এক হালি লেবু না কিনে আপনি কমপক্ষে দুই কেজি আলু কিনতে পারবেন। এ ছাড়া একই টাকায় প্রায় তিন কেজি টমেটো কিনতে পারবেন; কিনতে পারবেন অন্তত একটি ফুলকপি কিংবা এক কেজি পেঁয়াজ।

রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব শাকসবজির দামের চিত্র পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে লেবুর চড়া দামের সঙ্গে এসব শাকসবজির দামের তুলনামূলক চিত্র পর্যালোচনা করা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উত্তরার বাসিন্দা ও চাকরিজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, সামনে পবিত্র রোজা আসছে। রোজায় বেশির ভাগ মধ্যবিত্ত পরিবারে লেবুর শরবত দিয়ে ইফতার করা হয়। কিন্তু এবার লেবুর বেশি দামের কারণে ইফতার থেকে লেবুর শরবত বাদ দিতে হবে। তিনি জানান, এখন শীতের শাকসবজির ভরা মৌসুম। তাই বাজারে শাকসবজির দাম কম। এ জন্য কিছুটা স্বস্তি এসেছে।

লেবুর দামে যা পাবেন

বাজারে লেবুর দাম বেশ চড়া। একটি ছোট আকারের লেবু কিনতে ১০ টাকা খরচ করতে হবে। এখন ৪০ টাকার কমে এক হালি লেবু পাওয়া যাচ্ছে না। পবিত্র রোজার আগেই লেবুর বাজার চড়া হয়ে গেছে। নানা জাতের এক হালি লেবুর দাম এখন ৪০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে। ফলে লেবুর ক্রেতাও কমেছে। আগামী সপ্তাহে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। রমজান মাসে ইফতারে লেবুর শরবত অন্যতম প্রধান পানীয়। ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার কাছে ইফতারে লেবুর শরবতের চাহিদা থাকে।

এক হালি লেবুর চেয়ে তুলনামূলকভাবে সস্তা আলু, টমেটো, ফুলকপি, সিম ইত্যাদি। বাজারে এখন এক কেজি আলুর দাম গড়পড়তায় ২০ টাকা। এক পাল্লা (৫ কেজি) আলু বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। আর টমেটোর কেজি এখন ১৫ থেকে ২০ টাকা। অন্যদিকে মাঝারি আকারের ফুলকপি মিলছে ৩০ টাকায়। পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকায় নেমেছে।

আজ সোমবার সকালে কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে এখন তিন জাতের লেবু বেশি মিলছে। আকারে বড় শরবতি লেবুর এক হালির দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা। একটির দাম পড়ে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। শরবতি লেবু কলম্বো লেবু নামেও পরিচিত। এই লেবুকে সিলেটের লেবুও বলেন অনেক বিক্রেতা।

আরেকটু কম দামে লেবু চান? তাহলে চোখ ফেলতে হবে ছোট আকারের কাগুজি লেবুর দিকে। কারওয়ান বাজারে এক হালি কাগুজি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। আরও কম দামে চাইলে এখন টাঙ্গাইলের এলাচি লেবুই ভরসা। এলাচি লেবুর দাম হালিপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা।

আজ সকালে কারওয়ান বাজারে এক পাল্লা ভালো মানের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়ছে ২০ টাকা। এক পাল্লা আলুর দাম ৯০ টাকা।

২০ বছর ধরে কারওয়ান বাজারে কাঁচামালের (সবজির ব্যবসা) করে কামাল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাই দাম চড়া। আড়তে এক পিস লেবু ৯ টাকার কমে মিলছে না। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ, রোজায় লেবুর চাহিদা আট থেকে দশ গুণ বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ভরা মৌসুমের শেষ পর্যায়ে থাকায় শীতের সবজি, বিশেষ করে টমেটো, শিম, ফুলকপি ইত্যাদির দাম বেশ কমেছে।

আজ সকাল রাজধানীর হজ ক্যাম্প এলাকার বাজার গিয়েও দেখা গেছে, লেবুর দাম বেশ চড়া। এই বাজারের এলাচি লেবুই বেশি। বিক্রেতারা এক হালি এলাচি লেবুর দাম হাঁকছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আবার শরবতি লেবুর দাম ১০০ টাকার কমে বিক্রি হচ্ছে না। ওই বাজারে মাঝারি আকারের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। তিন কেজি টমেটোর প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। আর এক কেজি শিমের দাম ৩০ টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক রওয় ন ব জ র শ কসবজ র ২০ ট ক ৩০ ট ক এক হ ল ইফত র ফ লকপ

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ