আনন্দমুখর পরিবেশে শেষ হলো ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির  সমাবর্তন অনুষ্ঠান। ২৮ জানুয়ারি  সকাল  উত্তীর্ণ হওয়া ২ হাজার  ৭৯১ জন গ্র্যাজুয়েটের পদভারে মুখর হয়ে ওঠে পুলিশ কনভেনশন হল প্রাঙ্গণ।  শিক্ষার্থীদের পরনে ছিল সমাবর্তনের কালো গাউন ও মাথায় টার্সেল। অনুষ্ঠান শুরু হওয়া কথা সকাল ১০টায় থাকলেও ৮টা থেকে তাদের ভিড় জমে। হল প্রাঙ্গণের সামনে কেউ সেলফি তুলেছে গ্রুপ হয়ে, আবার কেউ ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলেছে।  কিছুক্ষণ  পর শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী প্রফেসর এম আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড.

মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর নিয়াজ মোহাম্মদ খান। সভাপতির বক্তৃতায় প্রফেসর এম আমিনুল ইসলাম সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে  বলেন, তোমরা এখন নতুন জগতে ঢুকতে যাবে, চাকরি করবে দেশে-বিদেশে অথবা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে কিন্তু তা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে করার চেষ্টা করবে। সততা ও নিষ্ঠা থাকলে সফল হওয়া সম্ভব। সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর নিয়াজ মোহাম্মদ খান বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে শিক্ষা অর্জন করি তা আমাদের সমগ্র জীবনকে প্রভাবিত করে। এটি যেমন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করে, জীবনকে অর্থপূর্ণ ও দায়িত্বশীল করে তোলে, তেমনি গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দ্বারা সমাজের নানাবিধ সমস্যার সমাধানের পথ দেখায়। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশে ১৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাস করা শিক্ষার্থীরা সমাজ বির্নিমাণে ভূমিকা রাখছে। সমাবর্তনে আরও বক্তব্য রাখেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, উপাচার্য প্রফেসর ড. গণেশ চন্দ্র সাহা, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. মুহাম্মদ শহীদুল কাদির পাটোয়ারী, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য অ্যাডভোকেট শাহেদ কামাল পাটোয়ারী, ট্রেজারার প্রফেসর ড. জাহিদুল ইসলাম। সমাবর্তনে ৪ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড, ১০ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড এবং ১৩ জনকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। শেষে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
সমাবর্তনে ২ হাজার ৭৯১ জন  গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। সমাবর্তনে ৩ জন চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড, ১০ জন ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড এবং ১২ জন ডিন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। v

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ