রাত তখন দেড়টা। দ্বিতল ভবনের দোতলার একটি কক্ষে পরিবারের অন্য কয়েকজনের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মুহাম্মদ ফয়সাল। ওই সময়ে পাকা ওই ভবনের সঙ্গে লাগানো নিচে আরেকটি কাঁচা রান্নাঘরে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকলে সবাই বের হতে পারলেও দোতলায় আটকা পড়ে স্কুলছাত্র ফয়সাল। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা যায় সে।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টায় ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম ডাবুয়া গ্রামের গণি চৌধুরীর বাড়িতে। নিহত ফয়সাল ওই এলাকার প্রবাসী রহমত উল্লাহর ছেলে। সে সদরের রাউজান ছালামত উল্লাহ উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন জানান, ফয়সালকে উদ্ধারে স্বজন ও এলাকার বাসিন্দারা প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। কেউ ভবনের পাশে সিঁড়ি লাগিয়ে জানালা ভাঙার চেষ্টা করেছেন, আবার কেউ দেয়াল বেয়ে ছাদে উঠেও উদ্ধারের চেষ্টা করেন। শেষে পাশের ঘরের দেয়াল ভেঙে ফয়সালকে উদ্ধার করেন লোকজন।

উদ্ধারের পর রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া ফয়সালকে উদ্ধার করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন তার চাচা হাবিব উল্লাহ ও দাদি শাহানু বেগম।

ছেলের হঠাৎ মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আজ রোববার দুপুর ১২টায় দেশে ছুটে আসেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী রহমত উল্লাহ। এ সময় তাঁর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশ।

রাউজান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত দেড়টায় পাকা দ্বিতল ভবনটির নিচে আরেকটি কাঁচা রান্নাঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়। রান্নাঘরে সংরক্ষিত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পুড়ে যায়। এ ঘটনায় পাশের আরও দুটি কাঁচা ঘর পুড়ে গেছে।

রাউজান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে রাউজান ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে ততক্ষণে একটি পাকা ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্কুলছাত্র ফয়সাল ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা যায়। এ ছাড়া এ বাড়ির মো.

মুছা, মো. ইউসুফ ও মো. ইদ্রিসের কাঁচা বসতঘর পুড়ে ছাই হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উল ল হ ফয়স ল ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসুতে হল সংসদ নির্বাচনে ৩৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ৩৯ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে মেয়েদের ৬টি হলে ৩৬ জন এবং ছেলেদের ১টি হলে ৩ জন রয়েছেন। এছাড়া, মেয়েদের ৪টি হলে ১টি করে পদে কেউ মনোনয়ন উত্তোলন না করায় পদগুলো ফাঁকা থাকছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মো. সেতাউর রহমান এ তথ্য জানান। 

আরো পড়ুন:

রাকসু: ম্যানুয়াল ভোট গণনাসহ ১২ দাবি ছাত্রদলসহ ২ প্যানেলের

রাকসু নির্বাচন: শেষ দিনে ছাত্রদল নেতার প্রার্থিতা প্রত্যাহার

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের মধ্যে বিজয়-২৪ হলে ৩ জন, মন্নুজান হলে ১ জন, রোকেয়া হলে ৬ জন, তাপসী রাবেয়া হলে ৩ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ১০ জন, রহমতুন্নেসা হলে ৯ জন এবং জুলাই-৩৬ হলে ৭ জন রয়েছেন।

এছাড়া, বেগম খালেদা জিয়া হলে সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে একজন এবং রোকেয়া, জুলাই-৩৬ ও রহমতুন্নেসা হলে নির্বাহী সদস্য পদে ১টি করে ৩টিসহ মোট ৪টি পদে কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। ফলে, পদগুলো ফাঁকা থাকবে।

‎পদ ফাঁকা থাকার বিষয়ে রাকসু, হল ছাত্র সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মো. সেতাউর রহমান বলেন, “যে পদগুলো ফাঁকা আছে, সেগুলো ছাড়াই হল সংসদ চলবে। অন্য কোনোভাবে সেগুলো পূরণ করার উপায় নেই।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৯০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৪৮ জন, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ৫৮ জন ও ১৭টি আবাসিক হলে ৫৯৭ জন রয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সংসদে সহ-সভাপতি ভিপি পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৩ জন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া, ১৭টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ৬১, জিএস পদে ৫৮ জন ও এজিএস পদে ৫৭ জন রয়েছেন। ‎এদের মধ্যে মেয়েদের ৬টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ১৬ জন, জিএস পদেও ১৬ জন ও এজিএস পদে ১৫ জন লড়ছেন।

ঢাকা/ফাহিম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাকসুতে হল সংসদ নির্বাচনে ৩৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত