2025-12-13@08:56:18 GMT
إجمالي نتائج البحث: 285
«উপন য স র»:
ওরহান পামুক বলেছিলেন, পৃথিবীর সমস্ত ভালো উপন্যাসই কার্যক্ষেত্রে রাজনৈতিক উপন্যাস। কারণ, ভালো উপন্যাস মানেই দ্বিতীয় কোনো মানুষের মন বা বর্গকে পড়তে চাওয়া। অথচ গড়পড়তা পাঠক ‘রাজনৈতিক উপন্যাস’ বলতে বোঝে এমন কোনো রচনা, যার পটভূমিতে আছে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বা ঘটনা বা সময়কাল। রায়হান রাইনের ‘নিখোঁজ মানুষেরা’ সেই বিচারে নিশ্চিতভাবেই রাজনৈতিক উপন্যাস। পড়তে গিয়ে টের পাই, স্বল্পায়তনের এ উপন্যাসে গত দশকের বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নানা রাজনৈতিক ঘটনা ছুঁয়ে ছুঁয়ে গেলেন লেখক।উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইউসুফ, মতিঝিলের দিলকুশার কোনো গলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সে চেতনা হারায়। জীবনের ওপারে আরেকটা ছায়া জগতে পৌঁছে সে খুঁজে পায় ময়ূরজানকে, জীবনের একটা সময়ে যার প্রতি দুর্বলতা ছিল ইউসুফের, আর এখন জানা যায়, মেয়েটা মৃত। তারপর মৃত ওই ময়ূরজানের কাছ থেকেই ছায়াময় ওই জগতে চলাচলের কায়দা শেখে ইউসুফ। ক্রমে আরও...
যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল জাদুঘর থেকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও কমনওয়েলথ আমলের ৬০০টির বেশি মূল্যবান শিল্পকর্ম চুরি হয়ে গেছে। দক্ষিণ-পশ্চিম যুক্তরাজ্যের পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। অ্যাভন ও সমারসেট পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার চার সন্দেহভাজন ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের বিষয়ে তথ্য দিতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চুরি যাওয়া শিল্পকর্মগুলোর সাংস্কৃতিক মূল্য অনেক। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোরে জাদুঘরের সংরক্ষণাগার থেকে এগুলো চুরি হয়। চুরির দুই মাসের বেশি সময় পর কেন সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তথ্য চেয়ে তাঁদের ছবি প্রকাশ করা হলো, তা স্পষ্ট করেননি পুলিশ কর্মকর্তারা। শুধু এটুকুই জানিয়েছেন, চুরির সময় ওই এলাকায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দেখা গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে পুলিশ কথা বলতে চায়।ব্রিস্টল সিটি কাউন্সিল নিশ্চিত করেছে, চুরি যাওয়া শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে পদক, ব্যাজ, পিন, গয়না, খোদাই...
মুক্তিযুদ্ধের বঞ্চনা ও প্রতিরোধের মর্ম অনুধাবন ও সামষ্টিকভাবে জাতীয় চেতনাবোধ প্রজ্বালনে বৃহৎ পরিসরের উপন্যাস পাঠ অত্যন্ত জরুরি। যুদ্ধের ঘটনাশ্রয়ী বড় উপন্যাসগুলো কেবল ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণ দেয় না, বরং যুদ্ধের মনস্তাত্ত্বিক গভীরতা, মানুষের ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং নৈতিক দ্বন্দ্বের সঙ্গে পাঠককে নিবিড়ভাবে পরিচিত করায়। আজ থাকছে যুদ্ধনির্ভর অজস্র লিখিত ভাষ্যের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি উপন্যাস, যেগুলো পরবর্তী প্রজন্মকে আখ্যানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মূল্য সম্পর্কে সচেতন করতে সক্ষম এবং যুদ্ধের অভিঘাত, ত্যাগ ও প্রভাবের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত করে।১. রাইফেল রোটি আওরাত‘রাইফেল রোটি আওরাত’ আনোয়ার পাশার (১৯২৮-১৯৭১) মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রেক্ষাপটে রচিত একটি কালজয়ী উপন্যাস। ১৮২ পৃষ্ঠার এ উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে ২৮ মার্চের ভোর পর্যন্ত মাত্র তিন দিনের ঘটনাবলিকে কেন্দ্র করে। এতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত গণহত্যা ও...
তাঁর সিনেমায় দানব থাকে, তবে গিয়ের্মো দেল তোরোর দর্শকমাত্রই জানেন এই দানব হয় অন্য রকম। এই দানব শুধু ভয় দেখায় না, বরং অনেক বেশি মানবিক। ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ দেল তোরোর স্বপ্নের প্রকল্প; বহু বছর ধরে মেরি শেলির উপন্যাসকে পর্দায় নিয়ে আসতে চান তিনি। দুই শ বছরের বেশি সময় আগে লেখা উপন্যাসটি থেকে দুনিয়ার নানা প্রান্তে এন্তার সিনেমা-সিরিজ, কমিকস হয়েছে; তবু দেল তোরো নিজের ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ বানাতে মরিয়া ছিলেন। ‘আমি স্বপ্ন দেখি সর্বকালের সেরা “ফ্রাঙ্কেনস্টাইন” বানাতে পারি, কিন্তু তৈরি করলেই তা শেষ হয়ে যায়। সেটা ভালো হোক বা না হোক; আর স্বপ্ন দেখার সুযোগ নেই। এটাই নির্মাতার ট্র্যাজেডি,’ বহু বছর আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন অবশেষে বাস্তব হলো, গত ৭ নভেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে গথিক হরর সিনেমার এই ওস্তাদ নির্মাতার ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’।একনজরেসিনেমা: ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ধরন:...
দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে গভীর তাৎপর্যবাহী ঘটনা। এই বিশাল প্রেক্ষাপটকে সামগ্রিকভাবে উপলব্ধির জন্য বৃহৎ পরিসরের উপন্যাসের পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের উপন্যাসগুলোর পাঠও অপরিহার্য।এই ক্ষুদ্র কলেবরের আখ্যানগুলো পাঠককে কোনো বিস্তৃত যুদ্ধগাথার ভার না চাপিয়ে, একটি বিশেষ মুহূর্তের কিংবা নির্দিষ্ট চরিত্রের মনস্তাত্ত্বিক সংকটের গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। ফলস্বরূপ, এক দিনে বা এক বসায় এই উপন্যাসসমূহ পাঠ করে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা, মানবিক বিপর্যয়, সাধারণ মানুষের টিকে থাকার সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ; এই সবকিছুর মর্ম সহজে উপলব্ধি করা সম্ভব হয়। নিচে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে আলো ফেলা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হলো, যা চাইলে আপনার পাঠতালিকায় রাখা যেতে পারে। ১. জাহান্নম হইতে বিদায় (১৯৭১) শওকত ওসমান (১৯১৭–১৯৯৮)
শতাব্দীকাল ধরে বাংলার মুক্তিসংগ্রামের প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ থেকে শুরু করে গত শতকে পাকিস্তান আন্দোলন, অতঃপর ১৯৭১ সালে এ মাতৃকায় চূড়ান্ত বিজয়ের নিশান ওড়ে। পাকিস্তান আন্দোলনে এদেশবাসী একাত্ম হয়েছিল দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শোষণের হাত থেকে মুক্তির অন্বেষায়। ১৯৪৭ সালে সেই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই দেশবাসী অনুধাবন করে ব্রিটিশ উপনিবেশের পরিবর্তে এবার তারা পশ্চিম পাকিস্তানের নতুন উপনিবেশে পরিণত হয়েছে। যার ফলে সদ্য স্বাধীন এ ভূখণ্ডে ক্রমে পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন নানা রূপে দানা বাঁধতে শুরু করে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সেই আন্দোলন ষাটের দশকে গণ–আন্দোলনে রূপ নেয়। গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের রাজনীতির দুর্বোধ্য পাঠ কামরুদ্দীন আহমদ তাঁর ইতিহাস গ্রন্থ ‘স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর’–এর মধ্য দিয়ে সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন। লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ও...
ইংরেজরা বলে, ঈশ্বরের পরে সবচেয়ে বেশি মানুষ সৃষ্টি করেছেন শেক্সপিয়ার। কথাটা অমূলক নয়। শেক্সপিয়ারের নাটকে অসংখ্য চরিত্র সৃষ্টি হয়েছে। বিখ্যাতদের কথা বাদ দিলেও তাঁর নাটকের কোরাস দল, বিবেক দল, ভূতের দল পর্যন্ত এখনো আমাদের সাথে পৃথিবীতে বসবাস করে। ঈশ্বরের সৃষ্ট মানবের মৃত্যু ঘটে। অল্পকিছু মানুষ বাদ দিলে বাকি সবাই কবরে শোয়া বা চিতায় ওঠার পরমুহূর্তেই জীবিতদের জগৎ, মন, জীবন থেকে হারিয়ে যায়। কিন্তু শেক্সপিয়ারের সৃষ্ট মানুষগুলো শত শত বছর পেরিয়েও আমাদের কাছে জীবন্ত। পৃথিবীর বিরাট অংশের লেখাপড়া জানা মানুষের মনে জীবন্ত। কেউ কেউ অলক্ষে ছাপ রেখে যায় মানুষের জীবন যাপনেও। মহান স্রষ্টা শেক্সপিয়ারের এ এক অসাধারণ কৃতিত্ব এবং প্রাপ্তিও বটে। বাংলাসাহিত্যে কি এমন চরিত্র নেই? বঙ্কিমের কপালকুণ্ডলা, কমলাকান্ত? রবীন্দ্রনাথের অমল, রতন? মীর মশাররফ হোসেনের মোহাম্মদ হানিফা? মানিক বাঁড়ুজ্জের ভিখু?...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার তাঁর শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়ে ওভাল অফিসে বৈঠক করেছেন। অন্যদিকে তাঁর প্রতিপক্ষ নিকোলা মাদুরো ‘দাসত্বের শান্তি’ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফলে ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা বাড়ছে। ট্রাম্প যখন ক্যারিবীয় অঞ্চলে বড় ধরনের নৌসেনা মোতায়েন করেছেন, মাদক পাচারকারী সন্দেহে নৌকাগুলোতে বোমা বর্ষণ করছেন এবং ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা এড়িয়ে চলতে সতর্কবার্তা দিচ্ছেন, ঠিক তখনই এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটকে এ বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করছি, প্রেসিডেন্ট এই বিষয় এবং অন্যান্য অনেক বিষয় নিয়ে তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’কারাকাসের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে চলা উত্তেজনার পর ট্রাম্প কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কি না, তা বলতে রাজি হননি লেভিট। তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই বৈঠকের নির্দিষ্ট...
কারাবন্দী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা এবং দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর বোন ও দলীয় নেতাদের সাক্ষাতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিরোধীদলীয় জোট। অন্যথায় তারা দেশজুড়ে বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।পাকিস্তানের পার্লামেন্ট হাউসের বাইরে গত শুক্রবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দেশটির বিরোধীদলীয় জোট। এতে পাখতুনখাওয়া মিলি আওয়ামী পার্টির (পিকেএমএপি) সভাপতি মেহমুদ আছাকজাই বলেন, ‘আমরা সিন্ধি, বেলুচ, পশতু ও পাঞ্জাবিদের রাস্তায় নামা আটকেছি। না হলে তাঁরা সরকার ও তার নীতির বিরুদ্ধে (রাস্তায়) নেমে পড়তেন। এতে করে শাসকেরা বড় সমস্যায় পড়তেন।’সরকার পার্লামেন্টকে ‘রাবার স্ট্যাম্পে’ পরিণত করেছে এবং জাতীয় পরিষদের স্পিকার আয়াজ সাদিক ‘অন্য কোথাও থেকে আসা নির্দেশ’ অনুসরণ করছেন বলেও অভিযোগ করেন মেহমুদ। তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। কিন্তু স্পিকার এ গুরুতর বিষয়ে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন...
বাংলা মননশীল কথাসাহিত্যের এক নতুন আঙ্গিক সৌষ্ঠবের যুগ একুশ শতক। এই সময়ে পাঠক ও লেখক উভয়ই বৃহদায়তনের আখ্যানের চেয়ে অল্প পরিসরের গভীর মনোবিশ্লেষণী বইয়ের প্রতি বেশি আগ্রহী। ২০০০ সালের পর থেকে প্রকাশিত বহু বিশিষ্ট উপন্যাসই নিছক কাহিনি বা চরিত্রের বহুমাত্রিক বিস্তার নয়, বরং পাঠকের ব্যক্তিগত মনোজগৎ ও অস্তিত্বসংকটের গভীরবোধ প্রকাশে সচেষ্ট হয়েছে। দ্রুতগতির জীবন ও তথ্যের আধিক্যের কারণে দীর্ঘ উপন্যাসের ভার বহনে নিরুৎসাহী পাঠক দ্রুত একটি গভীর দার্শনিক বা মনস্তাত্ত্বিক অভিজ্ঞতা চায়। ফলে এই সময়ের সাহিত্য চিরায়ত আখ্যান কাঠামো ভেঙে নিরীক্ষার আশ্রয়ে বর্তমানের বিচ্ছিন্নতা, স্বপ্নভঙ্গ এবং নৈতিক জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে। ১. আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু শহীদুল জহিরের (১৯৫৩-২০০৮) মরণোত্তর প্রকাশিত (২০০৯) সর্বশেষ উপন্যাস ‘আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু’। এটি তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলের পটভূমিতে রচিত একটি নাতিদীর্ঘ...
প্রাচীন গ্রীসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং সমৃদ্ধশালী নগর-রাষ্ট্র ছিলো করিন্থ। এটি তার কৌশলগত অবস্থান, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক অবদানের জন্য বিখ্যাত ছিল। এটি পেলোপোনিস এবং মূল গ্রীসের সংযোগকারী ইস্তমাস অফ করিন্থ নামক সংকীর্ণ ভূখণ্ডে অবস্থিত ছিল। করিন্থ দুটি উপসাগর, করিন্থিয়ান এবং সারোনিক, উভয়ের সাথেই সংযুক্ত ছিল। এই অনন্য ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এটি স্থলপথ এবং সমুদ্রপথ, উভয় বাণিজ্যেরই প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। আরো পড়ুন: নিম-হলুদ কী সত্যিই ত্বকের জন্য ভালো? ইডিপাস: না জেনে নিজের মাকে বিয়ে করেছিলেন খ্রিষ্টপূর্ব ৭ম এবং ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে করিন্থ অর্থনৈতিক উন্নতির শিখরে পৌঁছায়। এই সময়ে তারা মৃৎশিল্প, বিশেষ করে কালো রঙের মৃৎপাত্র তৈরিতে উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহার করে, যা ভূমধ্যসাগর জুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রথমদিকে করিন্থ একটি রাজতন্ত্র ছিল, যা পরে ব্যাকিয়াড পরিবারের অভিজাতদের...
পাপড়ি রহমানের উপন্যাস ‘ঊষর দিন ধূসর রাত’। পড়ার শুরুতে মনে হয়েছিল শেফালি উপন্যাসের মূল প্রোটাগনিস্ট। আরেকটু এগোনোর পরে মনে হলো মূল চরিত্রটি বোধহয় মুমু। শেষে আরেকটি চরিত্র বকুল এসে সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিলো। কেউই প্রোটাগনিস্ট হয়ে উঠলো না। উপন্যাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার পরে মনে হলো আরে প্রোটাগনিস্ট তো তুহিন। কেননা তুহিন শেষতক ‘আমি’ হিসেবে উপন্যাসের চরিত্র হয়ে ওঠে। কিন্তু নাহ, কেউই আসলে প্রোটাগনিস্ট না। বরং এইসব চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার জন্য যে যে প্রতীকী রূপ ব্যবহৃত হয়েছে, যে ইলিউশন তৈরি হয়েছে তার ভেতর দিয়ে এগিয়ে গেছে এই অস্থির নগরজীবনের গল্প, সেই গল্পটিই প্রোটাগনিস্ট। মানে হলো নদী বয়ে যেতে যেতে শুকিয়ে গেলো। তারপর জেগে রইলো দাগ। সেই দাগ বলে দিলো ‘এইখানে নদী ছিলো’। ঔপন্যাসিক এই উপন্যাসের মূল গল্পটা পিলো...
আলবেনিয়া-গ্রিস সীমান্তের একটি গুহায় সম্ভবত বিশ্বের বৃহত্তম মাকড়সার জাল আবিষ্কৃত হয়েছে। সেখানে কয়েক লাখ মাকড়সা একসঙ্গে বসবাস করছে। গবেষকেরা একটি অন্ধকার ও সালফার-সমৃদ্ধ গুহার মধ্যে দুটি ভিন্ন প্রজাতির মাকড়সার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখেছেন। জীববিজ্ঞানীরা মাকড়সার এই আবাসকে অত্যন্ত বিরল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের বিজ্ঞানী লেনা গ্রিনস্টেড বলেন, মাকড়সাদের মধ্যে দলবদ্ধভাবে বসবাস করা সত্যিই বিরল। এমন একটি জায়গায় মাকড়সার এত বড় একটি উপনিবেশের সন্ধান পাওয়া আমার কাছে অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। সাবটেরেনিয়ান বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।প্রায় ১ হাজার ১৪০ বর্গফুট বা ১০৬ বর্গমিটার আয়তনের বিশাল মাকড়সার জালের অবিশ্বাস্য কাঠামো দেখা যায়। একটি বিস্তৃত সালফার কেভ বা গুহার একটি সরু পথের প্রাচীর বরাবর পুরু কার্পেটের মতো বিছানো আছে মাকড়সার জালটি। আনুমানিক ১ লাখ ১০ হাজার মাকড়সা নিয়ে গঠিত...
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম...
আজকাল অনেকের বড় উপন্যাস পড়ার ধৈর্য কমে গেছে। আবার কারও কারও হাতে সময় কম। এ ধরনের পাঠকের জন্য ভালো উপায় হলো ছোট আকারের গল্প বা নভেলা। যেগুলো এক বসাতেই শেষ করা যায়। এই ছোট বইগুলো ব্যস্ত জীবনে হতে পারে দারুণ সঙ্গী।২০০ পৃষ্ঠার কম এই বইগুলো কেবল সময় কম নেবে না, বরং গুডরিডস রিডিং চ্যালেঞ্জ পূরণেও সাহায্য করবে। কোনো এক ছুটির দিনে সহজেই পড়ে শেষ করা যাবে এই পাঁচটি বই।ক্লেয়ার কিগানের ‘স্মল থিংস লাইক দিজ’ ১৯৮০ দশকের আয়ারল্যান্ডের গল্প। একজন বাবাকে কেন্দ্র করে কাহিনি। তিনি কয়লা ও কাঠের ব্যবসা করেন। বড়দিনের আগে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। একদিন স্থানীয় গির্জায় কয়লার ঘরে এক অনাহারী তরুণীর সন্ধান পান। এরপর সেখানকার নানদের আচরণে তাঁর মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়। তাঁর সন্দেহ, সেখানে আরও অনেকে...
ইরান কেবল একটি রাষ্ট্র নয়, বরং গোটা এক সভ্যতা। প্রাচীন ও আত্মসচেতন এই সভ্যতা গড়ে উঠেছে শত শত বছর ধরে দর্শন, শিল্প ও আধ্যাত্মিকতার চর্চার মধ্য দিয়ে। এই সভ্যতাগত চরিত্রই যুগে যুগে ইরানের রাজনৈতিক ও নৈতিক সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ছিল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্বচ্ছ। তবে তা আত্মসম্মানবোধ থেকে, আত্মসমর্পণ থেকে নয়। তবু পশ্চিমা গণমাধ্যম ও তাদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকেরা ইরানকে এক ‘দুষ্ট রাষ্ট্র’ হিসেবে তুলে ধরেছে। যেন পশ্চিমের নৈতিকতার মিথ ধরে রাখার জন্য ইরান এক সুবিধাজনক ‘অপর’। ইরানের পররাষ্ট্রনীতি বরাবরই দাঁড়িয়ে আছে প্রতিরোধের নীতির ওপর। হিজবুল্লাহ ও হামাসকে ইরানের সমর্থন কখনোই অন্ধ সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ ছিল না। সেই সমর্থন মূলত এমন এক আঞ্চলিক শক্তির বিরুদ্ধে, যারা আজও ফিলিস্তিনিদের পিষ্ট করে চলেছে গণহত্যার মতো নির্যাতনের মাধ্যমে। আরও পড়ুনআরব দেশগুলো...
সৌদি ঔপন্যাসিক ফাতিমা আল-আমরো আরবি সাহিত্যে নতুন ধারা তৈরি করেছেন, যেখানে দৃশ্যশিল্প ও কথাসাহিত্য একীভূত হয়েছে। তাঁর লেখায় আছে বিশ্বজনীন আবেদন ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়। এক সাক্ষাৎকারে ফাতিমা বলেন, সমকালীন সাহিত্য কেবল আর ছাপার অক্ষরে সীমাবদ্ধ নয়। এটি এখন চিত্র, নাটক ও শিল্পকলার সমন্বিত রূপ।ফাতিমা আল-আমরো বিশ্বাস করেন, প্রচ্ছদ কেবল সাজসজ্জা নয়; বরং উপন্যাসের সঙ্গে পাঠকের প্রথম সংযোগ। তাঁর আলোচিত উপন্যাস আসলান’স স্কাই-এর প্রচ্ছদে ইউরোপীয় মডেল শায়েন দ্রাঘির ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল।সৌদি উপন্যাসের প্রচ্ছদে ইউরোপীয় মডেল
দিলরুবা আহমেদ গল্পকার ও ঔপন্যাসিক। প্রবাসে থেকে নিয়মিত লেখালেখি করছেন। তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো ‘ক-১৯ উইপিং উইলো ও নিহা’, ‘ব্রাউন গার্লস’, ‘গ্রিনকার্ড’, ‘এসো, হাত ধরো’ প্রভৃতি। সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। এ সময় লেখালেখি, সমকালীন সাহিত্যপ্রসঙ্গসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয় রাইজিংবিডি ডটকমের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইফ বরকতুল্লাহ। রাইজিংবিডি: আপনার লেখালেখির শুরু কীভাবে? দিলরুবা আহমেদ: আসলে আপন মনে গুনগুনিয়ে উঠার মতনই আঁকিবুকি করে সেই কোনো এক ছোট বেলাতেই লেখালেখি শুরু করেছিলাম তা আজ কেবলি স্মৃতি। গল্প লিখতাম লুকিয়ে, শেষ করা হতো না হয়তোবা তারপরও লিখতাম। কলেজ জীবনে পিকনিকে গিয়েছিলাম, তখন তাই নিয়ে একটা বড় উপন্যাস লিখে ফেলেছিলাম, যা আজও ধূসর পাণ্ডুলিপি-ই হয়ে রয়ে গেছে, অপ্রকাশিত। যদিও পত্রিকায় আমার প্রথম লেখা বের হয় সেই কলেজ জীবনেই। আসলে যে লিখে সে নিজেও...
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক জিয়া হায়দার রহমান। ২০১৪ সালে প্রকাশিত তাঁর ইন দ্য লাইট অব হোয়াট উই নো উপন্যাস সমালোচক মহলে বেশ প্রশংসিত হয়। বইটি বহু ভাষায় অনূদিত হয় এবং ব্রিটেনের ‘জেমস টেইট ব্ল্যাক মেমোরিয়াল পুরস্কার’–এর মতো সম্মাননাও পান তিনি। সম্প্রতি বাংলা একাডেমিতে ‘দ্য পলিটিকস অব লিটারেচার’ শিরোনামে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তৃতা করেন। তাঁর ওই বক্তৃতানির্ভর একটি লেখা প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য বাংলায় অনুবাদ করে দুই পর্বে প্রকাশ করা হলো। আজ প্রকাশিত হলো শেষ পর্ব।২০২০ সালের ৭ জুলাই হার্পারস ম্যাগাজিন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে একটি খোলাচিঠি প্রকাশ করেছিল। এ চিঠির ১৫০ জন স্বাক্ষরকারী একটি বিস্তৃত রাজনৈতিক পরিসর থেকে এসেছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে ছিলেন মার্গারেট অ্যাটউড, নোয়াম চমস্কি, সালমান রুশদি, স্টিভেন পিংকার, জে কে রাউলিং ও গ্লোরিয়া স্টেইনমের মতো ব্যক্তিত্ব। যেহেতু আমার...
সহজ সাবলীল স্বতঃস্ফূর্ত― শরৎচন্দ্রের লেখাগুলি সম্পর্কে এ ক’টা শব্দ ব্যবহার করাই যায়। স্বাভাবিকভাবেই আমরা এও জানি, যার যা শক্তি, তাই হয়ে ওঠে তার দুর্বলতা। সাহিত্যের ক্ষেত্রে জটিল গ্রন্থিল গম্ভীর হওয়াটাই ‘আধুনিক’ বলে গণ্য। ফলে কারো কারো মতে, ওই তিনটি শরৎচন্দ্রের যতটা না শক্তি ততটাই যেন দুর্বলতা। অনেক আধুনিক লেখক নিজেদের তৈরি করতে গিয়ে মনে করেছেন, বাংলা গল্প-উপন্যাসচর্চায় শরৎচন্দ্রের আর দরকার নেই। কারণ, বঙ্কিম-রবীন্দ্রনাথের পর শরৎচন্দ্র বাংলা সাহিত্যের নিরাকরণ। তাকে পারলে পুরোপুরি বাদ দিয়ে পরের বিভূতি-তারাশঙ্কর-মানিক-সতীনাথ অব্দি দিব্যি চর্চা করলেই হাতে তৈরি হবে গদ্য এবং গল্প-উপন্যাস লেখার তাকত। অথচ এই সত্যও সবাই জানেন, শরৎচন্দ্র না হলে বিভূতি-তারাশঙ্কর-মানিক অন্তত এত আগে আগে বা রবীন্দ্রনাথ থাকতে থাকতেই, তৈরি হতেন না। রবীন্দ্রনাথের দিকে তাকিয়ে শরৎচন্দ্রের যেমন বিস্ময়ের অবধি ছিল না, তেমন শরৎচন্দ্রের আকুল-ব্যাকুল করা...
তিন শতাধিক গ্রন্থে হুমায়ূন আহমেদ অসংখ্য চরিত্রের জন্ম দিয়েছেন। তাঁর সবচেয়ে আলোচিত ও জনপ্রিয় তিনটি চরিত্র হলো হিমু, শুভ্র ও মিসির আলি। সম্ভবত তাঁর নিজেরও অতি আপন এই তিন চরিত্র। আমাদের বিদ্বৎসমাজে অবশ্য এদের বা এদের উপজীব্য করে রচিত উপন্যাসগুলোর কদর অতি অল্প। প্রশ্ন হলো, হুমায়ূন আহমেদ কেন ১৯৭২ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’র ধারা অনুসরণ না করে আপাত হেঁয়ালিপূর্ণ ক্ষুদ্রায়তন এই সব উপন্যাস রচনায় নিরত হলেন? কেন মহৎ সাহিত্য রচনায় না নেমে হাস্যরস উৎপাদনকেই তাঁর সাহিত্যিক ব্রত হিসেবে গ্রহণ করলেন? এসব প্রশ্ন নিয়ে, বিশেষত তাঁর সৃষ্ট তিনটি স্বনামধন্য চরিত্র নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটানোই এ লেখার উদ্দেশ্য।আমাদের পক্ষে এখন আর জানা সম্ভব নয় এসব চরিত্র সৃষ্টির পেছনে হুমায়ূন আহমেদের অন্তর্গত অভিপ্রায় বা বাসনা কী ছিল। যদিও অনেকে বলে...
বুকার পুরস্কারের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬৯ সালে, তখন এর নাম ছিল ‘বুকার-ম্যাককনেল প্রাইজ’। পরে স্পনসর বদলে তা হয় ‘ম্যান বুকার প্রাইজ’, আর এখন কেবল ‘দ্য বুকার প্রাইজ’। সময়ের সঙ্গে নাম বদলেছে, নিয়ম বদলেছে, কিন্তু এই পুরস্কারের মূল উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত—ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত সেরা উপন্যাসগুলো পাঠকের সামনে তুলে আনা। প্রায়ই দেখা যায়, নোবেলজয়ী লেখকেরাও আগে থেকেই বুকার পুরস্কারের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত। এ বছর সাহিত্যে নোবেলজয়ী লাসলো ক্রাসনাহোরকাই যেমন ২০১৫ সালে পেয়েছিলেন ‘ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ’।মূল বুকার পুরস্কার সাধারণত ইংরেজিতে লেখা ও যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত উপন্যাসের জন্য প্রদান করা হয়। ২০১৪ সাল থেকে লেখকের জাতীয়তা–নির্বিশেষে, ইংরেজি ভাষায় লেখা যেকোনো লেখকের জন্য এই পুরস্কারকে উন্মুক্ত করা হয়েছে, তবে এর আগে জাতীয়তাও বিবেচিত হতো। অন্যদিকে, ‘ইন্টারন্যাশনাল বুকার প্রাইজ’ দেওয়া হয় এমন বইকে,...
হাঙ্গেরীয়-ব্রিটিশ লেখক ডেভিড সা–লাই তাঁর উপন্যাস ‘ফ্লেশ’–এর জন্য লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার জিতেছেন। উপন্যাসে একজন নির্যাতিত হাঙ্গেরিপ্রবাসীর জীবনের গল্প বলা হয়েছে; যিনি অর্থ উপার্জন করেন এবং তা হারিয়েও ফেলেন।সা–লাই (৫১) চূড়ান্ত তালিকায় থাকা অপর পাঁচ প্রার্থীকে পেছনে ফেলে ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড (৬৫ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার) মূল্যের এ পুরস্কার জেতেন। ২০২৫ সালে এ পুরস্কার প্রাপ্তির চূড়ান্ত তালিকায় ছিলেন ভারতীয় লেখক কিরণ দেশাই ও যুক্তরাজ্যের অ্যান্ড্রু মিলারও।সা–লাইয়ের বইটি লেখা হয়েছে সহজ ও সংক্ষিপ্ত ভাষায়। এতে মৌন স্বভাবের ইস্তভানের জীবনকাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। কাহিনি শুরু হয়েছে ইস্তভানের কিশোর বয়সে তাঁর চেয়ে বেশি বয়সী এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক দিয়ে, এরপর যুক্তরাজ্যে একজন সংগ্রামী অভিবাসী হিসেবে তাঁর পথ চলা এবং শেষ হয় লন্ডনের উচ্চবিত্ত সমাজের একজন সদস্য হিসেবে।লন্ডনে বুকার পুরস্কারের আয়োজকেরা...
১৮৪৯-এর ২২ ডিসেম্বর। তীব্র শীতের মধ্যে সেন্ট পিটার্সবার্গের পিটার অ্যান্ড পল দুর্গের বন্দিশালা থেকে কয়েকজন রাজনৈতিক বন্দীকে বের করে আনা হয়েছে। আট মাস ধরে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে এদের ওপর। তাদের নিয়ে যাওয়া হলো সেমেনোভস্কি কোয়্যারে, যেখানে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনানো হলো তাদের। চাষিরা যেমন পরে, তেমন লম্বা আলখাল্লা পরানো হলো, মাথায় পরানো হলো টুপি। প্রথম তিন বন্দীকে তিনটি খুঁটির সঙ্গে বাঁধা হলো। তাদের চোখ বাঁধতে গেলে তিনজনের একজন প্রত্যাখ্যান করল, উদ্যত বন্দুকের নলের দিকে নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে থাকল সে। গুলি ছোড়ার ঠিক পূর্বমুহূর্তে ঊর্ধ্বশ্বাসে ঘোড়া ছুটিয়ে এক বার্তাবাহক এল জারের ফরমান নিয়ে। তিন বন্দীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ রহিত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন জার। আসলে মৃত্যুদণ্ড, ফায়ারিং স্কোয়াড, শেষ মুহূর্তের রায়—সবই ছিল সাজানো এবং বন্দীদের শাস্তিরই অংশ। যে তিন...
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের ধানের শীষ প্রতীকের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠে থেকে ব্যাপক আলোচিত হলেও এবার মাঠে নেই। এমনকি তাঁদের দেখাও মিলছে না। এই দুজন হলেন ছয়বারের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির দলছুট নেতা প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান ভূঁইয়া এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের নেতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবুল হাসানাত আমিনী।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে নৌকার কোনো প্রার্থী ছিলেন না। আওয়ামী লীগের ছাড়ের আশায় তাঁরা দুজনই নির্বাচনে অংশ নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মঈন উদ্দিন জয় লাভ করেন। নির্বাচনে মাইনুল হাসান তৃণমূল বিএনপির সোনালি আঁশ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৪ হাজার ৩১৮ ভোট পান। আর...
ভারতবর্ষ সাময়িকীতে ১৯৩৪-৩৫ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’। প্রকাশের ৯০ বছর পর সেই উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে সিনেমা। গত আগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’; এবার ওটিটিতে আসছে সিনেমাটি। ঘরে বসেই দেখা যাবে সুমন মুখোপাধ্যায়ের সিনেমাটি। ১৪ নভেম্বর থেকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-তে দেখা যাবে সিনেমাটি। প্ল্যাটফর্মটির এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস থেকে পর্দায় কুসুম, শশী, কুমুদ, যাদব আর সেনদিদি হয়েছেন জয়া আহসান, আবীর চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়।অনেক দিন ধরেই সিনেমাটি নিয়ে কাজ করছিলেন সুমন মুখোপাধ্যায়। এটি মুক্তির আগে এক ফেসবুক পোস্টে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা লিখেছিলেন, ‘এই ছবি বানানোর প্রথম চেষ্টা করেছিলাম ২০০৮ সালে। কিন্তু নানা কারণে আটকে গেছে। যখন ১৪ বছরেও বানাতে পারিনি, তখন প্রায়...
১৯৪১ সাল। বিশ্বজুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কালো ছায়া। ভারতে ব্রিটিশরা চাপের মুখে। একদিকে তাদের সবচেয়ে বৃহত্তম উপনিবেশ ভারত ছাড়ো আন্দোলন। অন্যদিকে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচের তেলখনিসমৃদ্ধ ব্রিটিশ উপনিবেশগুলো অক্ষশক্তির দুই বড় দেশ জার্মানি ও ইতালির কাছে হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা।এই সময়ে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে নতুন একটি ফ্রন্ট খুলতে গোপনে ভারতবর্ষের আলোচিত নেতা সুভাষচন্দ্র বসু ভারত ছাড়েন। শান্তিপূর্ণ সংগ্রামে আর কাজ হবে না, সশস্ত্র লড়াই করে ভারত থেকে ব্রিটিশদের তাড়াতে হবে—এই ছিল তাঁর ভাবনা। ভারত ছেড়ে প্রথমে তিনি যান জার্মানি।১৯৪১ থেকে ১৯৪৩ সাল সময়কালে তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে জার্মানিতে ইতিবাচক–নেতিবাচক নানা মূল্যায়ন আছে। বিতর্কের বড় কারণ, তিনি নাৎসি নেতা হিটলারের সহায়তায় ভারতকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন এবং সে লক্ষ্যে ইতালির ফ্যাসিবাদী নেতা বেনিতো মুসোলিনি ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিদেকি তোজোর সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।যে জার্মানিতে সুভাষচন্দ্র...
চাকরির পরীক্ষায় নানা প্রশ্নই আসে। নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে সম্প্রতি। প্রায় সব পরীক্ষাতেই নোবেল পুরস্কার নিয়ে এক বা একাধিক প্রশ্ন আসে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার ও বিজয়ীদের সম্পর্কে জরুরি কিছু তথ্য।নোবেল পুরস্কার প্রচলন হয় ১৯০১ সালে। এ বছর ১২৫তম নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। ৬টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছেন ৯টি দেশের ১৪ জন।অর্থনীতি মূল নোবেল পুরস্কারের অন্তর্ভুক্ত নয়। ১৯৬৯ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোবেল পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে এই পুরস্কার চালু করে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫৭ জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্থনীতিতে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুরস্কার—এটাই এই পুরস্কারের কেতাবি নাম। তবে এটি নোবেল পুরস্কার হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।আর্থিক সম্মাননানোবেল বিজয়ীরা আর্থিক সম্মাননা হিসেবে পান ১১ মিলিয়ন বা ১...
জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর বিএনপির দায়িত্ব নিয়ে ১৯৯১ সালে নির্বাচনী যাত্রা শুরু করেন খালেদা জিয়া। তারপর বিভিন্ন নির্বাচনে নানা আসন থেকে প্রার্থী হলেও কোনো আসনে কখনো হারেননি তিনি। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন তিনি; যার দুটিতে আগেও তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন, তার সঙ্গে নতুন এলাকা হিসেবে নিজের জন্মস্থানকে বেছে নিয়েছেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছে। সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম আজ সোমবার প্রকাশ করেছে বিএনপি। তাতে দেখা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য রাখা হয়েছে ফেনী–১, বগুড়া–৭ ও দিনাজপুর–৩ আসনগুলো।আওয়ামী লীগ আমলে দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া খালেদা জিয়া গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর খালাস পেয়ে কারামুক্ত হলেও অসুস্থতার জন্য তাঁর নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে যে সংশয়...
গল্প যখন জাহাজের রহস্যময় খুন, তখন সবার আগে মাথায় আসে ১৯৭৮ সালের ‘ডেথ অন দ্য নাইল’-এর কথা। ১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য লাস্ট অব শিলা’ সিনেমাটিও এগিয়ে থাকবে এদিক দিয়ে। তবে রুথ ওয়ারের উপন্যাসভক্তদের জন্য নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি হতে পারত এমনই এক অভিজ্ঞতা। রুথের উপন্যাস ‘দ্য ওমেন ইন কেবিন ১০’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নেটফ্লিক্সে এসেছে একই নামের নতুন সিনেমা। তবে সাইমন স্টোন পরিচালিত সিনেমাটির শুরুটা আশা জাগানিয়া হলেও শেষপর্যন্ত রোমাঞ্চ ধরে রাখতে পারেনি।একনজরে সিনেমা: ‘দ্য ওমেন ইন কেবিন ১০’ স্ট্রিমিং: নেটফ্লিক্স ধরন: ড্রামা, ক্রাইম থ্রিলার রানটাইম: ১ ঘণ্টা ৩২ মিনিট পরিচালক: সাইমন স্টোন অভিনয় : কিরা নাইটলি, গাই পিয়ার্স, ডেভিড আজালা, গিটে উইট, আর্ট মালিক, হান্নাহ ওয়াডিংহাম, কায়া স্কোডেলারিওলন্ডনের এক খ্যাতিমান অনুসন্ধানী সাংবাদিক লরা ব্ল্যাকলক (কিরা নাইটলি)। তিনি একটি...
কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লাকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস ‘মায়ার সিংহাসন’। কথাসাহিত্যিক আবদুল্লাহ আল মুক্তাদির রচিত এই অনন্য গ্রন্থটি প্রকাশ করছে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী। প্রকাশনা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৭ নভেম্বর পাঠকদের হাতে পৌঁছাবে বইটি। এতে শুধু রুনা লায়লার সংগীতজীবনের ইতিহাস নয়, উঠে এসেছে এক শিল্পীর আত্মঅন্বেষণ, সময়ের রূপান্তর, সুরের গভীরতা ও এক নারীর শিল্পযাত্রার অনন্ত আবেগ। আরো পড়ুন: মাটি সরে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু, ঝুঁকিতে ৩০ হাজার মানুষের চলাচল সাঁকো বিড়ম্বনার ৪০ বছর লেখক আবদুল্লাহ আল মুক্তাদির বলেন, “রুনা লায়লার কণ্ঠে যখনই গান শুনেছি, মনে হয়েছে সময় থেমে গেছে— চারপাশে শুধু সুর, মায়া আর স্মৃতির তরঙ্গ। সেই অনুভব থেকেই জন্ম নিয়েছে ‘মায়ার সিংহাসন’। এটি কেবল জীবনী নয়, বরং এক ‘গীতি-উপন্যাস’, যেখানে সুর, শব্দ ও মানবমনের...
বাংলা সাহিত্যের বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এক জ্যোতির্ময় নক্ষত্র, যাঁর সৃজনশীলতা প্রকৃতি ও মানবাত্মার অবিচ্ছেদ্য ও নিগূঢ় বন্ধনকে নিপুণভাবে উন্মোচন করেছে। তিনি কেবল একজন গল্পকার বা ঔপন্যাসিক ছিলেন না, ছিলেন এক দার্শনিক কবি, যাঁর লেখায় বিধৃত হয়েছে জীবন ও জগতের সুগভীর রহস্য, প্রকৃতির শাশ্বত রূপ এবং মানবচেতনার অন্তর্নিহিত স্পন্দন। নাগরিক জীবনের কোলাহল ও কৃত্রিমতা থেকে দূরে, মাটির কাছাকাছি এক সহজিয়া জীবনের প্রতিচ্ছবি তাঁর সাহিত্যে এমনভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, যা পাঠককে এক চিরন্তন সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করায়। বিভূতিভূষণের সাহিত্য নিছক গ্রামীণ জীবনের চিত্রায়ণ নয়, বরং তা প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে বিদ্যমান প্রায়-আধ্যাত্মিক সম্পর্কের এক মহাকাব্য, যেখানে জড় ও চেতনের বিভেদরেখা প্রায়ই বিলীন হয়ে যায়।বিভূতিভূষণের সাহিত্যসত্তার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে প্রকৃতি। তাঁর লেখায় প্রকৃতি নিছক একটি পটভূমি বা আলংকারিক উপাদান নয়, বরং তা এক জীবন্ত,...
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারে মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার এবং কংগ্রেস নেতা মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। শুক্রবার রাজভবনে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল জিষ্ণু দেব ভার্মা। শপথ বাক্য গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ. রেভান্ত রেড্ডিসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, সিনিয়র কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস শাসিত তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারে সর্বোচ্চ ১৮ জন মন্ত্রী থাকতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আজহারউদ্দিন মন্ত্রী হওয়ায় তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারের সদস্য সংখ্যা হলো ১৬ জন। পাশাপাশি মুসলিম মুখ হিসাবে একমাত্র তিনিই মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন। আগামী ১১ নভেম্বর রাজ্যটির জুবিলি হিলস বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন। তার আগে কংগ্রেসের মন্ত্রিসভায় আজহারউদ্দিনের অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সেক্ষেত্রে মুসলিম অধ্যুষিত ওই আসনটিতে কংগ্রেসের জেতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিতে পরে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ওই বিধানসভা আসনে মোট ভোটার প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার।...
অর্ধশতাব্দীর বেশি আগে, ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর বলিভিয়ার পাহাড়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টাইন বিপ্লবী আর্নেস্তো চে গুয়েভারার রাইফেল। কিন্তু তাঁর কথার প্রতিধ্বনি আজও আন্দিজ পর্বতমালা থেকে শুরু করে গাজার শরণার্থীশিবির—সমগ্র বৈশ্বিক দক্ষিণজুড়ে ধ্বনিত হয়।আজ তাঁর মৃত্যুর ৫৮ বছর পর আবার যে প্রশ্নটা ফিরে আসে, কিউবার জঙ্গলে লড়া সেই আর্জেন্টাইন চিকিৎসক আর দীর্ঘ দশক ধরে দখলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে সম্পর্কটা কীভাবে গড়ে উঠেছিল? এই সম্পর্ক কি শুধু প্রতীকী ছিল, নাকি চে ফিলিস্তিনি বিপ্লবী চিন্তায় বাস্তব ছাপ রেখে গিয়েছিলেন?চিকিৎসাশাস্ত্রের পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে চে গুয়েভারা এমন এক অভিযানে নেমে পড়েন, যেটিকে তিনি বলেছিলেন ‘অন্যায় থেকে পৃথিবীর আরোগ্য।’ লাতিন আমেরিকাজুড়ে তাঁর ভ্রমণ তাঁকে রূপান্তরিত করেছিল কিউবান বিপ্লবের অন্যতম প্রধান নেতায়। ১৯৫৯ সালের সেই বিপ্লব মার্কিন–সমর্থিত বাতিস্তা শাসন উৎখাত করেছিল। কিন্তু...
‘ফিলিপের (পিএইচডি সুপারভাইজার) ফেরত দেওয়া চ্যাপ্টার নিয়ে বাসায় ফিরছি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি, সেই চ্যাপ্টারে মাত্র চার-পাঁচটা কমেন্ট। দুয়েক জায়গা আন্ডারলাইন করা। ফিলিপ কি ভালো করে দেখেইনি আমার চ্যাপ্টার? নাকি দেখার রুচি হয়নি ওর। বুক নিথর করা বেদনা আর অপমানে ফুটপাতের ওপর বসে পড়ি। ভাগ্য ভালো, লন্ডনে ফুটপাতে বসে পড়া মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকে না কেউ।’কথাগুলো লিখেছেন আসিফ নজরুল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক, কলামিস্ট, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কথাসাহিত্যিক।আসিফ নজরুলের লেখা প্রথম পড়ি বিচিত্রা ঈদসংখ্যায়, উপন্যাস নিষিদ্ধ কয়েকজন। সেই উপন্যাস আমার মগজের ভেতর ঢুকে পড়ে। কোনো লেখকের ব্যাপারে আমার ভেতরে কখনো মোহ কাজ করেনি। লেখা পড়ে বিরক্ত কিংবা মুগ্ধ হই। লেখার ওপারের মানুষকে খুঁজি না।আসিফ নজরুলকে খুঁজলাম। কেন খুঁজলাম, নিশ্চিত জানি না। হয়তো সদ্য স্বৈরাচার সরকারকে হটিয়ে রাজপথ থেকে ঘরে...
কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার রচিত উপন্যাস ‘মোকাম সদরঘাট’ নিয়ে আলোচনা সভা হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর ২০২৫) সন্ধ্যায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গলবুকসের উদ্যোগে রাজধানীর পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়। আরো পড়ুন: তিন গোয়েন্দা সিরিজের স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই আলোচনায় অংশ নিয়ে গবেষক ও প্রাবন্ধিক ফাল্গুনী তানিয়া বলেন, “বইটি আমি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। বড় প্রেক্ষাপটের দীর্ঘ উপন্যাস লেখকের শক্তিমত্তা যেমন প্রকাশ করেছে, তৈরি করেছে নতুন আরো প্রত্যাশা। তার কাছে এমন দীর্ঘ আর শক্তিশালী লেখা পাঠক হিসেবে আমরা আরো চাই। সত্যিকার অর্থে বইয়ের পাঠ এবং দর্শন দুটোই আমাকে আনন্দ দিয়েছে।” আলোচক সোহানুজ্জামান বলেন, “বইটির পরতে পরতে লেগে আছে এমন সব অভিজ্ঞতা যা আমরা সবসময় দেখি। কিন্তু দেখেও যেন দেখি...
‘মানচিত্র’ সমকালীন বাংলাদেশের অন্যতম কথাসাহিত্যিক শাহীন আখতারের বইমেলা ২০২৫–এ প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ। বইটির মলাট ওলটানো মাত্র হাজার হাজার পিঁপড়ে ছুটে বেরোবে পাতার ভেতর থেকে। তারপর, বইয়ের শরীর থেকে নিচে, মেঝের রুখু জমিনে আছড়ে পড়ে তারা দিগ্ভ্রান্তের মতো ছুটতে থাকবে এদিক–সেদিক, মাথাগোঁজার ঠাঁইয়ের তালাশে। যদি আপনি নরম হৃদয়ের মানুষ হন, বইটি হয়তো ছুড়ে ফেলবেন হাত থেকে বা নিজে থেকেই বইটা হাত ফসকে পড়ে যাবে। আপনি আবিষ্কার করবেন আপনার দুহাত রক্তে মাখা। সে রক্ত নিজের না অন্য কারও, আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন না।বাম ফ্লাপে লেখা বই পরিচিতি পড়লে মনে হবে, এই গল্পগ্রন্থ লেখকের ভ্রমণ অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করেই আদ্যোপান্ত লেখা। তবে কেন এর পাঠ প্রতিক্রিয়ার এ রকম রক্তিম শুরুয়াদ? কারণ, শাহীন আখতারের গল্পগুলোর মূল স্রোতের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য চোরাস্রোত, যারা গল্পের গতিপথ...
সাহিত্যে নোবেল পেলেন হাঙ্গেরীর কল্পলেখক, কথাসাহিত্যিক এবং চিত্রনাট্যকার লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। গভীর দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি, মনোমুগ্ধকর বর্ণনাশৈলী এবং দূরদর্শী সাহিত্যকর্মের জন্য তাঁকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। বলা হয়ে থাকে, তাঁর সাহিত্যকর্ম আবেগপ্রবণ, বিভ্রান্তিকর এবং বিয়োগান্তক। তবে অধিকাংশ পন্ডিত এবং সমালোচক একমত যে, ‘তীব্র’ বিশেষণের মাধ্যমে তাঁর উপন্যাস সবচেয়ে ভালোভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। তাঁর অবসেশন গোপন জিনিসের প্রতি, যেগুলো মানুষের জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিক। ডিসটোপিয়ান এবং বিষণ্ন বিষয়বস্তুর জন্য প্রায়শই তাঁর রচনাদি উত্তর-আধুনিক সাহিত্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এখানে লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের দুটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হলো। প্রথমটি নিয়েছেন ‘গুয়ের্নিকা’ ম্যাগাজিনের সম্পাদকীয় বিভাগের অন্তর্বর্তী কর্মকর্তা সেবাস্টিয়ান কাস্তিলো। এটি প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল। এখানে লেখক কাল্পনিক সাহিত্যে ভয়-ভীতি, দীর্ঘ বাক্য ব্যবহারের কারণ ও নান্দনিকতা এবং বিখ্যাত মার্কিন কবি ও লেখক অ্যালেন গিন্সবার্গের...
মার্টিন হাইডেগারের মতে, ভাষা কেবল মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যম নয়, একই সঙ্গে তা জগতে মানুষের অস্তিত্বের বাস্তবতা নির্মাণে জরুরি। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন ওঠে, মানুষের অস্তিত্ব ব্যাপারটি কেমন তাহলে, যদি তা ভাষার ভেতর দিয়েই নির্মিত হয়? মানুষের অস্তিত্ব মূলত দুই রকম—ভাবগত আর জৈবিক ও পরিপ্রেক্ষিতগত বিবেচনায় বস্তুগত। বস্তুগতভাবে মানুষের জীবন বাঁচিয়ে রাখার বিষয়টিই সর্বদা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে; কিন্তু ভাবজগতও বস্তুজগতের সঙ্গী; অর্থাৎ ভাবজগতের ধারণাসমূহও মানবকেন্দ্রিক দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতগত দিক থেকে উৎসারিত হয়। তা ছাড়া এসব ধারণা এককভাবে ভাবগত; অর্থাৎ বিমূর্ত হলেও বিচিত্র ধরনের নৈর্ব্যক্তিক বস্তুদৃঢ়তার ওপর ভিত্তি করেই তার নির্মাণ হয়। তাই ভাষা ও ভাবজগৎগত ভাব সঞ্চারণের জন্য পরিপ্রেক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।এতগুলো কথা বলা হলো লালন শাহর গানের ভাষা ও ভাষায় বিধৃত ভাবজগতের পরিপ্রেক্ষিত অনুসন্ধানের জন্য। তাঁর গানের ভাষা নির্মাণের আলোচনায়...
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সুপরিচিত অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, যাঁর অভিনয় রুপালি পর্দায় দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। গেল অতিমারিকালে কোভিড প্রায় অকালেই কেড়ে নেয় তাঁর অমূল্য প্রাণ। তাঁর জীবনীভিত্তিক উপন্যাস কবরী রচনায় কেন প্রবৃত্ত হলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী?আলোচ্য উপন্যাসটি সংলাপবহুল। সাংবাদিক সজীব কবরীর সাক্ষাৎকার নেয় প্রায় পুরো বইতেই। এতে কথোপকথন ও ফ্লাশব্যাকের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় ভিন্নতর আঙ্গিক। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু হরর নভেল সাক্ষাৎকারভিত্তিক। কিন্তু বাংলায়? নজির সুলভ নয়। লেখকের ভাষাও কি সহজ-সরল? সংলাপ কঠিন নয় স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু ঔপন্যাসিকের ন্যারেশন কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাব্যিক এবং এর কিছু চিরন্তন মানবিক সত্য উচ্চারণ চিত্তাকর্ষক। আর পাঠকের মনের কথা বলার ক্ষমতা? এখানে সজীবই কৌতূহলী পাঠকের প্রতিনিধি। তাই কবরীর কোনো কোনো উত্তরে সংবেদনশীল পাঠকের চোখ ভিজে আসে। কবরী শুরুতে মধ্যবিত্ত ছিলেন না। নিম্নমধ্যবিত্ত বাবা কৃষ্ণদাস পাল...
রিজ উইদারস্পুনের বাবা ছিলেন ‘জেমস বন্ড’–এর বড় ভক্ত। বড় হতে হতে তাই রিজ ০০৭-এর অনেক সিনেমাই দেখা ফেলেছেন। তবে ছোটবেলায় ‘জেমস বন্ড’ সিনেমা দেখতে দেখতেই মনে প্রশ্ন জেগেছিল, ‘সব ছবিতেই নায়িকারা বিকিনি পরে কেন? পোশাকের সঙ্গে অপরাধ সমাধানের কী সম্পর্ক? বিকিনি দিয়ে কি আর অপরাধের সমাধান হয়?’রিজ অভিনেত্রী হিসেবে আগেই খ্যাতি পেয়েছেন, জিতেছেন অস্কারও। এবার তিনি আসছেন লেখক পরিচয়ে। নতুন উপন্যাস প্রকাশ উপলক্ষে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে সবিস্তার কথা বলেছেন রিজ।আমি একটি মিলিটারি চিকিৎসক পরিবারে জন্মেছি, বড় হয়েছি মিলিটারি বেশে; সেখানে চিকিৎসা পেশার অনেকেই ছিলেন। তাই এই উপন্যাসে সেই পরিবেশের প্রভাব ভালোভাবেই আছে। তখন যা দেখেছি, সেসবের কিছুটা সচেতনভাবে আবার কিছুটা অবচেতনভাবে আমার লেখাকে প্রভাবিত করেছেরিজ উইদারস্পুনকেন্দ্রীয় চরিত্রে নারী ‘জেমস বন্ড’ সিনেমায় বিকিনিতে নায়িকাদের দেখে ত্যক্ত-বিরক্ত ছিলেন রিজ উইদারস্পুন।...
গত শতকের আশির দশকে যাঁরা কিশোর বা তরুণ ছিলেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় ঘটেছিল একটি সাহিত্য-কলামের মাধ্যমে। আমিও সে রকমই একজন। দৈনিক সংবাদ-এর সাহিত্য সাময়িকীতে ‘অলস দিনের হাওয়া’ শিরোনামের সেই কলাম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতো, আর আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম নতুন কিছু জানার জন্য। প্রতিটি পর্বেই তিনি বিশ্বসাহিত্যের কোনো না কোনো লেখক বা বই বা কোনো সাহিত্যতত্ত্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন। আমরা অবাক বিস্ময়ে ভাবতাম, একজন মানুষ এত জানেন কীভাবে, এত পড়েনই-বা কখন? তাঁর ভাষাটিও ছিল এত মাধুর্যভরা ও স্মার্ট যে পড়তে শুরু করলে আর রেখে দেওয়া যেত না। নন-ফিকশনের ভাষাও যে এত স্বাদু ও মধুর হতে পারে, তাঁর লেখা পড়ার আগে কখনো তা অনুভবই করিনি। তখনো তিনি গল্প লিখতে শুরু করেননি, অথবা লিখলেও আমাদের তা চোখে পড়েনি,...
জেন–জি প্রজন্মের তরুণদের আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু রাজোয়েলিনা পালিয়ে নির্বাসনে যাওয়ার কয়েক দিনের মাথায় মাদাগাস্কারের সামরিক বাহিনীর একজন কর্নেল দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।আফ্রিকার এই দ্বীপরাষ্ট্রের উচ্চ সাংবিধানিক আদালত আজ শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে কর্নেল মাইকেল রান্দ্রিয়ানিরিনাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধতা দেন। এ শপথের মাধ্যমে আন্ড্রু রাজোয়েলিনার পলায়ন, তাঁকে অভিশংসন এবং সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের মতো অস্থির এক সপ্তাহের সমাপ্তি ঘটল।গত কয়েক সপ্তাহে বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি নিয়ে চলা গণবিক্ষোভ সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, আন্দোলনে কমপক্ষে ২২ জন নিহত ও ১০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।আজ শুক্রবার আদালতে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। সেখানে তরুণদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের প্রতিনিধিরা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অবস্থান নেন।বার্তা সংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতসহ বিদেশি...
‘কল্পনা করুন হাঙ্গেরীয় এক ভগ্নদশা ছোট শহরের কথা, যে শহর শুধু দেখতেই পোড়ো পোড়ো নয়, চিন্তাচেতনায়ও যে দীনহীন—মৃত সমাজতান্ত্রিক চেতনা ও মধ্য ইউরোপীয় পুরাণকথার জাড্যের মাঝখানে সে শোয়া কোথাও। জড়তা ও বিশ্বাসহীনতায় মজ্জমান ওই আবছায়া শহরে হঠাৎ এসে হাজির এক সার্কাসের দল। জানি না একে ঠিক সার্কাস বলা যাবে কি না। কারণ, তাদের কাফেলায় বলতে গেলে শুধু আছে মৃত এক বিশাল তিমি আর এক রহস্যময় প্রিন্স, যে প্রিন্সকে আবার কেউ দেখেনি কখনো, কিন্তু তাকে ভয় পায় সবাই।’ এভাবেই শুরু লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মাস্টারপিস ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’ (প্রতিরোধের বিষণ্নতা) উপন্যাসের। কোনো প্লটভিত্তিক শুরু নয় এটা, এর শুরু কেবল এক গুজব দিয়ে। আর যেহেতু গুজব, তাই কোনো কিছু ঘটবার আগেই বাতাস থমথমে, উত্তেজক।এ শহরের মানুষগুলোকে নিয়ে একটু বলি। এর অধিবাসীদের কোনো ঘটনাতেই...
‘সাতানট্যাঙ্গো’ চলচ্চিত্রটির দৈর্ঘ্য সাত ঘণ্টা উনিশ মিনিট—শুধু এইটুকু তথ্যই বিস্ময় জাগানোর জন্য যথেষ্ট। এই দীর্ঘতার মধ্যে আছে সময়ের এক অনন্য দার্শনিক অনুসন্ধান—একটি গ্রামের কথা, যেখানে শব্দের চেয়ে নীরবতা বেশি শক্তিশালী, যেখানে মানুষের গতি ধীর হলেও চিন্তার গতি অবিরাম। বেলা তারের পরিচালনায় তৈরি এই ছবির মূল নির্যাস সুদীর্ঘ বাক্যগঠনের জন্য পরিচিত সদ্য নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখা চিত্রনাট্য।লাসলো ক্রাসনাহোরকাই হাঙ্গেরির এক রহস্যময় সাহিত্যিক। তাঁর অসংখ্য দীর্ঘ বাক্যে গড়া, বিরামহীন প্রবন্ধসদৃশ উপন্যাস ইউরোপীয় সাহিত্যের এক নতুন ভাষা তৈরি করেছে। ১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির গিউলায় জন্ম নেওয়া এই লেখক নিজের সময়কে ভাবেন এক প্রলয়ের অংশ হিসেবে। ‘সাতানট্যাঙ্গো’, ‘দ্য মেলানকলি অব রেজিস্ট্যান্স’, ‘দ্য ওয়ার্ল্ড গোজ অন’, ‘সেইবো দেয়ার বিলো’র মতো বইগুলো তাঁকে আধুনিক ইউরোপীয় সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লেখকে পরিণত করেছে। ২০২৫ সালে নোবেল সাহিত্য...
জাপানের ওকিনাওয়া ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা উন্নত জেনেটিক কৌশল ব্যবহার করে ছত্রাকের বিবর্তনের নতুন তথ্য জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, প্রাচীন ছত্রাক কেবল নিষ্ক্রিয় জীব ছিল না, বরং তারা সক্রিয়ভাবে প্রাচীনতম স্থলজ বাস্তুতন্ত্রের গঠনে প্রভাব ফেলেছিল। উদ্ভিদ নয়, ছত্রাকই ছিল পৃথিবীর প্রথম স্থল উপনিবেশ স্থাপনকারী।অনেক বছর ধরেই উদ্ভিদকে পৃথিবীর স্থলভাগের প্রথম উপনিবেশ স্থাপনকারী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তবে নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, ভূপৃষ্ঠে উদ্ভিদের শিকড় হওয়ার বহু আগে থেকেই ছত্রাক স্থলজ বাস্তুতন্ত্র শাসন করত। এর ফলে ছত্রাক প্রাথমিক পরিবেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। প্রাচীন পৃথিবীর মূল বাস্তুতন্ত্রের প্রাকৃতিক প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে ছত্রাক প্রাণ বিকাশের ভিত্তি তৈরি করেছিল।গবেষণার তথ্যমতে, বন ও স্থলজ উদ্ভিদের উত্থান কোনো আকস্মিক ঘটনা ছিল না। ছত্রাক যুগ যুগ ধরে বাস্তুতন্ত্রের বিকাশ ঘটায়। এরই ধারাবাহিকতায়...
নব্বই দশকের গল্প, এক ঝাঁক তারকাশিল্পীর অভিনয় আর নির্মাণ মিলিয়ে চলতি বছরের পবিত্র ঈদুল আজহায় চমকে দিয়েছিল তানিম নূরের সিনেমা ‘উৎসব’। কিছুদিন আগেই নির্মাতা জানিয়েছিলেন, তাঁর পরের সিনেমা হবে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে। এর পর থেকেই কৌতূহল ছিল কোন উপন্যাস অবলম্বনে হচ্ছে নতুন সিনেমা? কারাই–বা আছেন এতে?বনলতার যাত্রী গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় ৫২ সেকেন্ডের এক মোশন ভিডিওর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় সিনেমার নাম। তানিম নূরের পরের সিনেমা ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ তৈরি হবে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘কিছুক্ষণ’ অবলম্বনে। প্রকাশিত ভিডিওর পুরোটা সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে ছিল অর্থহীনের গান ‘চাইতেই পারো’। ‘উৎসব’–এ ছিল আর্টসেলের গান। এ সিনেমাতেও থাকছে নব্বইয়ের শেষে যাত্রা শুরু করা আরেকটি ব্যান্ড। আবার নস্টালজিয়াচিত্রা ঢাকা ইউনিভার্সিটির ফিজিকসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী; অসুস্থ মামাকে দেখতে ট্রেনে যাবে দিনাজপুর। কিন্তু ট্রেনে বিরক্তিকর কোনো যাত্রীর সঙ্গে যেতেও...
শৈশবে স্কুলই ছিল আমাদের দুনিয়ার কেন্দ্র। পরীক্ষার নম্বর, হোমওয়ার্ক কিংবা ক্লাসের ছোটখাটো ঝামেলাও তখন মনে হতো ভয়ংকর গুরুত্বপূর্ণ। চেনা বেঞ্চ, পরিচিত ঘণ্টার শব্দ কিংবা খেলাধুলার আড্ডার মধ্যেই হঠাৎ হঠাৎ উঁকি দিত নতুন সব নাটকীয়তা। আদনান মুকিতের লেখা প্রথম কিশোর উপন্যাস—দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চার অব ফার্মের মুরগি সেই অভিজ্ঞতাগুলোই ফিরিয়ে আনে, মনে করিয়ে দেয় কিশোর বয়সের প্রতিটি দিন আসলে কতটা ঘটনাবহুল হয়ে উঠতে পারে।এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইভান—দশম শ্রেণির ছাত্র। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, খেলাধুলা, গান শোনা কিংবা অবসরে বই পড়া—এভাবেই কাটে তার দিন। আবার পথের কুকুর–বিড়ালের প্রতি মমতা কিংবা বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানোও তার নিত্য অভ্যাস। বাবা থাকেন দেশের বাইরে, মা আর নেই, তাই ইভান থাকে ফুফা–ফুফুর কাছে। এসব শূন্যতা সত্ত্বেও সে গড়ে তোলে নিজের মতো এক জগৎ। কিন্তু একদিন সকালে স্কুলে ঘটে...
বাংলা বা বাংলাদেশের উপন্যাসের শক্তি, আধুনিকতা, গঠনকাঠামো বিবেচনায় নিয়ে একে দুর্বল সাহিত্য হিসেবে চিহ্নিত করার নেপথ্যে যেসব বয়ান তৈরি করা হয়, তা সবটা ঠিক না হলেও এই বক্তব্য পুরোপুরি খণ্ডন করা যায় না। মুসলিম কথাকারদের বেলায় এটি আরও বেশি যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন অনেকে। বঙ্কিম-রবীন্দ্র পেরিয়ে কল্লোল যুগের পরেও বিভাগপূর্ব বা পরের বাঙালি মুসলিম ঔপন্যাসিকেরা উপন্যাসের শক্ত জমিন খুঁজে পাননি। এ বিষয়ে সৈয়দ শামসুল হক এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ছাড়া কারও নাম তিনি বলতে পারেন না।বলা যেতে পারে বিভাগপূর্ব ও অব্যবহিত পরে বাংলাদেশের প্রধান শক্তিমান ও আধুনিক কথাকার সৈয়দ ওয়ালউল্লাহ্। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ বাংলায় মাত্র তিনটি উপন্যাস লিখেছিলেন— ‘লালসালু’ (১৯৪৮), ‘চাঁদের অমাবস্যা’ (১৯৬৪) ও ‘কাঁদো নদী কাঁদো’ (১৯৬৮)। (পরে আরও দুটি লিখেছেন ইংরেজিতে—‘হাউ টু কুক বিনস’ ও ‘দ্য আগলি...
বাংলাদেশে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ কতটা প্রাসঙ্গিক আছেন আজও? মানে একাডেমিয়ার চোখে নয়, পাঠকের চোখে, তার সমসাময়িক যেকোনো লেখকের তুলনায়। ‘লালসালু’, ‘কাঁদো নদী কাঁদো’, ‘চাঁদের আমাবস্যা’ বা ‘বহিপীর’—এসব বই যদি এখনো সাহিত্য পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখে, তা কেন রেখেছে?ওয়ালীউল্লাহর রচনা নিয়ে অনেক রকমের আলাপ চালু আছে বাজারে। গবেষকেরা করেন সেই আলাপ। পাঠচক্রগুলোয় হয় কথাবার্তা। কয়েক প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা তাঁর লেখা পড়ে চলেছেন পরীক্ষা পাসের জন্য। এসব সত্ত্বেও ওয়ালীউল্লাহ পাঠ্যপুস্তকের বর্ণহীন জগতে লুপ্ত হননি বোধ করি। এদিক থেকে একাডেমিয়ায় জায়গা পাওয়া আর যেকোনো লেখকের তুলনায় তিনি ভাগ্যবান। এই প্রাসঙ্গিকতার অনেক কারণ আছে। যেমন প্রথম কারণটি একই সঙ্গে ক্লিশে ও তার অ্যান্টিডোট দুইই।এ সময়ের গড় পাঠক ও তরুণদের মধ্যে একটা ধারণা আছে যে একবিংশ শতাব্দীতে লেখকের সমাজসচেতনা, সমাজের প্রতি দায়, ভাষা ও টেকনিকের নিরীক্ষা এসবের...
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন। তাঁর ফিকশনের বিষয়ে বলা হয়, মানুষের জীবনে কঠোরভাবে রক্ষিত থাকে সেসব গোপনীয়তা সেসব তিনি তুলে ধরেন তাঁর লেখায়। আবার এ–ও বলা হয়, লাসলো ক্রাসনাহোরকাই বিষয় হিসেবে বেছে নেন সেই কালো নদীর মতো বহমান অন্ধকারকে যা ঘটবেই কিন্তু প্রহসনের মতো মানুষের সেটা দেখা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু এই অন্ধকারের ভেতর আলোর ফুল ফোটানোও যেন তাঁরই কাজ।একটা উদাহরণ দিলে হয়তো বিষয়টা পরিষ্কার হবে। যেমন লাসলোর ফিকশনের এক চরিত্রের বিখ্যাত উক্তি: ‘বেঁচে থাকা সুন্দর নয়। মরে যাওয়াও সুন্দর নয়। এমনকি জীবনও সুন্দর নয়। শুধু মানুষই সুন্দর’। ডাস্টিন ইলিংওয়ার্থ প্যারিস রিভিউতে তাঁর ব্যাপারে লিখেছেন, লাসলো ক্রাসনাহোরকাইর অবসেশন গোপন জিনিসের প্রতি, যেগুলো মানুষের জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিক।লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের চারটি উপন্যাস ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। এই চারটিকেই তাঁর প্রধান...
সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেলেন হাঙ্গেরির লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান এ পুরস্কারের জন্য তাঁকে মনোনীত করার কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি বলেছে, তাঁর সৃষ্টিকর্ম আকর্ষণীয় ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, যা মহাপ্রলয়ের ভয়ের মধ্যেও শিল্পের শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে। গতকাল বৃহস্পতিবার ৭১ বছর বয়সী ক্রাসনাহোরকাইকে ২০২৫ সালের সাহিত্যে নোবেলজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নোবেল কমিটি বিবৃতিতে বলেছে, লাসলো ক্রাসনাহোরকাই মধ্য ইউরোপীয় পরম্পরার একজন মহান মহাকাব্যিক লেখক, যাঁর ধারায় বিস্তার রয়েছে কাফকা থেকে থমাস বার্নহার্ড পর্যন্ত এবং যিনি অসংগতি ও অতিমাত্রায় অতিরঞ্জনের জন্য পরিচিত। তবে তাঁর কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত। তিনি প্রাচ্যকেও খুঁজে বেড়ান এবং আরও মননশীল, সূক্ষ্মভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুর গ্রহণ করেন।ক্রাসনাহোরকাই হাঙ্গেরির নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত দ্বিতীয় সাহিত্যিক। এর আগে ২০০২ সালে দেশটির ইমরে কারতেস মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার পান।ক্রাসনাহোরকাই পাঁচটি উপন্যাস লিখেছেন। এ ছাড়া...
প্রযুক্তিগত উন্নতির প্রভাবে দ্রুত বদলে যাচ্ছে আমাদের পাঠের অভ্যাস। রিলস ও শর্ট ভিডিওর যুগে মানুষের মনোযোগের সময়সীমা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। সম্প্রতি এর প্রভাব দৃশ্যমান হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সাহিত্যপাঠে। বড় উপন্যাস, মহাকাব্য ও ক্ল্যাসিক সাহিত্যের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ ক্রমেই কমছে।যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সাহিত্য বিভাগগুলোতে নতুন করে ‘লং রিডিং স্কিলস’ বা ‘দীর্ঘ পাঠের দক্ষতা’ নামে আলাদা কর্মশালা চালু হয়েছে। এসব কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে কীভাবে বড় উপন্যাস বা ক্ল্যাসিক সাহিত্যপাঠে ধৈর্য ধরে থাকা যায়, কীভাবে চরিত্র, সময় ও ভাষার স্তরগুলো বোঝা যায়। অক্সফোর্ড, সাসেক্স ও ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা বলছেন, অনলাইন যুগে তরুণদের পড়ার ধরন বদলে গেছে। শিক্ষার্থীরা তাঁদের জানিয়েছেন, তাঁরা প্রতিদিন অসংখ্য ছোট লেখা, টুইট, মিম বা পোস্ট পড়েন। কিন্তু দীর্ঘ কোনো লেখা পড়তে গিয়ে...
আমি এখন যে গ্রামে এসেছি, সেই গ্রামে ১৮২৮ সালে লেখক লিও তলস্তয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাশিয়ার ইয়াস্নায়া পলিয়ানা নাম গ্রামটির। এটি আসলে তাঁদের পারিবারিক জমিদারির একটি অংশ। এখানে তিনি জীবনের অনেকখানি সময় কাটিয়েছেন। এখানেই লিখেছেন অমর উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’, ‘আনা কারেনিনা’ এবং অসংখ্য গল্প।তলস্তয়কে আইন পড়তে কাজান শহরে পাঠানো হয়েছিল কিন্তু পড়তে তাঁর ভালো লাগেনি। জমিদারি ছিল, তাই রোজগারের চিন্তাও করতে হয়নি। মাঝখানে সন্তানদের পড়ালেখার জন্য আট বছর মস্কোতে একটি বাড়ি কিনে বসবাস করেছিলেন।লিও তলস্তয় শেষ জীবনে আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকেছিলেন এবং খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। একসময় গৃহত্যাগ করেছিলেন। ১৯১০ সালে ৮২ বছর বয়সে আস্তাপোভো রেলস্টেশনে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে একাকী, আত্মীয়, বন্ধু থেকে দূরে, নীরবে তিনি দেহত্যাগ করেন। এরপর তাঁকে ইয়াস্নায়া পলিয়ানায় এনে সমাহিত করা হয়।ইয়াস্নায়া পলিয়ানা গ্রামে আমি যখন পৌঁছালাম,...
প্রতিবছর সাহিত্যের জগতে যে পুরস্কারের দিকে সবার নজর থাকে, তা হলো—‘নোবেল প্রাইজ ইন লিটারেচার’। ১৯০১ সালে শুরু হওয়া এ সম্মাননা দেওয়া হয় সেসব লেখক, কবি বা নাট্যকারকে, যাঁরা ‘মানবতার কল্যাণে অসাধারণ সাহিত্যিক অবদান রেখেছেন’। এ ক্ষেত্রে শুধু জীবিত লেখকেরাই বিবেচনায় আসেন; মৃত ব্যক্তিকে এ পুরস্কার দেওয়া হয় না। সাধারণত যাঁরা ভাষার সীমা অতিক্রম করে মানব অভিজ্ঞতাকে নতুন আলোয় হাজির করেন, ইতিহাস ও সমাজের কঠিন প্রশ্নগুলোকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখতে শেখান, তাঁরাই আসেন আলোচনায়।২০১৫: সলতিয়েনা আলেক্সিয়েভিচবেলারুশি লেখক ও সাংবাদিক সলতিয়েনা আলেক্সিয়েভিচ মৌখিক ইতিহাসকে সাহিত্যে রূপ দেওয়ার জন্য ২০১৫ সালে নোবেল পান। যুদ্ধ, চেরনোবিল বিপর্যয় কিংবা সোভিয়েত জীবনের পতন—তিনি সংগ্রহ করেছেন সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর, সাক্ষাৎকার আর স্মৃতি। ভয়েসেস ফ্রম চেরনোবিল, দ্য আনওম্যানলি ফেস অব ওয়ার কিংবা সেকেন্ডহ্যান্ড টাইম দেখিয়েছে, ইতিহাস কেবল রাজনীতিকদের দলিল...
দুই দশকের বেশি সময় আগে, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের আগে, আমিসহ যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত একদল আন্তর্জাতিক আইনবিদ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে একটি চিঠি লিখেছিলাম। সেখানে ব্যাখ্যা করেছিলাম যে যুদ্ধটি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বৈধ হবে না।গাজার ওপর একটি আন্তর্জাতিক ট্রাস্টি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়ে আবারও আরেকটি বৈশ্বিক অভিযানের জন্য বেআইনি বিষয়ে সতর্কবার্তা প্রয়োজন। এতে একই ব্যক্তিকে আবারও দেখা যাচ্ছে; এবার প্রস্তাবিত পরিকল্পনার সম্ভাব্য নেতা হিসেবে—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাশে।গাজার ওপর এই ট্রাস্টি শাসনব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করবে ইসরায়েলের অর্ধশতাব্দীর বেশি সময়ের দখলদারত্বকে, যা তার আচরণে আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নিয়মের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্ণবাদী বৈষম্য, নির্যাতন, যুদ্ধাপরাধ আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা।আন্তর্জাতিক আইনের এই নিয়মগুলোর কেন্দ্রে রয়েছে ‘ট্রাস্টি–শিপ’। ‘ট্রাস্টি’ কর্তৃক আধিপত্য হবে নিঃস্বার্থভাবে, এর ‘বেনিফিশিয়ারি’ হবে গাজার ফিলিস্তিনি জনগণ। এখানে...
সচরাচর যা দেখা যায়—লেখক তাঁর শৈশব, কৈশোর ও যৌবন পেরিয়ে নানা উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতায় পরিণত হচ্ছেন, গ্রহণ করে নিতে পারছেন নানা কিছু, বদলে যাচ্ছে তাঁর লেখা, কিন্তু পাঠক সেই যে তাঁর প্রথম দিককার লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন, তা থেকে আর বের হতে পারছেন না। অর্থাৎ লেখকের মনের বয়স বাড়ছে, পাঠকের বাড়ছে না। ফলে লেখকের নতুন ধরনের লেখা যা তিনি নতুন যুগের বা চিরকালের দাবি মাথায় রেখে—পাঠক হারানোর ঝুঁকি সত্ত্বেও—লিখে চলেন, সেগুলো প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা ও কৌতূহলের মুখোমুখি হবে তা স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে সাহিত্য-ইতিহাস যা বলে—পাঠকের চেয়ে অগ্রসর লেখকেরা শেষ পর্যন্ত সফল হন। যেসব লেখার কারণে সমকালের পাঠকেরা একসময় বিব্রত হয়েছিলেন, সেগুলোর জন্যই পরবর্তীকালে লেখক যে কালজয়ী হয়েছেন, সেসব দৃষ্টান্তও ইতিহাসে কম নয়। তাই পাঠকের সমকালীন ক্রিয়ায় লেখককে ক্ষুব্ধ হলে চলে না,...
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রখ্যাত চিকিৎসক অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ৯৪ বছর বয়সে ২০২৪ সালের এই দিনে নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনুরোধে বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে বদরুদ্দোজা চৌধুরী তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া—দুই সরকারের সময়ই মন্ত্রী ছিলেন। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপালন করেছিলেন। বিটিভিতে তাঁর ‘আপনার ডাক্তার’ অনুষ্ঠান খুবই জনপ্রিয় ছিল। মুন্সিগঞ্জ-১ আসন থেকে বদরুদ্দোজা চৌধুরী পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুবার জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং একবার বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি খালেদা জিয়ার সরকারে...
ব্রিটিশ লেখক লি চাইল্ড। যার প্রকৃত নাম জেমস ডোভার গ্রান্ট। তার উপন্যাস ‘জ্যাক রিচার’ বিশ্বের মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে ওয়েব সিরিজও তৈরি হয়েছে। তিনি মনে করেন লেখক হওয়ার একমাত্র যোগ্যতা হলো, ভালো পাঠক হওয়া। যারা লেখক হতে চান, তাদের লি চাইল্ড ৬টি পরামর্শ দিয়েছেন। প্রতিদিনের শব্দসংখ্যার একটা লক্ষ্য ঠিক করুন লি চাইল্ড প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ শব্দ লেখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার জন্য এটাই আরামপ্রদ। অনেকের তুলনায় এটা খুব কম। আমি কখনও কখনও খুব চেষ্টা করে দুই হাজার শব্দ লিখতে পারি।যদি সময় সীমার কাছাকাছি গিয়ে মনে হয়, অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেছি তাহলে একটু তাড়াহুড়ার মধ্যে থাকি।’’ আরো পড়ুন: অমর একুশে বইমেলা শুরু ১৭ ডিসেম্বর অমর একুশে বইমেলা...
ফ্রানৎস ফানোঁ একদা লিখেছিলেন, উপনিবেশ হলো এমন একটা জায়গা, যেখানে মানুষগুলো যেকোনো জায়গায় যেকোনোভাবে জন্ম নেয়। তারা যেকোনো জায়গাতেই যেকোনোভাবে মারাও যায়। উপনিবেশ এমন একটা জায়গা, যেখানে কোনো স্থান নেই। মানুষ একে অপরের ওপর স্তূপের মতো থাকে, বাস করে। ঘরগুলো একে অপরের সঙ্গে একদম এঁটে থাকে। ফ্রানৎস ফানোঁ যেভাবে উপনিবেশের এই চিত্র এঁকেছেন, বাস্তবে ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিনের মানুষের জীবন এর থেকেও করুণ, বিভীষিকাময়। এখানে প্রতিদিন মানুষ লড়াই করে বেঁচে থাকে। ফিলিস্তিনের শিশুদের জীবন আরও করুণ, বিবর্ণ আর পদে পদে বিপৎসংকুল। ১৯৬৭ সাল থেকেই যখন দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনে তাদের দখলদারি জারি রাখতে মানুষ হত্যা আর নিপীড়ন–নির্যাতনের মাত্রা বাড়াতে থাকে, তখন থেকেই শিশুদের জীবনে নেমে আসে দুর্দশা। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী শুধু ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় প্রাণ হারিয়েছে...
কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা একটি অদ্ভুত রহস্যের সমাধান খুঁজেছেন। উটপাখি, এমু, ক্যাসুয়ারি, কিউই ও রিয়ার মতো উড়তে অক্ষম পাখিরা ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশে অবস্থান করছে। এই পাখিরা প্যালিওগন্যাথ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এদের বেশির ভাগই উড়তে পারে না। আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আমেরিকাজুড়ে এসব পাখির বিস্তার নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। বেশ বিভ্রান্তি তৈরি করছে এসব পাখি। এদের মধ্যে কেবল টিনামু পাখিকে ব্যতিক্রম বলা হয়। এটি মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার একটি লাজুক পাখি। সাধারণত শিকারিদের কাছ থেকে পালানোর জন্য অল্প সময়ের জন্য উড়তে পারে। এসব পাখি সারা বিশ্বে কীভাবে ছড়িয়ে পড়ল, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ বিভ্রান্ত বলা যায়।গবেষকেরা একসময় মনে করতেন, প্রায় ১৬ কোটি বছর আগে গন্ডোয়ানা মহাদেশ ভেঙে যাওয়ার সময় পাখিদের পূর্বপুরুষেরা বিভক্ত হয়ে পড়ে। সেই ভাঙনের ফলে আজকের দক্ষিণ গোলার্ধের বিভিন্ন...
ব্রিটিশ সিক্রেট এজেন্ট জেমস বন্ডের স্রষ্টা ইয়ান ফ্লেমিংয়ের (১৯০৮-৬৪) বহুদিন থেকেই একটা ডিটেকটিভ উপন্যাস লেখার শখ। সময়, সুযোগ বা উদ্যমের অভাবে যা এত দিন হয়ে ওঠেনি, তাই তিনি করতে পারলেন ১৯৫২ সালে। কিছুটা বাধ্য হয়েই বলা যায়। প্রেমিকা এয়ান কার্টেরিস তখন গর্ভবতী। এরই মধ্যে চলছে তাঁদের বিয়ের আয়োজন। এত শোরগোল ভালো লাগছিল না আর। তিক্তবিরক্ত হয়ে সমস্ত কিছু থেকে দূরে গিয়ে লিখতে বসে গেলেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত সেই ডিটেকটিভ উপন্যাস। প্রথম দিনেই লিখে ফেললেন দুই হাজার শব্দ। সম্পূর্ণ পাণ্ডুলিপি তৈরি হয়ে গেল এক মাসে। নাম দিলেন ‘ক্যাসিনো রয়্যাল’।জেমস বন্ডের স্রষ্টা ইয়ান ফ্লেমিং (১৯০৮-৬৪)
সাজ্জাদ হায়দার কথাসাহিত্যিক হিসেবে সুপরিচিত নন। তাঁর লেখা অলৌকিকপুরের দুই রূপসী একটি সাহিত্য পত্রিকায় ছাপা হলেও আলোচনার অভাবে বহুল পঠিত হয়নি। বই আকারে বের হওয়ার পরও এটি নানা কারণে অনাদৃত ছিল। এখনো মনে হয় তেমনই আছে। অভিনব উপন্যাস লিখেছেন সাজ্জাদ। অ্যালিগরিক্যাল, রূপকধর্মী কাহিনিতে মিশেছে পরাবাস্তববাদ আর ম্যাজিক রিয়েলিজম।সাজ্জাদ হায়দারের এই বই পড়তে গিয়ে রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়। কয়েকটি প্রধান চরিত্র, কিন্তু বিষয়ে রয়েছে মিথের গাম্ভীর্য আর ভয়ানকের পদধ্বনি। ক্রমে শুকিয়ে যাওয়া নদী আর স্থির অনড় বটগাছ, দুই বৃদ্ধা ভিক্ষুক এবং নদীর তীরবর্তী গ্রাম—এসব নিয়েই কাহিনির শুরু। নদীতীরে দাঁড়িয়ে থাকা বটগাছে থাকে এক অদৃশ্য সিদ্ধপুরুষ। একদিন সেই পুরুষ স্বরূপে দেখা দেবে, গ্রামবাসীকে বর দেবে আর সেই বরে গ্রামের তিন শ পরিবারের ভাগ্য ফিরবে। এই বিশ্বাসে শত অভাবেও গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে যায় না।...
চিমামান্দা এনগোজি আদিচি একজন নাইজেরীয় কবি ও আখ্যান লেখক। আদিচির কবিতা, গল্প ও উপন্যাসগুলোতে সব সময় একটা নারীবাদী দৃষ্টিকোণ প্রয়োগ করতে দেখা যায়। বিশেষ করে আফ্রিকার সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য, পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণা, নারীর ওপর বলপ্রয়োগ ও নিপীড়ন এবং নারী-স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুক্তি ও শক্তি প্রয়োগের বিষয়গুলো। ছোটবেলা থেকে আদিচি দেখেও এসেছেন ‘নারীবাদী’ শব্দটি এবং ‘নারীবাদ’ সম্পর্কে আফ্রিকার ধারণাগুলো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ। তাই আদিচি স্বভাবগতভাবে নারীবাদ-সংক্রান্ত নিজের বক্তৃতায় ও রচনায় এসব বিষয়কে নারীবাদের অনুষঙ্গ করে গল্পাকারে আফ্রিকার বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় আদিচির নারীবাদবিষয়ক প্রথম বই ‘উই শুড অল বি ফ্যামিনিস্টস’ এবং দ্বিতীয় বই ‘ডিয়ার ইজাওয়েলে: আ ফ্যামিনিস্ট ম্যানিফেস্টো ইন ফিফটিন সাজেশনস’ প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে। বলতে গেলে নাইজেরিয়ার বাস্তবতা, ঐতিহ্য ও ইগবো সংস্কৃতির আলোকে আদিচির দুই রচনায়ই নারীবাদ ও...
আমার অতি প্রিয় লেখক ইমদাদুল হক মিলন। আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ইমদাদুল হক মিলন; বন্ধুর মতো বড় ভাই। বড় ভাইয়ের মতো বন্ধু তিনি। আশ্চর্য ভালো মন ও মধুরতায় তিনি আচ্ছন্ন থাকেন। সারাক্ষণ লেখার মগ্নতায় বুঁদ থাকেন। মুখে অমিলন হাসি। খুব রাগ করলেও তিনি উত্তেজিত হন না। হাসির আড়ালে এক ধরনের কপট গাম্ভীর্য থাকে। মিলন ভাই আমাদের খুব প্রিয় মানুষ। মিলন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলেই আমরা কল্লোলিত ও আনন্দিত হয়ে উঠি। মিলন ভাইয়ের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া আমাদের জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। হাসি আনন্দ পানাহার আড্ডা- সব মিলিয়ে মিলন ভাই মানে শুধুই মিলন ভাই। মিলন ভাই জিন্সের প্যান্ট ও এক রঙের পাঞ্জাবি পরতে খুব স্বচ্ছন্দবোধ করেন। যৌবনে আধুনিক চলতি হাওয়ার ফ্যাশান আইকন ছিলেন। এখন খুব সাধারণ পোশাক পরেন। কিন্তু নিজস্বতা থাকে। জিন্সের...
উপনিবেশের শিকার কোনো জাতি যখন সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াই করে, তখন তাদের সচেতন মন ও সংগঠিত প্রয়াস অবধারিতভাবে সাংস্কৃতিক সত্তার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটায়; অর্থাৎ সংগ্রাম ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড কোনো আলাদা বস্তু হিসেবে বিরাজ করে না। তারা মিলেমিশে, একে অপরের পরিপূরক হয়ে, আগের চেয়ে শাণিত চেহারায় ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে লিপ্ত হয়। হুবহু না হলেও, কাছাকাছি এই কথাগুলোই ১৯৫৯ সালের এক বক্তৃতায় বলেছিলেন সংগ্রামী চিন্তাবিদ ফ্রানৎস ফানোঁ।ফানোঁ যে রকম মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেছেন, সে রকম এক যুদ্ধের উজ্জ্বল যোদ্ধা ছিলেন জহির রায়হান। ১৯৭১ সালের সেই যুদ্ধে অনেকেই আত্মগোপন করেন অথবা সীমান্ত অতিক্রম করে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। জহির রায়হান এর কোনোটিই করেননি। আগরতলা হয়ে কলকাতায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ শুধু নয়, গেরিলা কায়দায় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করে দলিলচিত্র নির্মাণের কাজ করেছেন জহির রায়হান। নিজে...
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়—বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। অথচ এখানকার ছাত্রছাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তা কতটা অনিশ্চিত, তা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল লিজার মৃত্যু। একজন তরুণ শিক্ষার্থীকে হারালাম আমরা। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা এমন হলে থাকি, যেখানে জীবনের কোনো দাম নেই, অসুস্থতার কোনো যথাযথ চিকিৎসা নেই।২ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থীর একটি হলে একজনও যোগ্য ডাক্তার নেই! এই হলো ঢাবির বাস্তবতা। হুমাইরা উপন্যাস জানায়, সেই অসহায় মুহূর্তে দেখা গেল, লাশ এলো হলে, রুমমেট অজ্ঞান হয়ে গেলেন। অথচ হলের ডাক্তার এলেন ২০ মিনিট পর। এ ডাক্তারকে আমরা ‘হাতুড়ে ডাক্তার’ বলতে বাধ্য হচ্ছি—কারণ, চিকিৎসা মানে তাঁর কাছে কেবল নাপা। প্রেশার মাপা ছাড়া তিনি কিছুই করতে পারলেন না। একজন ডাক্তার হয়ে এতটা বিভ্রান্ত আর নিষ্ক্রিয় থাকাটা অবিশ্বাস্য।আরও হতাশার বিষয়, হাউস টিউটররা জানালেন—ডাক্তার শুক্র-শনিবার ডিউটিতেই থাকেন না! তাহলে ওই দুই দিন...
সাধারণভাবে ঈশ্বরের অনুগ্রহ প্রাপ্ত ব্যক্তিকে ‘বরপুত্র’ বলা হয়। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাঁর শ্রেষ্ঠ সন্তানকে বিশেষ অনুগ্রহ করেন। কিন্তু সময় বদলেছে। শুধু ঈশ্বরের অনুগ্রহে বুঝি এখন আর কাজ হয় না। তাই ক্ষমতার কাছাকাছি আসতে চান মানুষ। ক্ষমতার বরপুত্র হতে চান। কিন্তু চাইলে তো হয় না। বরপুত্র হওয়ার জন্য দরকার দালালি-দুর্নীতি-চাটুকারিতা করবার পরম ধৈর্য ও অশেষ সামর্থ্য। সকলের সেই সামর্থ্য থাকে না। তাই শেষ পর্যন্ত দুয়েকজনই হয়ে উঠতে পারেন ক্ষমতার বরপুত্র। মঞ্জু সরকার (১৯৫৩)-এর বরপুত্র (২০১০) উপন্যাসটি বিন্যস্ত হয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতার আনুকূল্যে অঢেল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়ে ওঠা এক সৌভাগ্যের বরপুত্রকে নিয়ে। স্বাধীন বাংলাদেশ জন্মের পরের কয়েক দশকে এরকম বরপুত্রদের দেখা গিয়েছিল। রাষ্ট্র ক্ষমতাকে পুঁজি করে এবং রাষ্ট্র ক্ষমতার ছত্রছায়ায় থেকে কিছু মানুষ ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। এই আখ্যানের কেন্দ্রে রয়েছে এরকমই একজন...
দুটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ৫ হাজার ১৮০ বর্গ কিলোমিটারের ক্ষুদ্র এক দেশ ত্রিনিদাদ ও টোবাগো। আয়তনে ক্ষুদ্র এই দেশেরই এক বড় মাপের লেখক ভি এস নাইপল। ২০০১ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য যিনি নোবেল পুরস্কার পান এবং পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের সাহিত্যপ্রেমী পাঠকের কাছে। বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় অনূদিত হয়েছে ভি এস নাইপলের বেশ কিছু উপন্যাস।ভি এস নাইপলের উপন্যাসগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম বাংলায় অনূদিত হয়েছিল ‘আ হাউজ ফর মি. বিশ্বাস’ ও ‘আ ফ্রি স্টেট’ বই দুটো। এ ছাড়া বাংলায় অনূদিত হয়েছে তাঁর ‘দ্য এনিগমা অব অ্যারাইভাল’, ‘মিগুয়েল স্ট্রিট’, ‘অ্যামোং দ্য বিলিভার্স’ ও ‘হাফ আ লাইফ’। সারা বিশ্বে তিনি যেমন লেখক হিসেবে সুপরিচিত, ঠিক তেমনি এ দেশের পাঠকের কাছেও সমাদৃত ও জনপ্রিয় হয়েছে তাঁর লেখা।২০১৬ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ঢাকা লিটারেরি ফেস্টিভ্যালে প্রধান অতিথি...
এ দেশের শিল্প-সংস্কৃতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম এস এম সুলতান, যিনি তাঁর শিল্পচর্চার পথে দীপ্ত পায়ে হেঁটে পৌঁছেছিলেন এই গ্রামবাংলার প্রকৃতি ও মানুষের কাছে। সুলতানের রংতুলি আজও আমাদের ডেকে নিয়ে যায় এই বাংলার আদিম প্রকৃতির পরম ভালোবাসায়; যে ভালোবাসার ডাকে সাড়া দিয়ে সুলতান একের পর এক দৃশ্য রচনা করেছিলেন। সংগ্রামী ও শক্তিশালী মানুষের সুঠাম দেহে রোপণ করেছিলেন মুক্তির চারা গাছ। তাঁর ছবিতে কিষান-কিষানির তামাটে রোদে পোড়া ঘর্মাক্ত দেহের রেখা যেন তিরের মতো তীব্র গতিতে এগিয়ে চলে টিকে থাকার লড়াইয়ে।এ দেশের গ্রামের মাটিতে প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধের বিশালদেহী, ক্রোধে কম্পিত পেশির মানুষগুলো যূথবদ্ধ হয়ে দৌড়াতে থাকে স্থির লক্ষ্যে। শত্রুর মোকাবিলা করে শক্তসমর্থ পেশিবহুল পুরুষ ও নারী উভয়েই। এই মানুষগুলোই সুলতানের অনুপ্রেরণা। তাঁর ছবিতে নারী চরিত্র কোনো অংশে কম শক্তিশালী নয়। বরং কোথাও কোথাও...
ইসরায়েলের গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মধে৵ও গাজায় একটি ছোট বইয়ের দোকান ‘ইকরা কিতাবাক’ যেন আলো ছড়াচ্ছে। দোকানটি ২০২৪ সালের এপ্রিলের শেষ দিকে চালু হয়। গাজার ঠিক কেন্দ্রস্থলে, নুসাইরাত শরণার্থী ক্যাম্পের ধ্বংসস্তূপের মাঝখানে।আরবি ও ইংরেজি ভাষার উপন্যাস, কবিতা, দর্শন, ধর্মীয় ও আত্মোন্নয়নমূলক বই পরিপাটি করে সাজানো রয়েছে রাস্তার পাশে কাঠের অস্থায়ী তক্তার ওপর। ধূসর ধ্বংসাবশেষের মধ্যে সেগুলোর রঙিন প্রচ্ছদগুলো যেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় আশপাশের নৈরাশ্যের প্রতি।আধা বিধ্বস্ত বা পুরোপুরি ভেঙে পড়া ভবন এবং বিমান হামলার ধ্বংসাবশেষে ঘেরা সেই জায়গায় বই যেন একেবারেই বেমানান; কিন্তু বইগুলোর শিরোনাম সেখানকার আশা, ভালোবাসা, ক্ষতি ও প্রতিরোধের গল্প বলছে। দোকানটি হয়ে উঠেছে ছোট্ট ফিলিস্তিন, যেটি ইসরায়েলের গণহত্যা মুছে ফেলতে চেয়েছে।এটি পরিচালনা করছেন দুই ভাই—সালাহ ও আবদুল্লাহ সারসুর। তাঁরা নিজেদের বাড়ি হারিয়েছেন এবং বর্তমানে নুসাইরাত ক্যাম্পে একটি স্কুলে...
একটা গণ–অভ্যুত্থান কিংবা বিপ্লব যেমন অনেক নতুন ধারণাকে হাজির করে, আবার অনেক পুরোনো ও গেড়ে বসা ধারণা বা চিন্তাকে অপ্রাসঙ্গিক করে দেয়। এসব ধারণা কিংবা চিন্তা বহনকারী ব্যক্তিবর্গও স্বাভাবিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শেষ দিকে জনাকয়েক চলচ্চিত্রশিল্পী–নির্মাতার কিছু বার্তা ভাইরাল হলে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। তাঁরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ‘গরম জল’ ঢেলে দিতে বলেছেন, পুলিশকে আরও কঠোর হতে বলেছেন ইত্যাদি। আশ্চর্যের কিছু নেই। তাঁরা তাঁদের দাসত্বের দায় শোধ করেছেন। স্বাভাবিকভাবে এই নতুন সময়ে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছেন। তাঁদের আদর্শিক মৃত্যু ঘটেছে। তাঁরা আর আপনাদের সামনে দাঁড়াতে পারবেন না।এটা বলছি রাজনৈতিক বিচারের জায়গা থেকে। তাঁরা রাজনৈতিক দায় মেটাতে পারেননি, তাই অপাঙ্ক্তেয় হয়ে গেছেন নতুন সময়ে। কিন্তু নান্দনিক দায় অত সহজে শোধ হওয়ার নয়। রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক ছিলাম বলেই নান্দনিকভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠব, অতটা...
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো মহৎ স্রষ্টার কাছে আমরা এযাবৎ যা আশা করে এসেছি, সেই আশা এখন ভ্রান্তির চোরাবালিতে মাথা কুটে মরছে। একজন শিল্প সৃজনকারী হিসেবে রবীন্দ্রনাথের কাছে আমাদের প্রত্যাশা কি বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল? সেটিই হয়তো ছিল আমাদের ভুল। তিনি বিনোদনের উৎস নন, আমাদের ব্যবহার্যতার ভিত্তি। করোনাকালে পুরোনো রবীন্দ্রবাণী উপলব্ধি করেও নতুনভাবে সংবিৎ ফিরে পেয়েছি:কত অজানারে জানাইলে তুমি কত ঘরে দিলে ঠাঁই—দূরকে করিলে নিকট বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।অতিমারিকালে তো আমরা তা-ই করেছি। আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে গৃহবন্দী থেকেও অনেক অজানাকে জানার সুযোগ হয়েছিল। ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যোগাযোগ করে দূরকে কত নিকটে নিয়ে এসেছি, এর মাধ্যমেই অনেক পর আমাদের আপন হয়েছে, যা হয়তো কোনোদিন সম্ভবই হতো না। যেটি আসলে ‘শারীরিক দূরত্ব’ সেটিকে ‘সামাজিক দূরত্ব’ বলে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এটিও ছিল এক...
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ওসমানি শাসন–পরবর্তী যে আরব রাষ্ট্রগুলো গড়ে তোলা হয়েছিল, তা ছিল পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থরক্ষায়—এ অঞ্চলের নিজস্ব অধিবাসীদের জন্য নয়।১৯১৮ সালে, ওসমানি শাসন–পরবর্তী মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটিশ আধিপত্য স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকে। এটি স্বীকার করে ব্রিটিশ ভারতের একজন কর্মকর্তা লিখেছিলেন, ‘পুরোনো স্লোগান এখন অচল। আমাদের নতুন পথ বেছে নিতে হবে; যা মূল লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক। কাজটি সম্ভব, তবে তার জন্য কিছুটা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। “আরব মুখোশ” হয়তো আমাদের পূর্বপরিকল্পনার চেয়ে আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হতে পারে।’১৯১৯ সালের তথাকথিত প্যারিস শান্তি সম্মেলনের সময় ব্রিটিশরা বুঝে যায়, ব্যাহত প্রতীয়মান ‘স্বনির্ধারণীর’ এ যুগে নিজেদের আধিপত্য আর সরাসরি চাপিয়ে দিতে পারবে না তারা। তাই তাঁদের আধিপত্য আড়াল করতে দরকার ‘স্থানীয় কর্তৃত্ব’ নামের এক মুখোশ।কিছু ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী, যেমন টি ই লরেন্স ভাবতেন, তাঁরা আরবদের...
‘একজন ইউরোপীয়কে হত্যা করার মানে হচ্ছে এক ঢিলে দুই পাখি মারা।’ ফ্রান্স যখন সাত বছর ধরে বর্বরোচিতভাবে আলজেরিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন দমনে লিপ্ত, সেই সময় জাঁ পল সার্ত্রে এই কথাগুলো লিখেছিলেন। শত হলেও, এ ধরনের হত্যা একই সঙ্গে অত্যাচারী আর অত্যাচারিত, দুই পক্ষকেই নিকেশ করে দেয়: একজন মারা যায়, আর অন্যজন মুক্তি অর্জন করে। আলজেরিয়ার উপনিবেশবিরোধীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য ফ্রান্সে প্রবলভাবে ঘৃণিত সার্ত্রে মানুষকে ‘আমাদের মানবতাবাদের স্ট্রিপটিজ নাচ’ দেখতে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। লিখেছিলেন, ‘আপনারা যাঁরা এত উদার, এত মানবিক, যাঁরা সংস্কৃতিপ্রেমকে ভড়ংয়ের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পছন্দ করেন, সেই আপনারা এটা ভুলে যাওয়ার ভান করেন যে আপনাদের উপনিবেশগুলোতে আপনাদের নামেই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়।’ অগ্নিবর্ষী এই কথাগুলো সার্ত্রে লিখেছিলেন একটি বইয়ের ভূমিকায়। তাঁর নিজের বই নয়। ফ্রানৎস ফানোঁ নামের এক ফরাসি ও ওয়েস্ট...
বধ্যভূমি হয়ে ওঠা গাজায় প্রতিদিন শিশুসহ নরহত্যা ‘উৎসব’ চলছে। এখন শুরু হয়েছে অপুষ্টি ও অনাহারে মৃত্যু। সঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। সব দেখে এখন বুঝতে পারি মানুষের বিবেক ও চেতনারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। গাজায় যাঁরা অবিরাম নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছেন, তাঁদের তো এখন জৈবশক্তির জোরেই টিকে থাকতে হচ্ছে। আক্রমণকারী শক্তি ইসরায়েল নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রণাঙ্গন ছাড়বে বলে মনে হয় না। অতীতে দেখা যেত, সংঘাতের বাইরের দর্শক বাকি বিশ্বের নেতাদের চাপে এমন নিষ্ঠুরতা থামাতে হতো। হামাসের ৭ অক্টোবরের (২০২৩) হামলার প্রতিশোধ নেওয়া শুরু করেছিল ইসরায়েল নভেম্বর থেকে। তার মিত্রদের যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত পশ্চিম ইউরোপের পরামর্শে তারা ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ একবার যুদ্ধবিরতি মেনে ছিল; কিন্তু তারপর মার্চ থেকে আবারও পূর্ণোদ্যমে গাজার নিরস্ত্র বেসামরিক জনগণের ওপর যে নৃশংস হামলা শুরু...
ভারতবর্ষ সাময়িকীতে ১৯৩৪-৩৫ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’। প্রকাশের ৯০ বছর পর সেই উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে সিনেমা। আজ পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পাবে সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’; পর্দায় কুসুম, শশী, কুমুদ, যাদব আর সেনদিদি হয়ে আসছেন জয়া আহসান, আবীর চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়।অনেক দিন ধরেই সিনেমাটি নিয়ে কাজ করছিলেন সুমন মুখোপাধ্যায়। এক ফেসবুক পোস্টে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা লিখেছেন, ‘এই ছবি বানানোর প্রথম চেষ্টা করেছিলাম ২০০৮ সালে। কিন্তু নানা কারণে আটকে গেছে। যখন ১৪ বছরেও বানাতে পারিনি, তখন প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু নবারুণ (ভট্টাচার্য)–দার যুদ্ধ পরিস্থিতি উপন্যাসের একটা লাইন আমাকে আবার তাতিয়ে তুলল...“হতাশ আর ভগ্নোদ্যম সেসব মানুষ পুতুলের যান্ত্রিক জীবনের অপরূপ কাহিনি “পুতুলনাচের ইতিকথা”।” মনে হলো এ তো আমাদের সময়ের কথা। আবার উঠেপড়ে...
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ উপন্যাস নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করেছেন কলকাতার পরিচালক সুমন মুখার্জি। এ উপন্যাসের ‘কুসুম’ চরিত্রটি জীবনীশক্তিতে ভরপুর, অদম্য এবং জীবনরহস্যে ভরা। আর এই ‘কুসুম’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ সিনেমার শুটিং অনেক আগে শেষ হয়েছে। নানা জটিলতায় আটকে ছিল। আগামী ১ আগস্ট পর্দায় মুক্তি পাবে সিনেমাটি। নির্মাণের পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও সিনেমার গল্প সমসাময়িক। সেই সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আর এখনকার সময়ের মাঝে খুব বেশি পার্থক্য খুঁজে পান না পরিচালক। ঠিক যেমন পর্দার ‘কুসুম’ আর বাস্তবের জয়া আহসানের মধ্যে তেমন কোনো ফারাক নেই বলে মন্তব্য তার। এ বিষয়ে ‘কুসুম’ চরিত্র নিয়ে জয়া আহসানের কী মত? তার ভাষায়, “বরাবর নারীকেই কামনা-বাসনার বস্তু হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কুসুমেরও কামনা-বাসনা রয়েছে, যা সে লুকোয় না।...
সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত সংঘাত ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দুই দেশ একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। এ যুদ্ধবিরতি তাদের স্থানীয় সময় অনুযায়ী গত সোমবার মধ্যরাতে কার্যকর হয়।যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছে মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, যদি যুদ্ধ না থামে, তাহলে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে তিনি আর কোনো বাণিজ্য চুক্তি করবেন না।সংঘাত শুরু হওয়ার সময় প্রাণহানির সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন থাই ও কম্বোডিয়ান নাগরিক নিহত হয়েছেন। সীমান্ত এলাকার কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন। থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী কিছু প্রদেশে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে। দুই দেশের জাতীয়তাবাদী বক্তব্য আরও বেড়েছে।যুদ্ধবিরতির আগে কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে হামলা চালানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও থাই সেনাবাহিনীর দাবি, তারা তা প্রতিহত...
বর্ষা এক অদ্ভুত নস্টালজিয়া। বর্ষা মানেই বাতাসে একধরনের বিষাদের গন্ধ আর জানালার পাশে বসে এক কাপ গরম চা হাতে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা। এই আবহমান অনুভূতি শুধু বাস্তব জীবনেই নয়, জায়গা করে নিয়েছে সাহিত্য আর সিনেমায়ও। বর্ষা ও চা—দুটিই যেন মানবমনকে সবচেয়ে বেশি স্পর্শ করে এমন দুটি অনুষঙ্গ, যেগুলোর ছোঁয়ায় সৃষ্টি হয় ভালোবাসা, প্রেম কিংবা বেদনাভরা মুহূর্ত।বাংলা সাহিত্যে বর্ষাবাংলা কবিতা, উপন্যাস আর গানে বর্ষা নিয়ে যে এক বিশাল উপাখ্যান রয়েছে, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কলমে বর্ষা বরাবরই ধরা পড়েছে অনন্য এক রূপে। তাঁর গানে, গল্পে, কবিতায় বর্ষা কখনো প্রেম, কখনো বিরহ আবার কখনো নিঃসঙ্গতার নিঃশব্দ ভাষ্য হয়ে উঠেছে। মধ্যবর্তিনী, পোস্টমাস্টার, শাস্তি, সমাপ্তি কিংবা ছুটি—এই ছোটগল্পগুলোর অনেক দৃশ্যেই বর্ষা এসেছে পটভূমি হয়ে, গল্পের আবেগের ভাষা হয়ে।...
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ উপন্যাস নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করেছেন কলকাতার পরিচালক সুমন মুখার্জি। এ উপন্যাসের ‘কুসুম’ চরিত্রটি জীবনীশক্তিতে ভরপুর, অদম্য এবং জীবনরহস্যে ভরা। আর এই ‘কুসুম’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ সিনেমার শুটিং অনেক আগে শেষ হয়েছে। নানা জটিলতায় আটকে ছিল। আগামী ১ আগস্ট পর্দায় মুক্তি পাবে সিনেমাটি। নির্মাণের পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও সিনেমার গল্প সমসাময়িক। সেই সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আর এখনকার সময়ের মাঝে খুব বেশি পার্থক্য খুঁজে পান না পরিচালক। ঠিক যেমন পর্দার ‘কুসুম’ আর বাস্তবের জয়া আহসানের মধ্যে তেমন কোনো ফারাক নেই বলে মন্তব্য তার। আয়োজন করেই ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ সিনেমার ট্রেইলার মুক্তি দিলেন নির্মাতারা। আর এ অনুষ্ঠানে ঔপন্যাসিকের বিখ্যাত সংলাপ আওড়ান পরিচালক—“শরীর! শরীর! তোমার মন নাই কুসুম?” কিন্তু এর ভিন্ন...
জরুরি অবস্থা কীভাবে জারি হবে, এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী এককভাবে নন, মন্ত্রিসভার অনুমোদনে জারি হবে জরুরি অবস্থা। এ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতা। রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনে এই ঐকমত্যে পৌঁছায় দলগুলো। সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়- জরুরি অবস্থা হলে নাগরিকের ‘জীবনের অধিকার’ এবং ‘নির্যাতন থেকে রক্ষা পাওয়ার অধিকার থাকবে’। জরুরি অবস্থা ঘোষণা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে না। জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, ১৪১ এর ক এর ১ ধারা মতে রাষ্ট্রপতির কাছে যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে, যা যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের দ্বারা বাংলাদেশ বা যেকোনো...
জরুরি অবস্থা কীভাবে জারি হবে, এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী এককভাবে নন, মন্ত্রিসভার অনুমোদনে জারি হবে জরুরি অবস্থা। এ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতা। রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনে এই ঐকমত্যে পৌঁছায় দলগুলো। সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়- জরুরি অবস্থা হলে নাগরিকের ‘জীবনের অধিকার’ এবং ‘নির্যাতন থেকে রক্ষা পাওয়ার অধিকার থাকবে’। জরুরি অবস্থা ঘোষণা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে না। জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, ১৪১ এর ক এর ১ ধারা মতে রাষ্ট্রপতির কাছে যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে, যা যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের দ্বারা বাংলাদেশ বা যেকোনো...
জুয়াড়ি, মদ্যপ, বদমেজাজি তো কত লোকই হয়! তাদের নিয়ে কে আর আলোচনা-সমালোচনা করে? তবে পৃথিবী বিখ্যাত লেখক ফিওদর দস্তইয়েফ্স্কির সেই সাধারণ তালিকায় নিশ্চিতভাবেই পড়বেন না। কারণ, তিনি এমন এক সাহিত্যিক, যাঁর সাহিত্য পাঠকের অনুভবের জগতে দীর্ঘ প্রতিধ্বনি তোলে। তাঁর লেখায় জীবনের বিচিত্র বিষয় এক বিস্তৃত উপত্যকা হয়ে ধরা দেয়। তাঁর উপন্যাসের চরিত্রগুলোর ‘যন্ত্রণা সয়ে যাওয়ার আর্তনাদ’ পাঠকের হৃদয়ে এমন এক অনুরণন তোলে, যা তাঁকে জীবনের অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে চায়; এমন জায়গায়, যেটা তাঁর অভ্যস্ত পৃথিবী থেকে দূরের, অথচ তারই অন্তর্গত।এই দস্তইয়েফ্স্কিকে নতুন চোখে দেখতে শেখায় মালয়ালম ভাষার অনন্য উপন্যাস ওরু সংকীর্থনম পোলে—পেরুমপদভম শ্রীধরনের লেখা, যা জাভেদ হুসেনের অনুবাদে বাংলায় এসেছে ছাব্বিশ দিন: দস্তইয়েফ্স্কির জুয়াড়ি লেখার আখ্যান নামে। উপন্যাসটি যেন প্রথম প্রেমের মতো ধীরে ধীরে পাঠকের মননে প্রবেশ করে এবং একসময়...
আমি লক্ষ করেছি, ১৯৮৬ সালে আমার ডিকলোনাইজিং দ্য মাইন্ড পুস্তকটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বিউপনিবেশায়ন ও ভাষাগুলোর ভেতরকার অসম ক্ষমতা-সম্পর্কের ব্যাপারে জগৎজুড়েই আগ্রহ বেড়েছে। কয়েক বছর আগে, ২০১৮ সালে এটিই আমাকে আয়ারল্যান্ডের মুনস্টের রাজ্যাধীন লিমেরিক শহরে টেনে নিয়ে যায়। ওই শহরে তখন ১৮৯৩ সালে স্থাপিত ‘গ্যালিক লিগ’-এর ১২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।‘গ্যালিক লিগ’ খোদ আয়ারল্যান্ডে গ্যালিক বা আইরিশ ভাষার পুনরুজ্জীবনের জন্য নানা তত্পরতায় নিবেদিত একটি আইরিশ সংগঠন। আইরিশ জনগণের নিজস্ব ভাষা গ্যালিক, ইতিপূর্বে আধিপত্যশীল ইংরেজি ভাষার অধীন হয়ে পড়েছিল। পুরোদস্তুর সরকারি সমর্থনসহ নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও মর্যাদা ও প্রভাবের দিক থেকে আইরিশ ভাষা এখনো ইংরেজির অধস্তন পর্যায়ে বিদ্যমান রয়েছে। আয়ারল্যান্ডের যত মানুষ আইরিশ ভাষায় কথা বলে, তার চেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করে। কতিপয় সুবিখ্যাত আইরিশ...
আল মাহমুদের সাহিত্যপ্রতিভার উন্মেষ ঘটেছিল বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে। মৃত্যুবরণ করেন ২০১৯ সালে। সেই হিসাবে তাঁর কবিজীবনের শুরু ও শেষের মধ্যে প্রায় পৌনে এক শতাব্দী অতিবাহিত হতে চলেছে। সময়ের হিসাবে এটি নিতান্ত কম নয়। এখন বোধ করি আল মাহমুদকে বাংলা কবিতার বড় পটে রেখে বিচার করা দরকার। এতে তিনি তাঁর স্ব-ভাবে আমাদের সামনে মূর্ত হয়ে উঠবেন।এক.ঔপনিবেশিক শক্তির ছায়াতলে দীর্ঘকাল থাকলে একটা জাতির সাহিত্যের যে দশা হয়, বাংলা সাহিত্যেরও তা–ই হয়েছে। ৬০০ বছরের ধারাবাহিক অভিযাত্রায় ছেদ ঘটে। নতুনভাবে সংসার শুরু করে ‘বনিয়াদি’, ‘রুচিমান ও রূপবান’ ইউরোপীয় সাহিত্যের সঙ্গে। বড়লোকের ঘর করতে গিয়ে বাংলা সাহিত্যের চলন–বলন ও রূপ-লাবণ্যে একটা বড় পরিবর্তন আসে। ওই পরিবর্তিত সাহিত্যকেই আমরা বলি ‘আধুনিক বাংলা সাহিত্য’। এর শুরু উনিশ শতকে।অন্যের মতো করে আধুনিক হওয়ার শুরু আছে, শেষ নেই।...
পুরস্কারপ্রাপ্তির ফোন যখন পেলাম তখন আমি বাসন ধুচ্ছিলাম। কিছুদিন আগেই অনলাইনে ডিশওয়াশারের দাম দেখেছি, অত টাকা নেই হাতে। তাই হন্যে হয়ে হাউসহেল্প খুঁজে বেড়াচ্ছি। ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছি জেনে মনে হলো, এবার তাহলে একটা ডিশওয়াশার কিনে ফেলব নাকি? থালাবাসন ধুতে না হলে অনেকটা সময় বেঁচে যাবে। সেই সময়টুকুতে লেখালেখি করা যাবে। সৃজনশীল লেখালেখিটাকে সাহিত্য চর্চার মতন ভারী শব্দবন্ধ দিয়ে কেউ বলে না। পেশায় শিক্ষক হওয়ার জন্য আমার কাছ থেকে একাডেমিক লেখা আশা করা হয়, জব রিকোয়ারমেন্ট। প্রমোশন ইত্যাদি নির্ভর করে প্রকাশনা আর বাড়তি ডিগ্রির ওপর। সেই ক্ষেত্রে আমি শোচনীয়ভাবে পিছিয়ে আছি। ১৪ বছর চাকরি করার পর কোনোমতে সহযোগী অধ্যাপক হয়েছি। ওদিকে আমার সমবয়সীরা প্রফেসর ডক্টর হয়ে গেছেন। যতই আপনি বলেন না কেন, প্রতিযোগিতা কারও সঙ্গে কারও নয়, নিজের বেস্টটা...
হোয়াইট হাউসে বৈঠক চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নেতারা। একপর্যায়ে ইংরেজিতে বক্তব্য শুরু করেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোয়াকাই। তাঁর মুখে সাবলীল ইংরেজি শুনে প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প। জানতে চান, এত সুন্দরভাবে ইংরেজিতে কথা বলা কোথা থেকে শিখেছেন তিনি।স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ওই বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন ট্রাম্প নিজেই। তাতে যোগ দেন লাইবেরিয়ার পাশাপাশি গ্যাবন, গিনি বিসাউ, সেনেগাল ও মৌরিতানিয়ার নেতারা। ট্রাম্প তাঁদের বলেন, সহায়তা থেকে বাণিজ্য—নানা বিষয়ে আফ্রিকার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গিতে বদল আনছেন তিনি। এ-ও জানিয়ে দেন, আফ্রিকার অংশীদার হিসেবে চীনের থেকে ভালো যুক্তরাষ্ট্র।বৈঠকে আফ্রিকার অনেক নেতা নিজ নিজ ভাষায় কথা বলেন। ভাষাগুলো ট্রাম্পকে বোঝানোর জন্য অনুবাদকের ব্যবস্থা ছিল। তবে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোয়াকাই ইংরেজিতে বলেন, ‘লাইবেরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমেরিকাকে আবার মহান করে তোলার আপনার যে...
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবসর গ্রহণের পর বেদ, উপনিষদ অধ্যয়ন ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সময় কাটাবেন। গতকাল বুধবার তিনি নিজেই এ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান।অমিত শাহর বয়স মাত্র ৬০। তা ছাড়া এ দেশের রাজনীতিবিদেরা সচরাচর অবসর গ্রহণ করেন না। তার ওপর তাঁর মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী যদি কেউ হন, দিনে ১৮ ঘণ্টা যাঁর রাজনীতিতেই কেটে যায়, এমন অমিত শক্তিধর অমিত শাহ হুট করে অবসরের কথা কেন বলতে গেলেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। নানান প্রশ্ন ঘুরছে।বিজেপিতে যেদিন থেকে ‘মোদি যুগ’ শুরু, সেদিন থেকেই মোদি–শাহ নাম এক নিশ্বাসে উচ্চারিত হয়ে আসছে। গুজরাটি রাজনীতিতে যা শুরু, জাতীয় রাজনীতিতেও সেই যুগলবন্দী অব্যাহত। নরেন্দ্র মোদির সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে বিশ্বস্ত দোসর বলে পরিচিত অমিত শাহ। এমন ধারণাও আছে যে শাহ–ই হবেন মোদির উত্তরসূরি।হিন্দুত্ববাদী...
বড়পর্দায় উঠে আসছে শশী, কুসুম ও কুমুদের জীবন। মুক্তি পেতে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের নির্মাতা সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’। কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একই শিরোনামের কালজয়ী একটি উপন্যাস অবলম্বনে এটি নির্মিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ছবিটির অপেক্ষায় রয়েছেন জয়া আহসান-ভক্তরা। কেননা, পর্দায় কুসুম চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই বাংলাদেশি অভিনেত্রী। গত রোববার ইনস্টাগ্রামে পুতুলনাচের ইতিকথা মুক্তির চূড়ান্ত তারিখ জানিয়েছে প্রযোজনা সংস্থা ক্যালাইডোস্কোপ। সংস্থাটি জানায়, ১৯৩৫ সালে ভারতবর্ষ পত্রিকায় প্রথমবার ছাপা হয় পুতুলনাচের ইতিকথা। চলতি বছর উপন্যাসটির প্রথম ধারাবাহিক প্রকাশের ৯০ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে আগামী ১ আগস্ট ভারতে মুক্তি পাবে ছবিটি। ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, নির্মাতা সুমন মুখোপাধ্যায় দেখেছিলেন তাঁর বাবা অরুণ মুখোপাধ্যায়কে এই উপন্যাসকে মঞ্চে নাট্যরূপ দিতে। সেই থেকেই নির্মাতার মনের মধ্যে ইচ্ছে ছিল কালজয়ী উপন্যাসটি নিয়ে ছবি বানানোর। তাঁর সেই...
সমবায় অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত ক্যাডারভুক্ত অনেক কর্মকর্তা ঢাকার বাইরে যেতে চান না। ফলে ঢাকার বাইরের কার্যালয়গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা পড়ে আছে। এ বিষয়টির পাশাপাশি জনবলসংকটের কারণে সমবায় সমিতিগুলোর কার্যক্রম সঠিকভাবে নজরদারি হচ্ছে না। এ সুযোগে সমিতিগুলো অনিয়ম করছে।অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাডার কর্মকর্তা হয়েও অনেকে চাকরিজীবনের অর্ধেক সময় কাটিয়ে দিয়েছেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে। ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও অনেকে যেতে চান না। এর প্রভাব পড়ছে মাঠপর্যায়ে।বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে নির্ধারিত সংখ্যক সমবায় সমিতি পরিদর্শনের কথা। কিন্তু জনবলসংকটের কারণে তা হচ্ছে না। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অনেক সমবায় সমিতি।অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাডার কর্মকর্তা হয়েও অনেকে চাকরিজীবনের অর্ধেক সময় কাটিয়ে দিয়েছেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে। ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও অনেকে যেতে...
আজ কবি ও সংগঠক বাপ্পি সাহা’র জন্মদিন । শুভ জন্মদিন। কবি বাপ্পি সাহা একাধারে কবি, গল্পকার, গীতিকার, শিশুসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক। সাহিত্য অঙ্গনে তার অবাধ বিচরণ। বিভিন্ন সংগঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। বহু সংগঠন থেকে সম্মাননা প্রাপ্ত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্ভ্রান্ত সাহা পরিবারে ১৯৮৪ সালের ৫ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার শৈশব কৈশোর কেটেছে নারায়ণগঞ্জ। আদর্শ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি, এরপর নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। তারপর সরকারি তোলারাম কলেজে লেখাপড়া করার পাশাপাশি ব্যবসায় জড়িয়ে পরেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ কবিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। হাই স্কুল জীবন থেকেই তিনি সাহিত্য চর্চায় জড়িত। তার কবিতার প্রেমকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কাজ রশিক বাপ্পি সাহা একজন সরল মনের মানুষ। হাস্যজ্জ্বল সংঘপ্রিয়। কবি বাপ্পি সাহা’র প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:রাঙা প্রজাপতির ডানা (কাব্য-২০১৪), ছায়া দ্বীপ (গল্প-২০১৫), স্মৃতির ক্যানভাসে (কবিতা-২০১৬), বিষাদের খেয়া (কাব্য-২০১৭), বাপ্পি সাহা’র শত কবিতা (কাব্য- ২০১৮), সৃষ্টি তার...
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রানচেসকা আলবানিজ ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে, ইসরায়েলকে দেওয়া আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ করা ও দেশটির ওপর পুরোপুরি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ও।গতকাল বৃহস্পতিবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বক্তব্য দেওয়ার সময় আলবানিজ এমন আহ্বান জানান। তিনি ইসরায়েলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ‘গণহত্যার অর্থনীতি’ বলে আখ্যা দেন।মানবাধিকার পরিষদে এদিন আলবানিজ নতুন একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি দমন–পীড়ন ও সহিংসতায় সহায়তাকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়।আলবানিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারি ও উপনিবেশ গঠনের পরিকল্পনাকে টিকিয়ে রাখতে বড় কোম্পানিগুলো একধরনের করপোরেট যন্ত্র হিসেবে কাজ করছে। এই যন্ত্রই ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সেখানে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনায় ইন্ধন জোগাচ্ছে।ফ্রানচেসকা আলবানিজ বলেন, ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি...
আজ থেকে ২৪৯ বছর আগে এই দিনে শোষণের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন (ডিক্লারেশন অব ইনডিপেনডেন্স) তৎকালীন ১৩টি ব্রিটিশ উপনিবেশের প্রতিনিধিরা, জন্ম হয় এক নতুন রাষ্ট্রের। সময়ের পরিক্রমায় তারাই আজকের পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।বলছি যুক্তরাষ্ট্রের কথা। ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক বৈঠকে তৎকালীন ১৩টি ব্রিটিশ উপনিবেশের প্রতিনিধিরা একজোট হয়ে ঘোষণা করলেন, তাঁদের স্বাধীনতা চাই। এ ঘোষণাপত্র শুধু একটি কাগজ ছিল না; বরং ছিল একটি জাতির আত্মপরিচয় প্রকাশের সূচনা। ইতিহাসের পাতায় ওই ঘোষণাপত্র ‘ডিক্লারেশন অব ইনডিপেনডেন্স’ নামে পরিচিত।মার্কিনরা বিপুল উৎসব আয়োজনে ৪ জুলাই নিজেদের স্বাধীনতা দিবস পালন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত, আতশবাজি, প্যারেড, বারবিকিউ পার্টি আর দেশাত্মবোধক গানে-স্লোগানে দিনটি উদ্যাপন করা হয়। আয়োজনে কোনো কিছুর কমতি থাকে না।তবে ৪ জুলাই মার্কিনদের জন্য শুধু স্বাধীনতা...
প্রযুক্তি-প্রাচুর্য-সমৃদ্ধি, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, পারমাণবিক শক্তিমত্তা ও প্রতিপত্তির বিচারে যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় বিশ্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি ও তিলোত্তমা। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মধ্যে একটি হলো ৪ জুলাই, যেটিকে মার্কিনিরা পালন করে ইন্ডিপেনডেন্স ডে হিসেবে। ৪ জুলাই গ্রীষ্মকালীন বিনোদনের সর্বোচ্চ রূপ। কিছু উৎসব কয়েক দশক আগের। অন্যরা আঞ্চলিক রীতিতে আয়োজন করেন, বড় শহর বা ছোট শহরের চরিত্র ধারণ করে। এই দিনে যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক দলিল Declaration of Independence গ্রহণ করেছিল ১৭৭৬ সালে। এই ঘোষণার মাধ্যমে গ্রেট ব্রিটেন থেকে ১৩টি উপনিবেশ নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। আর শুরু হয় ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার পথচলা। এদিন আমেরিকার মানুষেরা নানা আয়োজনে তাদের দেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে। এবারো বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।...
এই জুলাইয়ের ৩ তারিখে ফ্রানৎস কাফকার বয়স ১৪২ হলো। সব সময় মৃত্যুচিন্তায় তাড়িত মানুষটার জন্য এটা কম কথা নয়। তাঁর অধিকাংশ লেখাই শেষের আগে শেষ করা কিংবা অসমাপ্ত। সেই লেখক ১৪২ বছর বেঁচে গেলেন? শুধু তা-ই না, এ মুহূর্তে পৃথিবীজুড়ে স্বীকৃত ‘সবচেয়ে প্রভাবশালী’ কথাসাহিত্যিক এই তিনিই? ভাবছি যে কাফকার সম্মানে এবারের ৩ তারিখে একটা বার্থডে পার্টি করলে কেমন হতো? নিজের জন্মদিন উদ্যাপন দেখে তিনি নিশ্চয়ই পরপার থেকে মুখ বাঁকিয়ে কষ্ট করে একটু হাসতেন আর আমার কানে কানে বলতেন, ‘মাসরুর আরেফিন, বৃথাই আমার অনুবাদক তুমি! আমার জন্মদিন তো এভাবে করলে চলবে না।সেটা হতে হবে আলো-আঁধারি কোনো ঘরে, সেখানে আসা অতিথিরা ঠিক জানবেন না তাঁরা দাওয়াত পেয়েছিলেন কি না, সেই ঘরের কোনায় হাতে একটা বড় সিল ও লম্বা লম্বা কিছু ফর্ম নিয়ে...
জীবন্ত কিংবদন্তি হরর ঔপন্যাসিক স্টিফেন কিংয়ের উপন্যাস সংকলন ‘ইফ ইট ব্লিডস’ ২০২০ সালে প্রকাশিত হয়। বইটির চার উপন্যাসের একটি ‘দ্য লাইফ অব চাক’। এটি অস্বাভাবিক তিন অঙ্কের কাঠামোর গল্প, যা শেষ দিয়ে শুরু হয়। ধীরে ধীরে চার্লস ক্র্যান্টজ (চাক) নামে একজন ব্যক্তির জীবনের বর্ণনা উঠে আসে। ‘ধন্যবাদ, চাক’ নামে প্রথম পর্বটি শুরু হয় রহস্যময়ভাবে পৃথিবী সমাপ্তির মাধ্যমে। ভবনগুলো ভেঙে পড়ে, অদৃশ্য হয়ে যায়, সমাজ ভেঙে পড়ে। বিশৃঙ্খলার মধ্যেও বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়, যেখানে চাক নামে একজনকে ৩৯টি দুর্দান্ত বছরের জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়। এর অর্থ পৃথিবী নিজেই চাকের মন বা জীবনের প্রকাশ হতে পারে। ‘বাস্কার্স’ অংশে চাক বোস্টনে রাস্তার শিল্পীদের (বাস্কার্স) সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নাচে এবং এটি তার জন্য বিশুদ্ধ আনন্দ ও মুক্তির মুহূর্ত। জানা যায়, চাক ব্রেন টিউমারে মারা যাচ্ছে।...
টানা দুই বছর সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তৃতীয় দফায় ইতিহাসভিত্তিক কথাসাহিত্যের জন্য এবারের ওয়াল্টার স্কট পুরস্কার জিতলেন অ্যান্ড্রু মিলার। সেবাস্তিয়ান ব্যারি, রবার্ট হ্যারিস, আন্দ্রেয়া লেভি, হিলারি ম্যান্টেলের মতো বিশ্বখ্যাত ও জনপ্রিয় লেখকের নামের তালিকায় যুক্ত হলেন মিলারও। মেলরোজে বর্ডারস বুক ফেস্টিভ্যালে এ সম্মানজনক ব্রিটিশ সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী পান ২৫ হাজার পাউন্ড। স্যার ওয়াল্টারের প্রপৌত্র ম্যাথু ম্যাক্সওয়েল স্কট বিজয়ীকে পুরস্কার তুলে দেন। ৬০ বছরের বেশি সময় ঘিরে প্রতিষ্ঠিত এই ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাসের প্লট। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৩ সালের মধ্যে দীর্ঘ, তীব্র শীতকালে একটি প্রত্যন্ত ইংরেজ সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকার গল্প ‘দ্য ল্যান্ড ইন উইন্টার’। একই সঙ্গে লেখক কেভিন ব্যারির ‘দ্য হার্ট ইন উইন্টার’, আংঘারাড হ্যাম্পশায়ারের ‘দ্য মেয়ার’, ফ্রান্সেসকা কে-এর ‘দ্য বুক অব ডেজ’, ফেরদিয়া লেননের ‘গ্লোরিয়াস...
বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় ৩৩/১১ কেভি জিআইএস প্রযুক্তির ১০টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র (সাবস্টেশন) নির্মাণে ব্যয় হবে ২৩৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা সূত্রে জানা গেছে, টার্নকি ভিত্তিতে ৫টি ৩৩/১১ কেভি উপন্দ্রের ডিজাইন, সাপ্লাই, ইন্সস্টলেশন , টেস্টিং অ্যান্ড কমিশনিং প্রভৃতির জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৭টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। তার মধ্যে ৫টি প্রস্তাব বাণিজ্যিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি খেকে সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান আইডিয়াল ইলেক্ট্রিকাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ঢাকাম প্রকল্পটি বাস্তায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ২ লাখ...
