খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সময় শেষ হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ছিল আবেদনের শেষ দিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম থেকে বের হয়ে এসেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এবার স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ১ হাজার ১০৯টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৬৮৫ জন শিক্ষার্থী। যা অতীত ইতিহাসের তুলনায় রেকর্ডসংখ্যক। এ হিসাবে প্রতিটি আসনে লড়বেন ৯৭ জন ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থী।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সাল থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এবার ওই কার্যক্রম থেকে বের হয়ে আসা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দিতে খুলনা ছাড়াও ঢাকা ও রাজশাহীতে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখা হয়েছে। ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা সে অনুযায়ী পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি স্কুলের (অনুষদ) অধীন ২৯টি ডিসিপ্লিন (বিভাগ) রয়েছে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ‘এ’ ইউনিটে। ‘এ’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলে (অনুষদ) ৪১ হাজার ১৭৯ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ২১ হাজার ৫৫০ জন শিক্ষার্থী ঢাকা, ১১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষার্থী খুলনা ও ৮ হাজার ৪৬৩ জন শিক্ষার্থী রাজশাহী কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

‘বি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত জীববিজ্ঞান স্কুলে আবেদন করেছেন ২৭ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৬৮৪ জন ঢাকা, ৭ হাজার ৮৪৬ জন খুলনা ও ৬ হাজার ৩৮৯ জন রাজশাহী কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

‘সি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, আইন, শিক্ষা ও চারুকলা স্কুলে আবেদন করেছেন ৩৪ হাজার ৪৩৯ জন। এর মধ্যে ১২ হাজার ১০৪ জন ঢাকা, ১৪ হাজার ৪৮০ জন খুলনা ও ৭ হাজার ৮৫৫ জন রাজশাহী কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

‘ডি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলে আবেদন করেছেন ৪ হাজার ১৪৮ জন। ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুধু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, গত ১০ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন শুরু হয়। আবেদনের জন্য সময় ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। আগামী ১৭ এপ্রিল (‘সি’ ও ‘ডি’ ইউনিট ) ও ১৮ এপ্রিল (‘এ’ ও ‘বি’ ইউনিটের) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন শ ক ষ র থ পর ক ষ য় পর ক ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ