জয়পুরহাটের আক্কেরপুরে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করতে মাঠে হামলা ও মাঠের চারপাশে দেওয়া টিনের বেড়া ‘বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা’ ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তিলকপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আগামীকাল বুধবার নারীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। এই খেলা বন্ধ করতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে এলাকার ‘বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা’ জড়ো হয়ে এই ভাঙচুর করেন বলে জানায় স্থানীয়রা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার লাইভ প্রচার করা হয়। 

স্থানীয়রা জানায়, তিলকপুরের স্থানীয় টি স্টার ক্লাবের উদ্যোগে তিলকপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠটি টিন দিয়ে ঘেরাও করে প্রায় দেড় মাস ধরে ফুটবল খেলা চলছিল। টি স্টার ক্লাবের সভাপতি উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউল হাসান ইমন। নারীদের ফুটবল খেলার প্রতিটি ম্যাচে মাটিতে বসে ৩০ টাকা ও চেয়ার বসে ৭০ টাকা করে টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। 

ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, তিলকপুর রেলস্টেশনের সামনে স্বাধীনতা চত্বরে মুসল্লি ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। সেখানে কয়েক জন মওলানা বক্তব্য দেন। তাদের একজনকে বলতে শোনা যায়, কয়েক দিন থেকে জানতে পারছি এলাকার মেয়েরা খেলা নিয়ে ব্যস্ত। মুসলমান মেয়েদেরকে ঘরে রাখার জন্য আল্লাহতালা বলেছেন। তারা পর্দার মধ্যে থাকবেন। সেই মেয়েদের এনে লেলিয়ে দিয়ে যুবকদের পাপাচার কাজে অগ্রসর করছে। যারা সৎ কাজে আদেশ করবে দেবে অসৎ কাজে নিষেধ করবে তারাই সফল কাম। মেয়েদের লেলিয়ে দেওয়া কীভাবে মানতে পারি। যারা মেয়েদের লেলিয়ে দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান, আমি তাদের সর্তক করতে চাই আপনারা সাবধান হন। আগামী দিনে মেয়েদের খেলা বন্ধ করুন। যদি আপনারা বন্ধ না করেন তাহলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
 
এরপর সেখান থেকে স্লোগান দিয়ে তারা তিলকপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে টিনের বেড়া ভাঙচুর করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিলকপুর বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা জানান, টি-স্টার ক্লাবের কর্মকর্তারা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ টিন দিয়ে ঘেরাও করে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছেন। দর্শকদের ৩০ ও ৭০ টাকার টিকিট কেটে ফুটবল খেলা দেখতে হয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। সম্প্রতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাঠে টিনের বেড়া অপসারণ করতে এসে দর্শক ও আয়োজকদের রোষানলে পড়েছিলেন। এঘটনায় একজন গ্রাম পুলিশ আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আগামীকাল বুধবার নারী দলের ফুটবল খেলার আয়োজনের কথা আয়োজকেরা প্রচার করেন। এতে মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা মঙ্গলবার আসরের নামাজের পর তিলকপুর রেলস্টেশনের সামনে স্বাধীনতা চত্বরে জড়ো হন। এরপর তারা সেখান থেকে গিয়ে খেলার মাঠের টিনের বেড়া ভাঙচুর করেন।

তিলকপুর টি স্টার ক্লাবের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউল হাসান ইমন বলেন, বুধবার বিকেলে জয়পুরহাট-রংপুর নারী ফুটবল দলের খেলা ছিল। আজ মঙ্গলবার আসরের নামাজের পর মুসল্লিরা খেলার মাঠে হামলা চালিয়ে টিনের বেড়া ভেঙে দিয়েছে। এতে লক্ষাধিক টাকার টিন নষ্ট হয়েছে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান জানান, নারী টিমের ফুটবল খেলার আয়োজনের কথা তিনি জানেন না। খেলার মাঠের টিনের বেড়া ভেঙে দেওয়ার ঘটনাও জানেন না। ইউএনও স্যার আজকে বিকেলে আমাকে জানিয়েছেন, আগামীকাল বুধবার খেলার আয়োজকদের ও বিরোধীতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম বলেন, আগামীকাল নারী দলের ফুটবল খেলার কথা আমাকে আয়োজকেরা জানায়নি। খেলার মাঠের টিনের বেড়া ভাঙচুরের বিষয়টি আমার জানা নেই। আয়োজক ও স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজের কথা জানতে পেরে আগামীকাল তাদের নিয়ে বসার কথা রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ টবল র ফ টবল খ ল র ত লকপ র র কর ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা

রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।

আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।

লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা