এবার জিনিসপত্রের দাম গতবারের চেয়ে কম: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 2nd, March 2025 GMT
রমজানে অন্যান্য বছরের ন্যায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “এটা আপনাদের বলতে বা স্বীকার করতে হবে যে, এবার জিনিসপত্রের দাম গতবারের চেয়ে কম রয়েছে। আর অভিযান না চালিয়েও যদি জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সেটা তো আরো ভালো।”
উপদেষ্টা রবিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর পুলিশ লাইনে অবস্থিত পাবলিক ম্যানেজমেন্ট অর্ডারের ব্যারাকগুলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম না বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
আরো পড়ুন:
আইন-শৃঙ্খলার এত নাজুক অবস্থা স্মরণকালে নেই: জিএম কাদের
পূজায় বরাদ্দ ৪ কোটি টাকা, দশমী পর্যন্ত থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
উপদেষ্টা বলেন, “অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতেও রমজানে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে রাখা হয়। আর আমাদের দেশে উল্টোটা হয়। রমজানের সময় ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়।”
লালমাটিয়ায় দুই নারীর ওপর হামলার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আমি যতটুকু জেনেছি, উনারা নাকি সিগারেট খাচ্ছিলো, কিছু লোক সেখান দিয়ে নামাজ পড়তে যাচ্ছিল। উনারা (লোকেরা) বাধা দেওয়ায় তাদের ওপর চা ছুঁড়ে মেরেছিল।”
তিনি বলেন, “পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ। তাই সবাইকে অনুরোধ করব, কেউ যেন উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান না করে। রোজার সময় সবাইকে একটু সংযমী হতে হবে। রমজানে দিনের বেলায় বাইরে যেন কেউ খাবার না খায়। এটা করতে পারলে রোজাদারদের সম্মান করা হয়।”
উপদেষ্টা এর আগে ‘পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম)’ এর ব্যারাকসমূহ পরিদর্শন করেন। তিনি তাদের বাসস্থান ঘুরে দেখেন ও খাবারের মান বিশেষ করে বিভিন্ন ইফতারসামগ্রী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন। খাবারের মানের ব্যাপারে যেন কোনো আপস না করা হয়-এ বিষয়ে তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
উপদেষ্টা এ সময় জানান, রমজানের সময় ব্যারাকের পুলিশ সদস্যদের জন্য প্রাপ্য (নির্দিষ্টকৃত) খাবারের চেয়ে বেশি খাবার দেওয়া হয়। ব্যারাকসমূহের রান্নাঘরের গ্যাস লাইনে পর্যাপ্ত প্রেসার বা চাপ না থাকায় রান্নায় সমস্যা হচ্ছে বিধায় উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে জ্বালানি উপদেষ্টাকে বিষয়টি অবহিত করেন ও সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।
ঢাকা/এমআর/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন জ ন সপত র র দ ম রমজ ন র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান