার মতো অপ্রকাশিত কোনো পাণ্ডুলিপি কি রেখে গিয়েছিলেন আচার্য? নাকি এই অভিযোগ অনন্তের প্রতি রাফিদা জাহানের কোনো অসূয়ার বহিঃপ্রকাশ? এসব প্রশ্নের শৈল্পিক উত্তর পাওয়া যাবে উপন্যাসটিতে।
মূলত আচার্য মীর আসরার জামানের জীবন, জীবনবোধ ও শিল্পচেতনা, জীবনের আনন্দ ও বিষাদ, প্রেম ও অপ্রেম, শোক ও বিলাপ, দাম্পত্য ও দাম্পত্য-সংকটের প্রেক্ষাপটে রচিত উপন্যাস 'আচার্য ও তাঁর অলীক পাণ্ডুলিপি'। এই উপন্যাসের ভূমিকা লিখেছেন উপন্যাসটি রচনার আঠারো বছর আগে প্রয়াত মীর আসরার জামান।
রাইজিংবিডি : মৃত মানুষ কী করে উপন্যাসের ভূমিকা লিখলেন!
স্বকৃত নোমান : আচার্যের যে পান্ডুলিপির কোনো অস্তিত্বই নেই, তা যদি তার একান্ত সচিব অনন্ত আতিক চুরি করতে পারে, তাহলে প্রয়াত আচার্যও জীবিত লেখকের বইয়ের ভূমিকা লিখতে পারেন। বাস্তবে যা ঘটেনি, তা যদি মানুষ সত্য হিসেবে মনে করতে পারে, তাহলে মৃত মানুষ লিখতে পারে, এটাও সত্য। তাছাড়া উপন্যাসের সবই সম্ভব। উপন্যাস তো বাস্তবতার প্রতিবেদন নয়, কাল্পনিক সৃষ্টি। কল্পনায় কী না সম্ভব?
রাইজিংবিডি : উপন্যাসটির ভূমিকায় মীর আসরার জামান কী লিখেছেন?
স্বকৃত নোমান : অনেক কিছুই লিখেছেন। বিস্তারিত উপন্যাসে পাওয়া যাবে। এখানে তার চম্বুকাংশ বলা যেতে পারে। তিনি লিখেছেন, 'আচার্য ও তাঁর অলীক পাণ্ডুলিপি নামক এই উপন্যাস যে পাঠ করবে তার বুদ্ধির মুক্তি ঘটবে। অভূতপূর্ব আঙ্গিকে রচিত এই কথাশিল্প যে পাঠ করবে তার দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাবে, তার চিন্তাশক্তি প্রখর হবে এবং সে হীনম্মন্যতা, পরশ্রীকাতরতা ও আত্মসর্বস্বতা থেকে মুক্তি পাবে। সুললিত ভাষার এই কথাকাব্য যে শ্রবণ করবে তার শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি পাবে। সাত মাস একুশ দিবস-রজনী ধরে রচিত এই আখ্যান যে পাঠ করবে তার আত্মপরিচয়ের সংকট বিদূরিত হবে। এই সাহিত্যকর্ম যে পাঠ করবে সে আস্বাদন করতে পারবে সাহিত্যের প্রকৃত আস্বাদ।'
রাইজিংবিডি : অভিনব ভূমিকা।
স্বকৃত নোমান : সম্ভবত অভিনব। উপন্যাসটি পড়ে পাঠকেরা একটু চমকে উঠবেন।
রাজিংবিডি : চমকানোর কারণ বিষয়, ভাষা, আঙ্গিক, না অন্য কিছু?
স্বকৃত নোমান : প্রধানত বিষয়ের কারণে। পাঠকেরা বিভক্ত হবেন তিন দলে। একদল আমার মুণ্ডপাত করবেন, দ্বিতীয় দল প্রশংসা করবেন এবং তৃতীয় দল নীরব থাকবেন। কতিপয় অসাহিত্যিক ও বেরসিক লোক আমার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবেন, কিন্তু কোনো আইন খুঁজে পাবেন না। পাঠকদের একদল উপন্যাসের গূঢ়ার্থ বুঝতে পারবেন। বিস্ময়ে বলবেন, আরে! এ তো বাস্তব! মীর আসরার জামান, অনন্ত আতিক, রাফিদা জাহান কিংবা ফতেহ উদ্দিন রাশাকে তো আমরা চিনি। আমরা তো চিনি বকুল রাশা এবং মাসুদ হাসান আরজুকেও। ‘মৎস্যগন্ধা’ আখ্যানে তো পড়েছি জায়মনের কথা, যে কিনা নিশিরাতে নিরালা বিলে শিকারে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় দেখতে পায় পূর্বপুরুষদের, যারা গন্ধবোয়াল শিকারের আশায় কোশা ভাসিয়ে রেখেছে বিজলি গাঙের বুকে। এই উপন্যাস একদল পাঠকের অবোধ্য থেকে যাবে। তারা পাঠানন্দ লাভ করবেন বটে, কিন্তু আখ্যানের নিগূঢ় বার্তা তাদের কাছে থেকে যাবে অধরা। তারা বলবেন, এ কী করে সম্ভব! কীভাবে অগণন নক্ষত্রের সম্মিলনে সৃষ্ট ছায়াপথের কুণ্ডলকেন্দ্র থেকে নিঃসীম শূন্যতায় বেরিয়ে আসে আচার্য মীর আসরার জামানের মুখ! অপরদিকে, আরেকদল পাঠক পাবেন প্রকৃত শিল্পস্বাদ। তারা বলবেন, এমন উপন্যাস সাম্প্রতিকালে বেশি লেখা হয়নি।
রাইজিংবিডি: উপন্যাসটি লিখতে উদ্যোগী হলেন কেন? কীসে আপনাকে এটি লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিল?
স্বকৃত নোমান : গত বছর একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম। কতিপয় সাহিত্যজ্ঞানহীন ও হীনম্মন্য মানুষের কর্মকাণ্ড দেখে খুব মন খারাপ হয়েছিল। তখনই উপন্যাসটির আইডিয়া মাথায় আসে। মনে হলো, এই বিষয়কে ভিত্তি করে একটা উপন্যাস লেখা সম্ভব। এপ্রিলের শুরুর দিকে লিখতে আরম্ভ করলাম।
রাইজিংবিডি : কতদিন লেগেছে লেখা শেষ করতে?
স্বকৃত নোমান : প্রায় আট মাস। জুলাই-আগস্টে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল তখন তো মোবাইলে নেট, ইন্টারনেট ছিল না, বাসার টিভিতে ডিশলাইনও সক্রিয় ছিল না। ফলে আমি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলাম। সম্পূর্ণ যোগাযোগহীন। সেই সময়টা উপন্যাসটি ভালো এগিয়েছে। এর গভীরে ডুব দিতে পেরেছিলাম। তখন লেখা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল।
রাইজিংবিডি : আপনি সাধারণত কোন সময়টাতে লেখেন?
স্বকৃত নোমান : অফিস থেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বাসায় ফিরে একটু বিশ্রাম নিয়ে হাঁটতে বেরিয়ে যাই। ঘণ্টাখানেক হাঁটাহাঁটি শেষে সাতটার মধ্যে বাসায় ফিরে লিখতে বসে যাই। লেখা চলে রাত বারোটা, কখনো কখনো একটা পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে বলে এ দুদিন আমি লেখা কিংবা পড়া নিয়েই থাকি।
রাইজিংবিডি: উপন্যাসটি একইসঙ্গে বাংলাদেশ ও কলকাতা থেকে প্রকাশ হচ্ছে। আলাদা আলাদা প্রকাশনী প্রকাশ করছে। আগে কোন প্রকাশনীকে পাণ্ডুলিপি দিয়েছেন, কী শর্তে দিয়েছেন?
স্বকৃত নোমান: উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অন্যপ্রকাশ। একই সঙ্গে উপন্যাসটির কলকাতা সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে অভিযান পাবলিশার্স থেকে। অন্যপ্রকাশ ইতোপূর্বে আমার ‘মায়ামুকুট’ উপন্যাস, গল্পের বই ‘সেরা দশ গল্প’ এবং মুক্তগদ্যের বই ‘যুবতী রাধে, সৈয়দ হক ও আরো কথা’ প্রকাশ করেছে। অনেক দিন ধরেই প্রকাশক শ্রদ্ধেয় মাজহারুল ইসলাম উপন্যাসের একটা পাণ্ডুলিপি চাচ্ছিলেন। এবার অন্যপ্রকাশকে দেব বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম, তাই দিলাম। আর কলকাতার অভিযানও ইতোপূর্বে আমার ‘কালকেউটের সুখ’, ‘হীরকডানা’, ‘উজানবাঁশি’―এ তিনটি উপন্যাস প্রকাশ করেছে। বন্ধুবর প্রকাশক মারুফ হোসেনকে প্রস্তাব দিলাম এটাও প্রকাশ করার বিষয়ে। তিনি রাজি হলেন। আর বিশেষ কোনো শর্ত নেই।
রাইজিংবিডি: অভিযান থেকে প্রকাশিত বইটি কি বাংলাদেশেও পাওয়া যাবে?
স্বকৃত নোমান: না, ওটা কেবল ভারতের বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য। বাংলাদেশে আসবে না। এখন তো বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক সম্পূর্ণ বৈরি। আসার কোনো সুযোগও নেই। অন্যপ্রকাশ সবসময় আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় অংশ নিয়ে থাকে। এবার বাংলাদেশের কোনো প্রকাশকের অংশগ্রহণ নেই। তাই অন্যপ্রকাশের বইটিও ওই মেলায় যাওয়ার সুযোগ নেই।
রাইজিংবিডি: লেখা এবং পাঠ―এ দুটি কাজ কীভাবে সমন্বয় করেন?
স্বকৃত নোমান: যখন লিখতে ইচ্ছে করে না, তখন বই নিয়ে বসে পড়ি। তখন কেবল পড়ি আর পড়ি। পড়তে পড়তে হঠাৎ লিখতে ইচ্ছে হয়। তখন আবার লিখতে শুরু করি। মাঝেমধ্যে অফিসে কাজের ফাঁকে সুযোগ পেলেই পড়ি।
রাইজিংবিডি: উপন্যাস লেখার সময়টাতে সাধারণত কোন ধরনের বইগুলো পড়ে থাকেন?
স্বকৃত নোমান: বিশেষত দেশি-বিদেশি মৌলিক সাহিত্যকর্ম পড়ি। গল্প, উপন্যাস বা কবিতা। সাহিত্যতত্ত্বের বই কিংবা একাডেমিক কোনো প্রবন্ধের বই পড়ি না। কারণ ওগুলোতে সাধারণত সৃজনশীলতা থাকে না, থাকে তত্ত্ব ও তথ্য, যা আমার কাজে লাগে না। উল্টো বরং আমার লেখার গতি নষ্ট হয়। মাঝেমধ্যে ক্লাসিক বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখি, কোনো একটা পৃষ্ঠা পড়ে আবার রেখে দিই। এতে লেখার প্রতি অনুপ্রেরণা জাগে।
রাইজিংবিডি : লেখকের বই প্রচার কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
স্বকৃত নোমান: এ বিষয়ে অভিযানের প্রকাশক বন্ধু মারুফ হোসেন আজ ফেসবুকে একটা চমৎকার পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বই নিয়ে হাজারবার প্রচার করুন। চুরি ডাকাতি খুন ধর্ষণ চিটিংবাজি ধর্মবিদ্বেষী বর্ণবিদ্বেষী কোনো কাজ আপনি করেননি। একটা কবিতার বই, গল্পের বই, উপন্যাস, গদ্যের বই লিখেছেন। না-হয় খাজাই লিখেছেন। অসুবিধা কী? যার ইচ্ছা নয় সে পড়বে না। ইচ্ছে হলে দেখবে পড়বে। গলায় ছুরি ধরিয়ে কাউকে তো পড়াচ্ছেন না। বুক বাজিয়ে বিজ্ঞাপন করুন। বিছানার তলায় ভালো কবিতা রেখে দিলে পাঠক খুঁজে নেয়―এটা ভ্রান্ত। পাঠক না জানলে আপনার বিছানার তলা থেকে খুঁজবে কী করে? বই নিয়ে যত ইচ্ছে তর্ক করুন, বিতর্ক করুন, ঝামেলা করুন, গণ্ডগোল করুন। আলটিমেট বইয়ের মধ্যে থাকুন।‘
আমি মারুফের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। এখন তো নানা প্রচারমাধ্যম আছে। আগে পত্রপত্রিকায় বইয়ের বিজ্ঞাপন দিতে হতো, এখন ফেসবুক আছে, তাই পত্রিকার শরণাপন্ন হতে হয় না। আমার বই আমার ফেসবুক আইডিতে যত ইচ্ছে প্রচার করব, এতে আমি দোষণীয় কিছু দেখি না। বই নিয়েই তো প্রচার করছি, খারাপ কোনো কিছুর প্রচার তো করছি না। লেখক বই লিখে মুনি-ঋষির মতো নীরব হয়ে যাবেন, এই ধরনের কথায় আমার বিশ্বাস নেই। প্রচার মাধ্যম যেহেতেু আছে, সেহেতু লেখক তার বই যতটা পারেন প্রচার দেবেন।
রাইজিংবিডি : প্রকাশনা সংস্থাগুলো যে পরিমাণ রয়ালিটি দেয়, তাতে কি আপনি সন্তুষ্ট?
স্বকৃত নোমান: পনেরো পার্সেন্ট দেয়। সারা পৃথিবীতেই তো তাই দেয়। এর বেশি দেয় কিনা জানা নেই। সুতরাং সন্তুষ্ট না হয়ে তো উপায় নেই। কোনো কোনো প্রকাশক আছেন, যারা লেখককে রয়ালিটি দেওয়ার কথা ভুলে যান, যদিও এটা আমার ক্ষেত্রে সাধারণত হয় না। আমার প্রকাশকরা নির্দিষ্ট সময়ে রয়ালিটি দিয়ে থাকেন। যেসব প্রকাশক লেখকদের রয়ালিটি দিতে গড়িমসি করেন, তাদেরকে সর্বাত্মকভাবে বর্জন করা উচিত।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র আসর র জ ম ন উপন য স র স ধ রণত প ঠ করব কলক ত করব ন অনন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে এবার জামায়াতের বিক্ষোভ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিজয়নগর উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে উপজেলার চান্দুরা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সীমানা পুনর্বিন্যাসের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন সদর ও বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। নতুন গেজেটে বিজয়নগরের তিনটি ইউনিয়ন—হরষপুর, চান্দুরা ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের মধ্যে দেওয়া হয়েছে। ওই ইউনিয়ন তিনটিকে আগের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের মধ্যে রাখতে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন বিজয়নগর উপজেলার চার বাসিন্দা।
আজকের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা জামায়াতের সভাপতি লুৎফর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাষ্ট্রু সরকার, চান্দুরা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সোহাগ খন্দকার, চান্দুরা হেফাজতে ইসলামের সহসাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব সিদ্দিকী, চান্দুরা ইউনিয়ন যুব খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমদসহ আরও অনেকে। তারা আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিতে প্রায় ৯৬ হাজার ভোটার আছেন, যা উপজেলার মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক। দুই লক্ষাধিক ভোটারবিশিষ্ট উপজেলা একক সংসদীয় আসনের উপযুক্ত হলেও বছরের পর বছর ধরে এটিকে একবার সদর, একবার সরাইল, আবার কখনো নাসিরনগরের সঙ্গে যুক্ত করে অবহেলার শিকারে পরিণত করা হচ্ছে।
তিনটি ইউনিয়নকে আগের আসনে রাখার দাবিতে উপজেলার গোলাম মোস্তফা, এ কে এম গোলাম মুফতি ওসমানী, মো. জাহিদুজ্জামান চৌধুরী ও মো. বায়েজিদ মিয়া স্বাক্ষরিত একটি লিখিত আবেদন গতকাল দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুনব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ১৭ ঘণ্টা আগেএর আগে গতকাল বিকেলে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন অংশগ্রহণে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। এ সময় তাঁরা আধা ঘণ্টার মতো সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। একই স্থানে আজ বিকেলে একই দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করার কথা আছে।