বগুড়ার ধুনটে বৌভাতের খাবারে মাংস কম থাকা এবং খাওয়া শেষ হওয়ার আগে দই দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত সবাই কনেপক্ষের লোকজন।

আহতরা হলেন- জেলার কাহালু উপজেলার জামগ্রামের সুলতানা খাতুন (৩০), আবু হোসাইন (২৬), সুমন মিয়া (২৫), মানতাসা খাতুন (২৪), শাহজাহান আলী (৪৫) ও এলিনা খাতুন (৪২)।

এর মধ্যে, সুলতানা ও আবু হোসাইনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গে‌ছে, গত বুধবার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরঘাট গ্রামের অশ্লীলের ছেলে জামাল উদ্দিনের সঙ্গে কাহালু উপজেলার শান্তা গ্রামের শহিদুল প্রামাণিকের মেয়ে শর্মিলা খাতুনের বিয়ে হয়। বৃহস্পতিবার কনেপক্ষের লোকজন ছেলের বাড়িতে আসেন। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে কনেপক্ষের লোকজন খাবারে মাংস কম থাকা ও খাওয়া শেষ হওয়ার আগেই দই দেয়ায় অভিযোগ তুলেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করা হয়েছে।’’

ঢাকা/এনাম/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান

১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।

কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!

দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।

কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।

আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।

অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।

এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।

একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।

বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান

সম্পর্কিত নিবন্ধ