প্রতিবেশীর ঘরে আগুন ধোঁয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু
Published: 10th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামে প্রতিবেশীর ঘরে লাগা আগুনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে প্রাণ হারালেন মোহাম্মদ ইলিয়াস (৫২) ও পারভিন আক্তার (৪৫)। এ ঘটনায় মারাত্মক অসুস্থাবস্থায় তাদের ছেলে মো. শাহীন, মেয়ে সোহান আক্তার ও নিকাটাত্মীয় মো. ফয়সালকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে নগরীর কোতোয়ালি থানার বলুয়ারদিঘীর পশ্চিম পাড়ে জাফর সওদাগর কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস-চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল মান্নান জানান, সকাল পৌনে ৭টার দিকে আগুন লাগার খবর পান তারা। যেখানে আগুন লেগেছে সেটি বস্তির মতো ঘনবসতি ও ঘিঞ্জি এলাকা। ফায়ার সার্ভিসের চারটি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহত ৫ জনকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আগুনে এক কক্ষবিশিষ্ট পাঁচটি ঘর পুড়েছে। শর্টসার্কিট থেকে এ আগুন লাগে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, নিহত ইলিয়াস পেশায় বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি। ঘটনার সময় ইলিয়াস-পারভীন দম্পতির আরেক মেয়ে তাহসিন আক্তার বাসায় না থাকায় রক্ষা পেয়েছেন। গতকাল ভোরে আগুন লাগে মূলত হাজি জাফর সওদাগরের কলোনির মকসুদ মিয়ার মালিকানাধীন টিনশেড ঘরে। সেখানে পাঁচটি ঘর পুড়ে গেলেও সব বাসিন্দা অক্ষত আছেন। যাদের আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয় তারা মূলত ওই বাড়ির পাশের টিনশেড সেমিপাকা ভাড়া ঘরের বাসিন্দা। পাশের বাসায় লাগা আগুনের ধোঁয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা তাদের অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করেছি। বাথরুমে না ঢুকে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলে শ্বাসরোধ হতো না। চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।