রাবিতে ঢাবির ‘বি` ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
Published: 25th, January 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ (বি ইউনিট) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আঞ্চলিক কেন্দ্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হয় এই পরীক্ষা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহী কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাজশাহীর আশেপাশে জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা সকাল থেকেই পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ভিড় জমান।
পরীক্ষার্থীরা জানান, বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা হওয়ায় তাদের সময় এবং ভ্রমণ খরচ কমেছে। কেন্দ্রে পরীক্ষার পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা যথাযথ ছিল। তবে, অনেকেই দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি পার করে নিজের স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপে পা রাখার অনুভূতি প্রকাশ ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে কিছুটা অসুবিধার কথা জানান।
পরীক্ষা দিতে আসা নুসরাত জাহান নামে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবার অনুভূতির জায়গা। তাই আমার কেন্দ্রে এসে কিছুটা নার্ভাস লেগেছিল। এখানে এসে অনেক কিছু শিখেছি, বিশেষ করে নিজের আত্মবিশ্বাসের ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে চলা। পরীক্ষার কিছু প্রশ্ন কঠিন হলেও, আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।”
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিভাবক সেলিম উদ্দিন বলেন, “আমার সন্তান অনেক পরিশ্রম করেছে, আজ তার সেই পরিশ্রমের ফল দেখার দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেলে তার জীবনে অনেক বড় পরিবর্তন আসবে। আমি তার প্রতি পুরোপুরি বিশ্বাস রাখি এবং মনে করি সে নিজের স্বপ্ন পূরণ করবে। যদি চান্স না পায়, তাও তার প্রতি আমার সমর্থন একটুও কমবে না এবং আমি সন্তানের পাশে সবসময় আছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা রাজশাহীতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পরীক্ষার্থীদের জন্য পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।”
এছাড়া রাজশাহী কেন্দ্রের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য রাবির বিভিন্ন সেবামূলক সংগঠনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা ছিল।
ঢাকা/ফাহিম/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে উত্তাল রাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ বিক্ষোভ করছেন রাবি শাখা ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
চাকসু: ৩ পদ শূন্য রেখে বামপন্থিদের ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গাইবান্ধায় নেওয়া হলো খুবি শিক্ষার্থীর মরদেহ
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটা ফিরিয়ে নে’, ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘২৪-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘জামাই কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগামী ২৫ তারিখের রাকসু নির্বাচনকে পুঁজি করেই শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই অবৈধ পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি তুলেছেন এবং তা বাস্তবায়ন করেছেন। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যেই এ দাবি সামনে আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাকসুর জিএস পদপ্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “পোষ্যকোটার মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরিত করা হয়েছিল। অনেক সংগ্রাম আর ত্যাগের ফলে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আমরা রাকসু পেতে যাচ্ছি। রাকসুকে জিম্মি করে পোষ্য কোটা নামক অন্যয্য জিনিসকে তারা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। অর্থাৎ পুরাতন মদ তারা নতুন মোড়কে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।”
তিনি বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা থাকতে, আমরা থাকতে এই পোষ্য কোটা কখনো ফিরে আসতে দেব না। আমরা ২৫ তারিখেই রাকসু চাই এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার নামে পোষ্য কোটা ফিরিয়া আনার চেষ্টা করা হলে আমরা তা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।”
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এবং রাকসুর ভিপি পদপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “পোষ্য কোটা একটা মীমাংসিত ইস্যু হওয়া স্বত্বেও আবার তা পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং এটা প্রশাসনের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ তারিখ রাকসু নির্বাচন, এ মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটা দ্বিমুখী অবস্থায় নিয়ে আসা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “রাকসু বানচাল করার জন্য যে গোষ্ঠী কাজ করছে, তারা তাদের সর্বশেষ চেষ্টাটা কাজে লাগানোর জন্য এ পোষ্য কোটাকে কাজে লাগাচ্ছে। আমরা পোষ্য কোটাকে আবার ফিরে আসতে দিতে চাই না এবং রাকসুকে সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই।”
এর আগে, পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ তিন দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজকের মধ্যে দাবি বাস্তবায়িত না হলে ২১ তারিখ হতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার একটি বৈঠকে এই পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বেশকিছু শর্তসাপেক্ষে রাবিতে প্রতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যতম প্রধান শর্তের মধ্যে রয়েছে- স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ পেয়ে পাস করা শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী