নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কাউসার আহমেদ (২৬) নামের এক যুবককে বসতবাড়িতে ঢুকে মারধর করা হয়েছে। এসময় ভুক্তভোগীর মায়ের শরীরে হাত তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪ টার সময়ে (নাসিক) ১ নং ওয়ার্ডের বাতেনপাড়া এলাকায় এমন ঘটন ঘটেছে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার ভুক্তভোগী কাউসারের মা রওশন আরা বেগম (৫৫) বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযুক্তরা হলো: মিজমিজি তালতলা এলাকার বাসিন্দা হজরত মুন্সির ছেলে সোয়েব (২৬) ও সোহাগ (৩৫)। 

অভিযোগে তুলে ধরা হয়েছে, অভিযুক্ত সোয়েব ও তার বড় ভাই সোহাগের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে প্রবেশের একপর্যায়ে তার ছেলেকে ঘর থেকে ঢেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা করা হয়। এসময় ছেলেকে বাঁচাতে চেষ্টাকালে অভিযুক্তরা বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও ধাক্কা দেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সোহাগ সম্প্রতি এলাকায় নিজেকে বিএনপির সহযোগী সংগঠন সেচ্ছাসেবক দলের নেতা পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আ:লীগ শাসন আমলে রাজনৈতিকভাবে সুযোগ নেওয়া এই ব্যক্তির এমন পরিবর্তনে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। 

এদিকে স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতার ভাষ্যমতে, স্বৈরাচার আমলে কথিত এই সোহাগকে দেখেননি তারা। এ থানার সিনিয়র নেতাদেরকে বর্তমান সময়ের সুবিধাভোগী এই ব্যক্তির অতীত টেনে দেখার আহ্বানও জানান স্থানীয়রা।

অভিযোগের বাদী রওশন আরা বেগম জানান, হঠাৎ আমার বাসায় হজরতের দুই ছেলে তার অনেকগুলা লোক নিয়া এসে আমার ছেলেকে ঢেকে ঘর থেকে বের করে মারধর করে। আমি তাদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আমাকে ধাক্কা ও অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করা হয়। সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িতে ইটপাটকেলও মারে। 

এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব থাকা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বলেন, অভিযুক্তদের পিতা অটোরিকশা চুরি করেছে এমন খবর রটলে প্রধান অভিযুক্ত সোয়েবকে এসএমএস করেন ভুক্তভোগী কাউসার। তারা উভয়ে বন্ধু হোন বলে জেনেছি। কাউসার অভিযুক্ত সোয়েব তার পিতা সম্পর্কে এসএমএস করলে ক্ষিপ্ত হয়ে এই ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ য বক য বক ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে বসতবাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা ও প্রাননাশের হুমকি
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব