আগামী জাতীয় নির্বাচন সব রাজনৈতিক দলের চাওয়ার উপর নির্ভর করবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘‘এখন যদি সব পার্টি বলে আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই, সেক্ষেত্রে উনিতো (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, এমন নয় যে উনি একটি জায়গায় স্থির আছেন। রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার উপর নির্ভর করবে।’’

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।

বৈঠকে বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘‘জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশনের কাজটাই হবে এ বিষয়ে তাড়াতাড়ি কাজ করা। নির্বাচন চলতি ডিসেম্বর বা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে হওয়ার ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছে সেই বিষয়টি উল্লেখ করেন।’’

আরো পড়ুন:

‘রাষ্ট্র মেরামতে এখনো সফলতা দেখাতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার’ 

সহিংসতা-হানাহানি যেন না হয়, সজাগ দৃষ্টি রাখুন: প্রধান ‍উপদেষ্টা

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তেমন কথা হয়নি। জাতীয় নির্বাচন ওনারা দ্রুত চাচ্ছেন, এই ডিসেম্বরেই চাচ্ছেন। আমাদের তরফ থেকে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ দেখবেন, সিদ্ধান্ত হলে জানবেন।’’

বিএনপির পক্ষে থেকে বলা হচ্ছে সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছে এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানবেন।’’

গণহত্যা, দুর্নীতি, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা হবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘দেশের বেশিরভাগ মানুষ শান্তির রাজনীতি করতে চান। আমরা চাই সেই পরিবেশটা শুরু হোক। সেই আলোকে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশনের প্রথম বৈঠক হবে। সংস্কার কমিশনের ছয়টি প্রতিবেদন নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। প্রথম বৈঠকটি এক সাথে সব দলের সঙ্গে হবে।’’

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘তার দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় জোর দিয়েছেন। অন্যায়-অত্যাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিচার কাজ যাতে দ্রুত হয় সেগুলোর জন্য বলেছেন।’’

আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘হয়রানি’ মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিএনপি আলোচনা করেছে বলে জানান প্রেস সচিব। 

অপারেশন ডেভিল হান্টের বিষয়েও দলটি কথা বলেছেন জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘তারা বলেছেন এখানে যেন মানবাধিকারের কোন রকমের লঙ্ঘন না হয়। প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকেও বলা হয়েছে কোনভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে দেওয়া যাবে না। যারা অন্যায়-অবিচারের সঙ্গে যুক্ত, সুস্পষ্ট অভিযোগ আছে তাদের অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় আনা হচ্ছে। যা গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করা হচ্ছে। কোন রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘন চায় না, হবেও না। গায়েবী মামলার বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে বলে বিএনপিকে বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন।’’

ডেভিল হান্টের বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘সরকারে পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- অভিযানে কোন ধরনের নিরপরাধ, নির্দোষ ব্যক্তি এর ধরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বিএনপির তরফ থেকে সংস্কারের বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘তারা বলেছে আপনারা সংস্কার করবেন, তা আমরা চাই। আমরা সব কমিশনে প্রস্তাবনা দিয়েছি। আপনাদের সঙ্গে আছি।’’

বিএনপি স্থিতিশীলতার দিকে জোর দিয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তারপর দেশে শান্তি ফিরে এসেছে, দেশে কোন ধরনের ভাঙচুর দেখছি না। পরিস্থিতি এখন নরমাল। একই সঙ্গে বিএনপি এসব ঘটনায় শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার পেছনে তারই ভূমিকা।’’

সাম্প্রতিক ঘটনায় সরকার দায় এড়াতে পারে না বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই আজ বা কালের মধ্যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমরা দেশের মানুষের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’’

বইমেলায় সব্যসাচীর স্টলে ভাঙচুরের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বাংলা একাডেমির সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দ্রুত ঘটনা জানাতে বলেছি, কারণ পুরো ঘটনা এখনো জানি না। বইমেলা খুবই পবিত্র জায়গা, তার পবিত্রতা আমরা রাখতে চাই।’’

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড স ম বর ব এনপ র বল ছ ন সরক র র করব

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী। 

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?  

ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”

আরো পড়ুন:

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী

পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি

কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”

কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ