দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাতীয় দলে ফিরেছিলেন নেইমার জুনিয়র। কিন্তু ভাগ্য যেন মুখ ফিরিয়েই রেখেছে তার দিকে। ইনজুরির কারণেই আবারও ছিটকে গেলেন ব্রাজিল স্কোয়াড থেকে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এই খবর বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে সেলেসাওদের জন্য।

গত ৬ মার্চ ঘোষিত ২৩ সদস্যের দলে নাম ছিল নেইমারের। ১৬ মাস আগে উরুগুয়ের বিপক্ষে হাঁটুতে গুরুতর চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান তিনি। সেই সময়টায় অস্ত্রোপচার ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় তাকে। দীর্ঘ বিরতির পর জানুয়ারিতে ফিরে যান নিজের শৈশবের ক্লাব সান্তোসে। সেখান থেকে নিজেকে প্রমাণ করে জায়গা করে নিয়েছিলেন জাতীয় দলে।

তবে ফিরেও খেলা হচ্ছে না তার। নতুন করে উরুতে চোট পেয়ে আবারও ছিটকে গেলেন নেইমার। পাউলিস্তা চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে সান্তোসের একাদশে ছিলেন না তিনি, করিন্থিয়াসের বিপক্ষে হেরেও যায় দলটি। এরপরই জানা যায় তার ইনজুরির কথা। যদিও তখন গুরুতর কিছু মনে হয়নি, কিন্তু শেষপর্যন্ত ব্রাজিলের কোচ দরিভাল জুনিয়র নিশ্চিত করেছেন, জাতীয় দলে খেলা হচ্ছে না নেইমারের।

শুধু নেইমারই নন, চোটের কারণে স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন দানিলো ও এডারসনও। তাদের বদলি হিসেবে ডাকা হয়েছে সান্দ্রো, এন্দরিক ও লুকাস পেরিকে। দরিভাল বলেন, ‘দল ঘোষণার পর থেকে ব্রাজিল জাতীয় দলের মেডিকেল বিভাগ সকল খেলোয়াড়ের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে প্রতিনিয়ত আমাদের অবগত করেছে।  বিশেষ করে (ইনজুরিতে থাকা) দানিলো, নেইমার ও এডারসনের বিষয়ে। সবকিছু যাচাই-বাছাই শেষে আমরা তাদের পরিবর্তে সান্দ্রো, এন্দরিক ও লুকাস পেরিকে দলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

কনমেবল বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১২ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে ব্রাজিল। সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট পেতে হলে মার্চের ম্যাচগুলোতে জয় ছাড়া গতি নেই। আর এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেইমারকে না পাওয়াটা নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা সেলেসাওদের জন্য।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় দল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।

অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ