বরগুনার তালতলী উপজেলায় মাদ্রাসা থেকে পালানোয় কন্যাশিশুকে মা আসমা বেগম গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিয়েছেন এবং বাবা কামরুজ্জামান সিকদার গাছের সঙ্গে বেঁধে মেয়েকে বেধড়ক মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার বিকেলে উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের সওদাগরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার শিশুটির নাম লামিয়া (৯)। সে তালতলী উপজেলার সওদাগরপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামান সিকদার ও আসমা বেগম দম্পতির মেয়ে। লামিয়া তালতলী শহরের আয়শা সিদ্দিকা মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।

লামিয়ার মা আসমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী প্রায়ই মেয়েকে মারধর করে। আজকে মারধর শুরু করলে আমি ক্ষুব্ধ হয়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছি। এটা আমার অন্যায় হয়েছে। আমি বুঝতে পারিনি, এমন অবস্থা হবে।’

স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকালে লামিয়া তার মাদ্রাসার শিক্ষকদের না বলে বাড়ি চলে যায়। দুপুরে শিক্ষকেরা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার কথা তার বাবা কামরুজ্জামানকে জানান। এতে কামরুজ্জামান ক্ষুব্ধ হয়ে লামিয়াকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। পরে শিশুটির মা আসমা বেগম মেয়েকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেন। এতে শিশুটির শরীর ঝলসে গেছে ও বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। লামিয়ার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার মনিরুল ইসলাম বলেন, শিশুটির শরীরের দুটি স্থানে খুন্তির ছ্যাঁকার চিহ্ন দেখা গেছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে চিকিৎসা দিয়ে তার মায়ের কাছে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শাহজালাল।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, শিশুটির চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। শিশু নির্যাতনের অপরাধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না, ওসিকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো অভিযোগ না পাওয়া যায়, তবু শিশুটির মা-বাবাকে ডেকে পরবর্তী সময়ে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয় সতর্ক করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গরম খ ন ত উপজ ল ত লতল

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল

ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।

বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।

প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।

জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে

জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সাড়ে চারটায় জামায়াত

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলন

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।

একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ