বনানীতে ফুডপ্যান্ডার গ্র্যান্ড ইফতার বাজার শুরু
Published: 4th, March 2025 GMT
ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত রেস্টুরেন্টের অংশগ্রহণে তৃতীয়বারের মতো রাজধানীর বনানীতে ‘গ্র্যান্ড ইফতার বাজার’ আয়োজন করেছে অনলাইন ফুড ও গ্রোসারি ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম ফুডপ্যান্ডা। গতকাল সোমবার বনানীর সোয়াট ফিল্ডে প্রধান অতিথি হিসেবে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আম্বারীন রেজা এবং জুবায়ের বি এ সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
রমজান মাসজুড়েই বনানীর সোয়াট ফিল্ডে এ আয়োজন চলবে। এ আয়োজনে ফুডপ্যান্ডা অ্যাপের মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের ইফতারসামগ্রীর পাশাপাশি দেশের নামকরা ও জনপ্রিয় বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের খাবার কেনার সুযোগ মিলবে। আয়োজনস্থলে ডাইন-ইনের সুবিধাও রয়েছে। ফুডপ্যান্ডা অ্যাপে দুপুর দুইটা থেকে এ উৎসবে অংশ নেওয়া রেস্টুরেন্ট থেকে অর্ডার করা যাবে।
ফুডপ্যান্ডার এ আয়োজনে ডমিনোজ, টেকআউট, দোসা এক্সপ্রেস, জয়পুর সুইটস, বার-বি-কিউ টুনাইট, বিউটি লাচ্ছি, চিকেন বাজ, ডিসেন্ট পেস্ট্রি শপ, মোস্তাকিম কাবাব, রাতের কাবাব, তাজিন-নাওয়াবি ক্যুইজিন, তার্কা, ট্রাই স্টেট ইটারি, ইফতারওয়ালা, ওয়াফেল টাইম ও মিঠাইওয়ালার মতো নতুন ও পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় সব রেস্তোরাঁ অংশ নিয়েছে। উৎসব থেকে খাবার কেনার সময় বিশেষ ছাড়ও পাবেন গ্রাহকেরা।
দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে ফুডপ্যান্ডা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুল আলম বলেন, উদ্যোক্তাদের বিকাশ, তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আনার পাশাপাশি দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণেও কাজ করে যাচ্ছে ফুডপ্যান্ডা।
ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুবায়ের বি এ সিদ্দিকী বলেন, ‘গ্র্যান্ড ইফতার বাজার আয়োজনে আমরা পুরান ঢাকা এবং নতুন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার কেনার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করেছি।’
ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আম্বারীন রেজা বলেন, এ উদ্যোগের ফলে গ্রাহকের সঙ্গে যুক্ত হওয়া, ঐতিহ্য উদ্যাপন করা এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সহায়তা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ফুডপ্যান্ডার এই ইফতার আয়োজনে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্ত হয়েছে সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স)। এ ছাড়া লাইফবয় হ্যান্ডওয়াশিং পার্টনার, সেভেন আপ রিফ্রেশমেন্ট পার্টনার, পোলার আইসক্রিম পার্টনার হিসেবে যুক্ত রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।