খুলনায় রমজানের শুরুতেই বেড়েছে ইফতার ও সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। 

ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চাল, ডাল, ভোজ্য সয়াবিনের দাম। দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা সাঁটানো ও বাজার দর মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকলেও কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। 

রমজান শুরুর আগেই বেড়েছে ইফতার সামগ্রীর দাম। ইফতারের অন্যতম চাহিদায় রয়েছে বেগুন, শসা ও লেবু। চাহিদা বিবেচনায় এই তিনটি পণ্যের দামও দ্বিগুণ হয়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য।

নগরীর কেসিসির সন্ধ্যা বাজারে প্রকার ভেদে বেগুন কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। শসা কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়। লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজার, রুপসা বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার ঘুরে জানা যায়, ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি কেজি প্রতি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, লেয়ার ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শীতকালীন সিম ৩০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, খিরাই ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, প্রতিহালি কাঁচকলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ আড়াই কেজি ১০০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, আলু চার কেজি একশ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শীতকালীন সিম ৩০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, ক্ষিরই ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আলু ২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, চায়না রসুন ২৩৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়। 

এদিকে, মাসের পর মাস চড়া দামে চলছে চালের বাজার। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫৪ টাকা, আঠাশ বালাম ৬৫ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭৫ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬৫ টাকা, বাসমতি ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা, কালোজিরা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে কমছে না ভোজ্য সয়াবিন তেলের দাম। বোতলজাত ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা সয়াবিন (৫লিটার) বিক্রি হচ্ছে ৮৭৫ টাকা দরে। যা লিটার প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা। লুজ সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। খুচরা বাজারে প্রতিলিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা দরে। কমছে না মশুর ডালের দাম। খুচরা বাজার প্রতিকেজি মশুর ডাল (সরু) ১৪০ টাকা, মশুর ডাল (মোটা) ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে, মুরগি বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে। কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা, লেয়ার ২৮০ টাকা, কক ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে গরুর মাংস কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে। 

কেসিসি সুপার মার্কেটে আসা ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সবজির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাল, ডাল, তেল, মুরগিসহ বেশকিছু পণ্য ও জিনিস বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। রমজানেই দাম বাড়ানো হলো জিনিস পত্রের। অথচ কেউ দেখছে না।” 

নগরীর সন্ধ্যা বাজারে আসা কলেজ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “সবজির দাম বেড়েই চলেছে। চাল, ডাল, সয়াবিন তেলের দাম কোনভাবেই কমছে না।”

তাসলিমা বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, “এ বছর রমজানে বাজার স্বাভাবিক থাকবে ভাবছিলাম কিন্তু চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে দামও বেড়ে যাচ্ছে।”

সন্ধ্যা বাজারের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, “খামার থেকে মুরগি কম সরবরাহ হওয়ার কারণে এখন দাম একটু বাড়তি।” 

অপর বিক্রেতা মফিজুর রহমান জানান, দুদিনের ব্যবধানে আড়তে পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। সরবরাহ আগের মত রয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকার কারণে আড়ৎদাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সাধারণ ক্রেতার কাছে জবাবদিহিতার শিকার হচ্ছি।

ঢাকা/নুরুজ্জামানান/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরবর হ ৮০ ট ক ৩০ ট ক ২০ ট ক ৪০ ট ক রমজ ন নগর র সবজ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ