মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সত্য নাদেলা নিজের জীবন ও কর্মক্ষেত্রের নানা বিষয় অকপটে স্বীকার করার জন্য বেশ আলোচিত। সম্প্রতি ইউটিউবে ডারকেশ প্যাটেল চ্যানেলের পডকাস্টে অংশ নিয়ে নিজের জীবনে করা একটি বড় ভুলের কথা প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এনেছেন সত্য নাদেলা। শুধু ভুল স্বীকারই নয়, এই ভুলের কারণে মাইক্রোসফটের প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল বেশ বড় সাফল্য পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

২০১৪ সালে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সত্য নাদেলা দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে সময় সত্য নাদেলার ধারণা ছিল, ওয়েব–দুনিয়ার বিকেন্দ্রীকরণ হবে, ফলে ওয়েবসাইটনির্ভর সার্চ নিয়ে আর তেমন ব্যবসা হবে না; অর্থাৎ তিনি বুঝতে পারেননি ভবিষ্যতে সার্চই হবে অন্যতম মূল্যবান ব্যবসায়িক মডেল। আর তাই তিনি ওয়েব সার্চের বদলে অন্যান্য প্রযুক্তি উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন।

নিজের এই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে স্বীকার করে সত্য নাদেলা বলেন, ‘আমরা ওয়েব–দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক মডেলের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। আমরা সবাই ধরে নিয়েছিলাম ওয়েব–দুনিয়া নানাভাবে বিভক্ত হয়ে যাবে। কে ভেবেছিল, সার্চ–সেবাই ওয়েব–দুনিয়াতে শেষ পর্যন্ত বড় বিজয়ী হবে? তবে আমরা যা খেয়াল করিনি, গুগল তা করেছিল। আর তা খুব ভালোভাবে কার্যকর করেছে প্রতিষ্ঠানটি।’

আরও পড়ুনকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে চলা প্রতিযোগিতার ভবিষ্যৎ কী, জানালেন সত্য নাদেলা২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

মাইক্রোসফট কীভাবে সার্চ–সেবা নিয়ে ভুল করেছে, তা তুলে ধরে সত্য নাদেলা জানান, কোনো প্রযুক্তিগত পরিবর্তন সম্পর্কে জানা শুধু যথেষ্ট নয়, নতুন কোনো ব্যবসায়িক মডেলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া বেশি চ্যালেঞ্জিং। ব্যবসায়িক মডেলের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানো প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের চেয়ে কঠিন।

সত্য নাদেলা তাঁর কর্মজীবনে বেশ কয়েকটি বড় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। পুরোনো আমলের মেইনফ্রেম কম্পিউটার থেকে বর্তমানের ব্যক্তিগত কম্পিউটার যুগে প্রবেশের পাশাপাশি ক্লায়েন্ট-সার্ভার আর্কিটেকচারের উত্থান দেখেছেন তিনি। এ বিষয়ে সত্য নাদেলা বলেন, পেছনে ফিরে দেখলে বলতে পারি, আমি চারটি বড় পরিবর্তনের অংশ হয়েছি। একটি হচ্ছে ক্লায়েন্ট ও ক্লায়েন্ট সার্ভার। গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস ও এক্স৮৬ আর্কিটেকচারের জন্ম, যা মূলত আমাদের সার্ভার তৈরি করতে দেয়।

১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মাইক্রোসফট এ বছর ৫০ বছর পূর্তি পালন করছে। এ বিষয়ে সত্য বলেন, এটা বেশ আকর্ষণীয়। আমরা ৫০তম বছর পার করছি। আমি এই যাত্রা নিয়ে চিন্তা করছি। আমি মনে করি, দীর্ঘদিন টিকে থাকা কোনো একটি লক্ষ্য নয়; প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখাই গুরুত্বপূর্ণ। আমাকে ও আমাদের দুই হাজার কর্মীকে প্রতিদিন এমন কিছু করতে হবে, যা বিশ্বের জন্য দরকারি ও প্রাসঙ্গিক। আমরা বিভিন্ন কিছু বিকশিত হতে দেখছি, শুধু আজ নয়, আগামীকালের জন্য।
সূত্র: নিউজ১৮

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য ক ত গত

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকের প্রেমকাহিনির মঞ্চে ম্যাথুসের বিদায়ী সুর

* শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৬ টেস্টে বাংলাদেশের একটাই জয়। সেটি আবার শ্রীলঙ্কাতে। সেই জয় বাংলাদেশের শততম টেস্টে বলে আপনার তা খুব ভালোমতোই মনে থাকার কথা।

* টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ৬০০ ছাড়ানো একমাত্র স্কোরটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেটিও শ্রীলঙ্কাতে।

* টেস্টে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। হ্যাঁ, হ্যাঁ, সেটিও শ্রীলঙ্কাতেই।

শেষ দুটি আবার একে অন্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। দুটি একই টেস্টে। ২০১৩ সালে যে টেস্টে বাংলাদেশের ৬৩৮, সেটিতেই মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি। টানা ১২ টেস্টে হারার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ড্র-ও।

এই পুরোনো প্যাচাল খুব বেশি অপ্রাসঙ্গিক লাগবে না, যখন জানবেন ওই টেস্টটা হয়েছিল গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। পশ্চাৎপটে অতিকায় গল ফোর্টের পাথুরে কাঠামো আর দুই পাশে সাগর মিলিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের একটি। ২০০৪ সালে সুনামিতে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার পর পুনর্জন্ম নেওয়া গলের সেই মাঠেই আজ শুরু বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট। শুরু আসলে তিন ধরনের ক্রিকেটেই একে অন্যের নাড়ি-নক্ষত্র বুঝে নেওয়ার লড়াই। যাতে টেস্ট আছে, ওয়ানডে আছে, আছে টি-টোয়েন্টিও। দুই টেস্টের পর সাদা বলের সিরিজে তিনটি করে ম্যাচ।

আরও পড়ুনআমিনুল ইসলাম বুলবুলকে চিনতে হলে এই লেখাটা পড়তে হবে০২ জুন ২০২৫

দুই দল পরস্পরের খুব চেনা। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ২৬টি টেস্ট খেলেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ঘন ঘন দেখা হলে হৃদ্যতা যেমন হয়, তেমনি রেষারেষিও। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। গত কয়েক বছরে এই দুই দল মুখোমুখি হলেই মাঠে বা মাঠের বাইরে উত্তেজনার ফুলকি ছুটেছে। ‘টাইমড আউট’ হয়তো সেটির এক নম্বরে, এর বাইরেও নানা কিছু মিলে লঙ্কা-বাংলা এখন গনগনে এক দ্বৈরথের নাম।

গত চার বছর দুই দলের মধ্যে চতুর্থ টেস্ট সিরিজ। দুই দলের জন্যই রণকৌশল ঠিক করা তাই খুব সহজ হওয়ার কথা। বাংলাদেশ দলের জন্য হয়তো তা থাকছে না শ্রীলঙ্কা দলে নতুনের সমারোহে। ১৮ জনের দলের এক–তৃতীয়াংশই এখনো টেস্ট খেলার অপেক্ষায়। বাংলাদেশ দলেও কিছু পরিবর্তন আছে, তবে তা ধর্তব্যের মধ্যে নয়।

টেস্টের প্রস্তুতিতে গলে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল

সম্পর্কিত নিবন্ধ