পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠানের মঞ্চে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন খানের উপস্থিত নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। গত বুধবার বিকেলে উপজেলার ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিলে এ ঘটনা ঘটে। 
আনোয়ার হোসেন খান মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পটুয়াখালী জেলা কমিটির সদস্য। এছাড়া তিনি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দেউলী সুবিদখালি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেউলি সুবিদখালী ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি আয়োজিত এ ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাবুদ্দিন নান্নু। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশতাক আহমেদ পিনু, জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন। ইফতার মাহফিলের আগে আলোচনা সভায় মঞ্চের পেছনের সারিতে বসা ছিলেন আনোয়ার হোসেন খান।
এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো.

জাহাঙ্গীর আলম ফরাজি বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। ১৭টি বছর যাদের অত্যাচার-নির্যাতনে আমরা এলাকায় থাকতে পারিনি, রাজনীতি করতে পারিনি–আজ তাদের কোলে বসিয়ে ইফতার করছি।’ তিনি আরও বলেন, আনোয়ার হোসেন খান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা। বিএনপির কতিপয় নেতা তাদের স্বার্থে এবং অনুষ্ঠানের অর্থ জোগান দেওয়ায় আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জানানো হবে। 
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সাহাবুদ্দিন নান্নুর দাবি, আনোয়ার খানকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তিনি বিনা দাওয়াতে কীভাবে ও কখন ঢুকে পড়েছেন তা দেখিনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে কে বা কারা তাকে দাওয়াত দিয়েছেন। 
তবে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন খান বলছেন, ‘দাওয়াত দিয়েছেন তারা, তাই গিয়েছিলাম। না গেলেও তো আবার দোষ ধরে বলতো চেয়ারম্যান আসেননি।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র স ইফত র ম আওয় ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ