একটি গোষ্ঠী দেশে অস্থিরতার মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলবাজমুক্ত করতে হলে ইসলামি সমাজ বিনির্মাণ করতে হবে।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বকশীবাজারের কারা কনভেনশন হলে জামায়াতের চকবাজার থানা আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু একটি গোষ্ঠী চাইছে এখনই নির্বাচন দিতে। তাদের দাবি হচ্ছে, সংস্কারের কোনো দরকার নাই, নির্বাচন দাও। আমরা ক্ষমতায় যাই।’

যারা বলে ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবে, তারা ক্ষমতায় থাকতে কী করেছে—এমন প্রশ্ন করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণকে আর ধোঁকা দেওয়া যাবে না। বিশ্বায়নের যুগে মানুষ এখন সচেতন। মানুষ বাস্তবতা বোঝে। তাই মানুষ যেভাবে চায়, সেভাবেই রাজনীতি করা দরকার।

গোলাম পরওয়ার বলেন, কোরআনের শাসন ছাড়া সমাজ থেকে অন্যায় দূর হবে না। রাষ্ট্র পরিচালনায় আল্লাহর আইন না থাকলে সমাজে অপরাধ ক্রমেই বাড়বে। যেটি বিগত ৫৪ বছরে দেখা গেছে এবং এখনো দেখা যাচ্ছে। মানুষের তৈরি আইনে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি, হবেও না।

চকবাজার দক্ষিণ থানা জামায়াতের আমির মো.

আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং চকবাজার পশ্চিম থানার আমির আবুল হোসাইনের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য আবদুর রহমান প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র ক ষমত য়

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ