নির্বাচন নিয়ে কিছু দল টালবাহানা করছে: মির্জা আব্বাস
Published: 14th, February 2025 GMT
বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা এই সরকারকে বলতে চাই, আপনারা ডিসেম্বরের ঘোষণা দিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। আমরা সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।’
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন, কখনো বলেন যাবেন না, কখনো বলেন যাবেন, কখনো বলেন এটা হলে যাব, কখনো বলেন ওটা হলে যাব। আরে ভাই আপনাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ২০০৮ সালে বিএনপি এবং আমাদের জোট নির্বাচনে গিয়েছিল, ফলে বাংলাদেশের অনেক নামিদামি, অনেক বিখ্যাত-প্রখ্যাত মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে ফাঁসির কাষ্ঠে। ওই রকম ভুল আর করবেন না দয়া করে। একটি ভুল লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা করবেন না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এটা আমি সরকারকে বলছি না, আমি বলছি এই সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন। এই সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছেন।
সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন করে মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের কিংবা সুযোগসন্ধানী কিছু লোক এ সময়ে দলের নতুন করে সদস্য হওয়া চেষ্টা করবেন। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানান তিনি।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, সরকারের পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু সিন্ডিকেটের কোনো পরিবর্তন হয় নাই এবং এরা এই সরকারকে একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
অপারেশন ডেভিল হান্ট নিয়েও কথা বলেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে অভিযান শুরু হয়েছে ভালো। কিন্তু হাতের সামনে যে ডেভিলরা রয়ে গেছে, তাদের ধরছেন না কেন?
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঐক্য অটুট রাখা জরুরি, ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে কেউই রেহাই পাবে না: এবি পার্টি
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাইয়ের পক্ষের শক্তিদের আত্মঘাতী সংঘাতে জড়ানোর সুযোগ নেই। মত ও পথ ভিন্ন হতে পারে, সমালোচনাও হবে, তবে ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ঐক্য অটুট রাখা জরুরি। কারণ, ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে জুলাই আন্দোলনের পক্ষে থাকা কেউই রেহাই পাবে না।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে দলীয় কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে জুলাই–২৪ গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই মজিবুর রহমান এ কথাগুলো বলেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সফল না হতো তাহলে আমাদের কারাগারে কাটাতে হতো, নেমে আসত অবর্ণনীয় নির্যাতন। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা লাশের স্তূপ তৈরি করেছিল, তারা পেত রাষ্ট্রীয় খেতাব।’
গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতাসহ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ফলেই সফল হয়েছে জানিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, সবার অবদানকেই স্বীকৃতি দিতে হবে। এটা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই। অনেক কিছুই পাইনি। তবে স্বাধীনভাবে যে কথা বলছি, লিখছি, বক্তব্য দিচ্ছি, সেটা গণ-অভ্যুত্থানেরই ফসল।
সংবর্ধনা পাওয়া জুলাই যোদ্ধা আসিফ বলেন, ‘আমার পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে পুলিশ গুলি করেছে। মনে হচ্ছিল মৃত্যু উপত্যকায় পড়ে আছি। এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক টুটুল ভাই আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।’
আরেক জুলাই যোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৮ জুলাই আমি ছিলাম ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। পুলিশ ছিল দুই পাশে। আমরা ছিলাম ৬ জন। কিন্তু তারা (পুলিশ) ছিল ৮৬ জন। ওই দিন জীবিত ফিরব কখনো কল্পনা করিনি।’
অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আতিকুর রহমান, রহমত উল্লাহ, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, শাখাওয়াত হোসেন, আকিব হাসান, আশরাফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, হেদায়েত উল্লাহ, রোমান মিয়া, সিফায়েত হোসাইন, মোহাম্মদ হোসাইন আহমেদ, মোহাম্মদ আমিন, নাবিল, মুস্তাফিজ বিল্লাহ হাবিবী, হাবিবুর রহমান, ফয়েজ আকাশ, নুরুল হুদা, ইকবাল হোসেন, রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবি পার্টির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল। দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এবি পার্টির নেতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুব পার্টির সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন প্রমুখ।