ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় চুরির অপবাদ দিয়ে এক স্কুলশিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ওরফে গোলাপের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই কৃষক দল নেতার বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া কিশলয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ওই বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।  

নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নাম মো.

মাহিম (১১)। সে তেঘরিয়া কিশলয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থী মাহিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, ‘স্কুল ছুটির পর বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে বের হয়েছিলাম। তখন গোলাপ আঙ্কেল (মিজানুর রহমান) আমাকে ডেকে নিয়ে হাঁটু, কাঁধ ও পিঠে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন। এতে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি ও ভয় পাই। এখন আমার পুরো শরীরে ব্যথা, ব্যথার কারণে কিছু খেতে পারছি না।’

মাহিমের বাবা মাসুম মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে সহপাঠীদের সঙ্গে খেলছিল। হঠাৎ মিজানুর ছেলেকে ডেকে নিয়ে প্রথমে লাঠি, পরে বাঁশ দিয়ে পেটান। এতে ছেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও কালশিটে পড়েছে। খবর পেয়ে দ্রুত ছেলেকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরপর আমি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। ছেলে এখনো ভয়ে মাঝে মাঝে কেঁপে উঠছে। বিনা অপরাধে আমার ছেলেকে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে। আমার সন্তানকে যে অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন, আমরা তাঁর বিচার চাই।’

তেঘরিয়া কিশলয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীকে এভাবে মারধর করা অন্যায়। আমাদের শিক্ষার্থী যদি কোনো অন্যায় করে থাকে তাহলে সে বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা যেত। কিন্তু সেটি না করে কোমলমতি শিশুকে নির্যাতন করা হয়েছে। বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অবগত করেছি। আমরা এ ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে জানতে মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন ব্যস্ত। পরে কথা বলব।’

ঢাকা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জুয়েল মোল্লা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?

আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।

২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।

নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।

৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ