রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি শামীম মিয়াকে নিয়ে নেতাকর্মীর মধ্যে বিতর্ক ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলছেন, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের এ নেতাকে সভাপতির পদ দিয়ে বিতর্কিত কমিটি করা হয়েছে। এতে দলের মির্জাপুর ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা জড়িত। 

অভিযোগ অস্বীকার করে কমিটির সদস্য সচিব ওয়াহেদুল বলেন, শামীম দলের দুর্দিনের সঙ্গী। কমিটিতে জায়গা না পেয়ে অনেকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও পদে থাকার কথা এড়িয়ে যান শামীম মিয়া। তিনি বলেন, ‘তখন চাপের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তাদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করেছি। আমি বিএনপির সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব।’

শামীম দলের লোকজনকে দুর্দিনে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে দাবি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রুবেল সাদীর। তিনি বলেন, এ জন্য হয়তো তাঁকে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

আগেও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকে বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ডসহ ইউনিয়ন কমিটিতে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

হযরত আলী। তিনি বলেন, বিষয়টি উপজেলা ও জেলার নেতাদের জানানো হয়েছে। স্বজনপ্রীতি এবং অনৈতিক সুবিধা নিয়ে যারা আওয়ামী লীগকে মদদ দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানীর। তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ব এনপ ব এনপ র কম ট র উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।

২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।

এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ