জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতার পর দেশ কখনো জাতীয়তাবাদ, কখনো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, আবার কখনো সমাজতান্ত্রিক আদর্শের মাধ্যমে শাসিত হয়েছে। তাঁর মতে, মূলত কোরআন দিয়ে দেশ শাসন না হওয়ার কারণে দেশে ঘুষ, দুর্নীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। দেশকে অপশাসন-দুঃশাসনমুক্ত করতে হলে দেশকে ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে মিরপুরের কাফরুলে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

জামায়াত কোরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে দুর্নীতি-দুঃশাসনমুক্ত করার লক্ষ্যে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘দেশে এমন লোকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে হবে, যাঁরা আল্লাহকে ভয় পান। সে বৈশিষ্ট্যের লোক তৈরির জন্যই আল্লাহ আমাদের রমজানের মতো নিয়ামত দান করেছেন। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আমাদের সবাইকে ইসলামের ছায়াতলেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দলমত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান জামায়াতের আমির।

জামায়াতের কাফরুল থানা আমির রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি আশিকুর রহমানের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মুসা ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শহিদুল্লাহ, শুরা সদস্য আবদুল মতিন খান ও আহসান হাবিব, থানা নায়েবে আমির আলাউদ্দিন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন র আম র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ