গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন মারা যান। এর মধ্যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একই পরিবারের ৫ জন রয়েছেন।

তারা হলেন- ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক কাউসার, তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার, ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ, মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নুর। এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি জানিয়েছে নিহতের স্বজনেরা।

মোবারক কাউসারের ভাই আমীর হামজা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এক বছর হয়ে গেল বিচার পেলাম না। কোনো আউটপুট নেই। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলো, তারা আবার জামিনও পেয়েছেন।’’

গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ড ‘ন্যাচারাল ডিজাস্টার’ ছিল না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘ওটা ছিল মানবসৃষ্ট। ৪৬টা প্রাণ ঝরে গেল। কিন্তু, এখনো তদন্তই শেষ হলো না। কবে হবে, সেটাও কেউ বলতে পারছে না।’’

আমীর হামজা বলেন, ‘‘আমার ভাই ইতালি থাকতেন। ওই ঘটনার মাসখানেক আগে দেশে এসেছিলেন। মার্চে আবার চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার ফ্যামিলি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, যাওয়া আর হলো না। সবাই চলে গেছে না ফেরার দেশে।’’

সেই দিনের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘২৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ভাই ফোন দিয়ে বলে, কাল সকাল চলে আসিস। একসঙ্গে লাঞ্চ করব। এর কিছুক্ষণ পরেই আগুন লাগার খবর পাই। প্রথমে খুব একটা গুরুত্ব দিইনি। রাত ১২টার দিকে ভাবীর বোনের মেয়ে (মোবারক কাউসারের বাসায় থাকত) ফোন দিয়ে বলে, মামা তারা সবাই রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিল, এখনো কেউ বাসায় ফেরেনি। তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে বেইলি রোডে যাই। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে। সেখানে গিয়ে ভাই, ভাবী, ভাতিজা ও এক ভাতিজির লাশ পাই। শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে গিয়ে পাই আরেক ভাতিজির লাশ। এখনো চোখ বুজলে পাঁচ জনের লাশ চোখে ভাসে।’’

আমির হামজা বলেন, ‘‘চার ভাই-বোনের মধ্যে শুধু আমি দেশে থাকি। বড় ভাই, মেঝ ভাই (মোবারক কাউসার) আর বোন দেশের বাইরে থাকেন। এর মধ্যে, মেঝ ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল বাপ-ছেলের মতো। তিনি সবার কেয়ার করতেন, সাপোর্ট করতেন। তার কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে ভুলতে পারি না।’’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে এরকম হবে এটা কল্পনাতেও ভাবিনি। আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়ার দরকার। না হলে পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটবে। নতুন সরকার আসছে। তাদের প্রতি অনুরোধ, সুষ্ঠু বিচারটা করবেন।’’

এদিকে, সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মোবারক হোসেনের মা। আমীর হামজা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পর থেকে মা অনেক সময় অ্যাবসেন্স থাকেন। অ্যাবনরমাল হয়ে গেছেন অনেকটা।’’

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৪৬ জন মারা যান। জীবিত উদ্ধার করা হয় ৭৫ জনকে। নিহতদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ৮ শিশু। এ ঘটনায় রমনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। থানা পুলিশের পর মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।

ঢাকা/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আমি কারো সঙ্গে পাল্লা দিতে আসিনি: অপু বিশ্বাস

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা অপু বিশ্বাস। বিশ্ব বাবা দিবস উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগঘন ও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি। এ পোস্টে অপু জানান, আর কোনো ‘অসুস্থ প্রতিযোগিতায়’ নেই। বরং নিজের সন্তান, কাজ এবং শান্তিপূর্ণ জীবনের পথেই হাঁটতে চান এই অভিনেত্রী। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত নিজের কাজ ও ব্যক্তিজীবনের কিছু মুহূর্ত ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেন অপু বিশ্বাস। গতকাল (১৫ জুন) একটি স্ট্যাটাসের সঙ্গে সাবেক স্বামী শাকিব খান ও পুত্র আব্রাম খান জয়ের একটি ছবিও শেয়ার করেন। ছবির ক্যাপশনে লেখেন, “সন্তানের সুন্দর শৈশবের জন্য বাবা-মা হিসেবে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। এটা নিয়ে কেউ যদি অস্বস্তি বোধ করে, সেটা আমার দায় নয়।”

অন্য সাধারণ নারীর মতোই অপুর জীবন। এ তথ্য উল্লেখ করে অপু বিশ্বাস লেখেন, “আমি একজন মা, একজন অভিনেত্রী, একজন উদ্যোক্তা। ক্যামেরার বাইরে আমার জীবনটা অন্য সব নারীর মতোই—হাজারো কাজ, পরিকল্পনা আর স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা। কাউকে কিছু প্রমাণ করার ইচ্ছা নেই। জীবনের প্রতিটি অধ্যায় দর্শকদের সামনে কেটেছে। এখানে লুকোচুরি বা নাটকের কিছু নেই।”

অপু বিশ্বাসের দাবি, অসুস্থ কোনো প্রতিযোগিতায় নেই। তার ভাষায়, “অনেকদিন ধরেই দেখছি, আমার কোনো সাধারণ পারিবারিক পোস্টের পরেই কাউন্টার পোস্ট বা প্রচেষ্টা দেখা যায়। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই—আমি সেই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেই।”

কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অপু বিশ্বাস বলেন, “সম্মান অর্জন করতে হয় নিজের আচরণ দিয়ে, অন্যকে ছোট করে নয়। আমি কারো সঙ্গে পাল্লা দিতে আসিনি। নিজের জায়গাতেই স্বাচ্ছন্দ্যে আছি। যারা আমাকে ভালোবাসেন, পাশে থাকেন—আপনাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। আমি আপনাদের বিশ্বাস ভাঙতে চাই না। আর নিজের ব্যক্তিত্ব নষ্ট করে কারো সঙ্গে পা মেলাতে রাজি নই।”

অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর পাল্টাপাল্টি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আলোচনা চলছে। দুই নায়িকাই চিত্রনায়ক শাকিব খানের সন্তানদের মা হওয়ায় ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন স্ট্যাটাসে একে অপরকে লক্ষ্য করে মন্তব্য করছেন বলে অনেকের ধারণা।

অপু বিশ্বাস এবার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন। তার এই বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে এটি একটি পরিণত ও মর্যাদাপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ