Prothomalo:
2025-11-03@02:04:11 GMT

ইফতারসামগ্রীর দাম চড়া

Published: 2nd, March 2025 GMT

পবিত্র রমজান মাসে সারা দিন রোজা রাখার পর অনেকেই লেবুর শরবতে চুমুক দিয়ে গলা ভেজাতে চান। বাজারে তাই লেবুর চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।

সপ্তাহ দুয়েক আগে ঢাকার বাজার থেকে এক হালি লেবু আকারভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকায় কেনা যেত। গতকাল শনিবার ঢাকার চারটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লেবু বিক্রি হচ্ছে হালিপ্রতি ৫০-৮০ টাকা দরে।

লেবুর মতো দাম বেড়েছে শসা, লম্বা বেগুন এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফলের। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, ইফতারসামগ্রীর দাম চড়া, যা সাধারণ মানুষের খরচ বাড়িয়েছে।

নিত্যপণ্যের মধ্যে চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, আলু, আটা ইত্যাদির দাম স্থিতিশীল আছে। বিশেষ করে মৌসুমের কারণে পেঁয়াজ ও আলুর দাম অনেকটাই কম। চিনির সরবরাহ ভালো, দাম বাড়েনি। বরং গত বছরের তুলনায় দাম এবার কম। তবে সংকট চলছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। এই সুযোগে খোলা তেলের দাম নির্ধারিত দরের চেয়ে লিটারে ২৮-৩৩ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

চাল ও ডালের দাম আগে থেকেই চড়া। মাছ-মাংসের বাজারেও স্বস্তি নেই।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সায়মা ইসলাম কৃষি মার্কেটে কেনাকাটা করছিলেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সারা দিন রোজা থেকে ইফতারে পরিবারের সদস্যরা একটু লেবুর শরবত আর ফল খেতে চান। ফল আর সাধারণ মানুষের নাগালে নেই। তিনি বলেন, ‘দুদিন আগে দোকানিকে বোতলের সয়াবিন তেল দেওয়ার জন্য বলে রেখেছিলাম। আজ (শনিবার) এসে দেখি, তেল নেই। দোকানদার আরও এক দিন সময় চাইল।’

দাম বেড়েছে যেসব পণ্যের

ইফতারে বেগুনি, পেঁয়াজুর মতো ভাজাপোড়া খেতে পছন্দ করেন অনেকে। প্রতিবছরই রোজায় বেগুনের দাম বাড়ে। এবারও বেড়েছে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল মার্কেট, আগারগাঁওয়ের তালতলা বাজার এবং কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত তিন দিনে খুচরা পর্যায়ে লম্বা বেগুনের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এবার অবশ্য বেগুন ‘শতক’ হাঁকায়নি।

শসার দামও কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। গতকাল এক কেজি দেশি শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর হাইব্রিড শসা কেনা গেছে ৫০-৬০ টাকা দরে। তবে কাঁচা মরিচের দাম কম। কেজি ৬০-৮০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েক দিন পরই বেগুন ও শসার দাম কমে যাবে। প্রতিবছরই রোজার প্রথম কয়েক দিন দাম বেশি থাকে, পরে কমে যায়।

বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে

২১০-২২০ টাকা দরে। আর কেজিতে ৩০ টাকার মতো বেড়ে দেশি গরুর মাংস ৭৮০ টাকার আশপাশের দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

মাছের দামও বেড়েছে। খাল, বিল, নদী-নালার মাছ বেলে, পোয়া, বোয়াল, আইড়, শোল ইত্যাদি ৫০০ টাকা কেজির নিচে পাওয়া কঠিন। তাজা ও আকারে বড় হলে দাম হাঁকা হয় ৭০০-৮০০ টাকা।

বাজারে মোটামুটি স্থিতিশীল থাকে তেলাপিয়া, পাঙাশ, চাষের কইয়ের মতো মাছের দাম। এগুলোর দরও কেজিতে ২০ টাকার মতো বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন বিক্রেতারা।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে গতকাল নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দামের একটি তুলনামূলক মূল্যতালিকা দেওয়া হয়। তাতে দেখা যায়, গত বছরের রমজানের সময়ের তুলনায় এবার সব ধরনের চালের দাম ৬ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ভোজ্যতেলের দামও ১১-২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। তবে গত রমজানের তুলনায় এবার আটা, ময়দা, চিনি, আলু, টমেটো, আদা ও পেঁয়াজের দাম কমেছে।

ইফতারে মুড়ি লাগেই। মুড়ির দাম এবার বাড়েনি। সাধারণ মানের মুড়ি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর হাতে ভাজা মুড়ির দাম রাখা হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

সরকার এবার ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুরসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যে শুল্ক ছাড় দেয়। এর সুফল পাওয়া যায় চিনি ও খেজুরের বাজারে। তবে সয়াবিন তেলে সুফল পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বলেন, গত রমজানের চেয়ে এবার বেশির ভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে এসেছে, কমেছে। দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পুরো রমজানে অন্তর্বর্তী সরকারের নজর থাকবে।

প্রতিটি বিষয় পরিবীক্ষণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আশা করছি সাপ্লাই (সরবরাহ) পরিস্থিতি সামনে আরও ভালো হবে। সে ক্ষেত্রে আশা করা যায়, দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।’

ফলের দাম চড়া

রোজায় আপেল, নাশপাতি, আঙুর, কমলা, মাল্টা প্রভৃতি ফলের চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু বাড়তি শুল্ক-করের কারণে এ বছর বিদেশি ফল আমদানি কমে গেছে। সর্বশেষ গত মাসে ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ১০০ টাকার ফল আমদানি করলে ১৩৬ টাকা শুল্ক-কর দিতে হয়। ফলে ভোক্তাদেরও বেশি দাম দিয়ে ফল কিনতে হচ্ছে। আর রমজানে চাহিদা বাড়ায় দাম আরও কিছুটা বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের ফলের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত তিন-চার দিনের মধ্যে প্রায় সব ধরনের ফলের দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যেমন মাল্টা। গতকাল বাজারে এখন এক কেজি মাল্টা বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩২০ টাকায়, যা তিন দিন আগেও ২৭০-৩০০ টাকায় কেনা যেত। এভাবে কমলা, আপেল, আঙুর, আনারের মতো বিদেশি ফলের দাম কেজিতে ২০-৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

বিদেশি ফলের চড়া দামের সুযোগে বেড়েছে দেশি ফলের দামও। যেমন পেয়ারা। গতকাল ফলটি ১০০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও এটি ৭০-১০০ টাকায় কেনা যেত। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির কলা, বরই, পাকা পেঁপে ও আনারসের দামও কমবেশি বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারের ফল বিক্রেতা আরশাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রোজায় বাড়তি চাহিদার কারণে ফলের দাম আরও কিছুটা বেড়েছে। এটা হয়তো কয়েক দিন পরে কিছুটা কমবে। কিন্তু সারা বছর যে দাম থাকে, তা–ও অনেক বেশি। কারণ, পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনতে হয়।

ফল আমদানিকারকেরা অনেক দিন ধরেই বলছেন, উচ্চ শুল্ক–কর ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ফল আমদানির খরচ অনেক বেশি পড়ে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফল আমদ ন ফল র দ ম পর য য় ২০ ট ক ৮০ ট ক রমজ ন গতক ল ধরন র ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ