৬ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি
Published: 23rd, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৬ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। তারা মৌখিকভাবে কুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন।
রোববার বিকেলে তারা রাজধানীর ‘যমুনায়’ গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই স্মারকলিপি দেন।
পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে না ফেরার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, খুলনা থেকে দুটি বাসে করে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড.
তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি দেখবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। তাদের বিশ্বাস, সরকার নিশ্চয়ই সংকটের সমাধান করবে। এর আগে সকাল ৮টায় কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৮০ জন দুটি বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা ছিল।
প্রতিনিধি দলটি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে শহীদ মিনারে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, বর্তমান কুয়েট ক্যাম্পাস সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ নয়। বিএনপি–ছাত্রদলের লোকজন তাদের অনরবত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। চারজনকে গ্রেপ্তার করে প্রশাসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আই ওয়াশ করতে চাইছে। যারা হামলা করেছে, তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তাদেরকে এখনও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে যাবে না।
খুলনা থেকে যাত্রা শুরুর আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসে তারা নিরাপত্তাহীন। এজন্য তাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে করে স্মারকলিপি জমা দিয়ে তারা নিরাপদ জায়গায় চলে যাবেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ফিরবেন না তারা। অনলাইনে কার্যক্রম চলবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক বলার চেষ্টা করছেন ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য। হামলাকারীরা স্পষ্ট এবং চিহ্নিত, কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের নাম, পরিচয়, ছবি বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছিলেন। এরপর থেকে ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে– কুয়েটের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা–কর্মচারীরা ভেতরে ও বাইরে কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না। থাকলে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে। ১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। জড়িতদের তালিকা শিক্ষার্থীরা দেবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কুয়েট ক্যাম্পাসের বাইরে পর্যাপ্ত সংখ্যক সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে হবে। ১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ কুয়েট কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা আহতদের তালিকা দেবে। ছাত্রদল ও বিএনপি কর্তৃক কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে মর্মে কুয়েট প্রশাসন থেকে বিবৃতি দিতে হবে। হামলার ঘটনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার সাথে সাথে উপাচার্য, উপ–উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে পদত্যাগ করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ম রকল প উপ চ র য র ঘটন য় অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় বিকেলে বৈঠকে বসছে কমিটি
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ পর্যালোচনায় আজ সোমবার বিকেল ৪টায় বৈঠকে বসছে এ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আজ বিকেল ৪টায় মিটিংয়ে বসছি। সেখানে তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করব। আমরা সুপারিশগুলো উপদেষ্টা পরিষদে তুলব। সরকারি কর্মচারী ভাইদের বলব, সরকারি কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে। আমাদের সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ পুনরায় বিবেচনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। অবশ্যই এটা পুনরায় বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মচারীরা বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন এমন কিছু করা হবে না। এজন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
গত ৪ জুন এ অধ্যাদেশ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব।