বিএনপি নেতার ভাতিজাকে কোপাল শ্রমিক লীগ নেতার ভাতিজা
Published: 16th, February 2025 GMT
ফরিদপুরের সালথা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. শাহিন মাতুব্বরের ভাতিজা মো. পিয়াল মাতুব্বরকে (২৫) কোদাল দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে সালথা বাজারে নিজেদের ওয়াল্টন শোরুমে তাকে কুপিয়ে জখম করে উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরীর ভাতিজা মো. বাহার চৌধুরী। পরে উত্তেজিত জনতা শ্রমিক লীগ নেতা টুটু চৌধুরী বাড়ি ও তার ভাই লুলু চৌধুরীর দোকানে হামলা চালায়।
জানা গেছে, এলাকার আধিপত্য নিয়ে শ্রমিক লীগ নেতা টুটু চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপি নেতা শাহিন মাতুব্বরের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে টুটু চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিএনপি নেতা শাহিন মাতুব্বর ও তার ভাই সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আসাদ মাতুব্বরকে নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় দলের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
আজ দুপুরে নিজেদের ওয়াল্টন শোরুমে ছিলেন বিএনপি নেতা শাহিনের ভাতিজা পিয়াল। এ সময় শ্রমিক লীগ নেতা টুটু চৌধুরীর ভাতিজা বাহার শোরুমে যান এবং কোদাল নিয়ে এসে পিয়ালকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যান। পরে উত্তেজনা জনতা টুটু চৌধুরীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় টুটুর ভাই লুলু চৌধুরীর দোকানও ভাঙচুর করে তারা। গুরুতর আহত পিয়ালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সালথা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শাহিন মাতুব্বর বলেন, টুটু চৌধুরী আওয়ামী সন্ত্রাসী। এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতে মাঝে মাঝেই টুটু চৌধুরী ও তার ভাই-ভাতিজারা সাধারণ মানুষকে মারধর করে। টুটুর ছত্রছায়ায় তার ভাতিজা বাহার চৌধুরী নানা অপকর্মে জড়িত। সালথা বাজারে যাকে-তাকে মারধর করে। আজ দুপুরে আমার ভাতিজা পিয়াল দোকানে কাজ করছিল। এ সময় টুটুর নির্দেশে হঠাৎ দোকানে এসে পিয়ালকে কুপিয়ে জখম করে বাহার। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের দোসররা সবাই পালিয়ে গেলেও টুটু চৌধুরী এলাকায় দাপটের সঙ্গে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
ঘটনার পর থেকে টুটু চৌধুরী ও তার ভাতিজা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ জখম শ হ ন ম ত ব বর ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার
স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।
আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’