ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে ঘুমন্ত স্কুলছাত্রের মৃত্যু
Published: 9th, March 2025 GMT
রাত তখন দেড়টা। দ্বিতল ভবনের দোতলার একটি কক্ষে পরিবারের অন্য কয়েকজনের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মুহাম্মদ ফয়সাল। ওই সময়ে পাকা ওই ভবনের সঙ্গে লাগানো নিচে আরেকটি কাঁচা রান্নাঘরে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকলে সবাই বের হতে পারলেও দোতলায় আটকা পড়ে স্কুলছাত্র ফয়সাল। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা যায় সে।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টায় ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম ডাবুয়া গ্রামের গণি চৌধুরীর বাড়িতে। নিহত ফয়সাল ওই এলাকার প্রবাসী রহমত উল্লাহর ছেলে। সে সদরের রাউজান ছালামত উল্লাহ উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন জানান, ফয়সালকে উদ্ধারে স্বজন ও এলাকার বাসিন্দারা প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। কেউ ভবনের পাশে সিঁড়ি লাগিয়ে জানালা ভাঙার চেষ্টা করেছেন, আবার কেউ দেয়াল বেয়ে ছাদে উঠেও উদ্ধারের চেষ্টা করেন। শেষে পাশের ঘরের দেয়াল ভেঙে ফয়সালকে উদ্ধার করেন লোকজন।
উদ্ধারের পর রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া ফয়সালকে উদ্ধার করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন তার চাচা হাবিব উল্লাহ ও দাদি শাহানু বেগম।
ছেলের হঠাৎ মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আজ রোববার দুপুর ১২টায় দেশে ছুটে আসেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী রহমত উল্লাহ। এ সময় তাঁর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশ।
রাউজান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত দেড়টায় পাকা দ্বিতল ভবনটির নিচে আরেকটি কাঁচা রান্নাঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়। রান্নাঘরে সংরক্ষিত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পুড়ে যায়। এ ঘটনায় পাশের আরও দুটি কাঁচা ঘর পুড়ে গেছে।
রাউজান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে রাউজান ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে ততক্ষণে একটি পাকা ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্কুলছাত্র ফয়সাল ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা যায়। এ ছাড়া এ বাড়ির মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’