দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্পেশাল মোবাইল কোর্ট। 

রবিবার (৯ মার্চ) জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানমের নির্দেশনায় নগরীর কাজীর দেউড়ি বাজার ও চকবাজার-এ এই অভিযান পরিচালিত হয়। 

কাজীর দেউড়ি বাজার-এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), বাকলিয়া সার্কেল এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা আক্তার কণা। অভিযান চলাকালে সয়াবিন তেল, খেজুর, ডিম, ফলমূলসহ বিভিন্ন পণ্যের বাজার পরিদর্শন করা হয়। 

এসময় ভোজ্যতেল ধার্যকৃত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় করা এবং বিএসটিআইয়ের অনুমোদন বিহীন পণ্য বিক্রয়, পণ্যের মোড়ক ঠিকমতো না থাকার অভিযোগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে মোট ৩টি মামলায় মোট ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

এসময় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যবৃন্দ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

একই দিনে মহানগরীর চকবাজার কাঁচা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), সদর সার্কেল এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মাহমুদ ডালিম। অভিযান চলাকালে ওজনে কারচুপি ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার অভিযোগে ওজন ও পরিমাণ মানদণ্ড আইনে ৫টি মামলায় মোট ছয় হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রির দোকানসমূহে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয় এবং মজুদদারি রোধে সকল বিক্রেতাকে সতর্ক করা হয়। বাজার মনিটরিং টাস্কফোর্সের নিয়মিত মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম পুরো রমজান মাসব্যাপী চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।

ঢাকা/রেজাউল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ