রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে। দু’দলেরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। নিয়ম রক্ষার ম্যাচেও হানা দিয়েছে বৃষ্টি। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় ৩টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে টস সম্ভব হয়নি। ৪টায় মাঠ পরিদর্শনের সময় নির্ধারণ করা থাকলেও রাওয়ালপিন্ডিতে বৃষ্টি বেড়েছে। আগামী এক ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত আসতে পারে ম্যাচ নিয়ে। ঠাণ্ডা বাতাসের মধ্যে খেলা শুরুর অপেক্ষায় থাকা দর্শকরা ধীরে ধীরে মাঠ ছাড়তে শুরু করেছে। গ্যালারিতে সমাগম কমছে।

এদিকে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করতে করতে ব্রডকাস্টার টিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের সহকারী কোচ আজহার মাহমুদ বলেছেন, পিন্ডির আবহাওয়া সম্পর্কে আমি কোনো অনুমান করতে পারি না। দেখে তো ভালো মনে হচ্ছে না। হয়তো খেলা শুরু হতেও পারে। কেউই জানে না আসলে।

এর আগে রাওয়ালপিন্ডিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ম্যাচেও দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সৌম্য সরকার, তানজিদ তামিম, নাজমুল শান্ত, মেহেদী মিরাজ, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলী, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান।   

পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ: উসমান খান, কামরান ঘুলাম, সৌদ শাকিল, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সালমান আঘা, তায়িব তাহির, খুশদিল শাহ, শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, আবরার আহমেদ, মোহাম্মদ হাসনাইন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান

১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।

কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!

দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।

কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।

আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।

অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।

এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।

একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।

বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান

সম্পর্কিত নিবন্ধ