আলামত জব্দের অনুমতি পেলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
Published: 13th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আলামত জব্দের অনুমতি পেয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে আলামত জব্দের জন্য রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন।
আবেদনের শুনানি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এস এম মইনুল করিম। তিনি বলেন, আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা রংপুরে চলমান। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে আবেদন করেছেন। ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে তিনি শুনানি করেছেন।
মইনুল করিম আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত প্রতিনিধিদল এর আগে রংপুরে গিয়ে বিভিন্ন জনের সাক্ষ্য নিয়েছে। আজ আলামত জব্দের অনুমতির মাধ্যমে মামলার তদন্তে আরেক ধাপ অগ্রগতি হলো। প্রয়োজনে জব্দ করা আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা করে শিগগির মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আবু সাঈদ হত্যার পর পুলিশ বাদী হয়ে তাজহাট থানায় একটি মামলা করে। এরপর শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে গত বছরের ১৯ আগস্ট রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন আদালতে হত্যা মামলা করেন শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী। মামলা দুটির তদন্ত করছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রংপুরের পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলীর করা মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী রোকনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। তাঁরা শুনানিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আলামত জব্দের পক্ষে বলেছেন। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত গতি পাবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছিল, সেই সময় গত বছরের ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন পার্ক মোড় এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হাজারো মানুষ। গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে বেপরোয়াভাবে গুলি করেছে পুলিশ। তিনি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫