ভারতে কত পড়বে স্টারলিংক ইন্টারনেটের দাম
Published: 15th, March 2025 GMT
ভারতে আসছে স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংক। ইতিমধ্যে ভারতের দুটি কোম্পানির সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়ে গেছে। কিন্তু স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেটের খরচ সাধারণ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চেয়ে বেশি। ফলে ভারতের বাজারেও জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে, স্টারলিংকের ইন্টারনেটের ব্যয় কত পড়বে।
ভারতীয় এয়ারটেল ও জিয়োর সঙ্গে চুক্তি করেছে স্টারলিংক। মাস্কের কোম্পানি ভারতে এলে যে ইন্টারনেটের গতি কয়েক গুণ বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে স্টারলিংক সেই সুযোগ পাবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের টেলিকম মন্ত্রণালয়।
স্টারলিংক এখনো ব্যয়ের বিষয়ে ঘোষণা দেয়নি। তবে ভারতের প্রতিবেশী দেশ ভুটানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা দিচ্ছে স্টারলিংক। সেখানকার মডেল ব্যবহার করে ব্যয়সংক্রান্ত মডেল তৈরি করেছে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। হিমালয়ের কোলের দেশটিতে স্টারলিংকের মূলত দুটি প্রকল্প চালু রয়েছে। সেগুলো হলো স্টারলিংক আবাসিক ও স্টারলিংক আবাসিক লাইট।
ভুটানের প্যাকেজ মূল্যের সাপেক্ষে আবাসিক লাইট ব্যবহার করলে প্রতি মাসে গ্রাহকের ইন্টারনেট বাবদ খরচ পড়তে পারে তিন হাজার রুপি। এ ক্ষেত্রে ২৩ থেকে ১০০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট পাচ্ছেন তাঁরা। দৈনিক ব্রাউজিং, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার ও ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্যাকেজটি বেশ লাভজনক হবে বলে প্রচারে জানিয়েছে স্টারলিংক।
অন্যদিকে সাধারণ আবাসিক পরিকল্পনার খরচ কিছুটা বেশি। এই প্যাকেজ বাবদ মাসে খরচ হবে ৪ হাজার ২০০ রুপি—বিনিময়ে ২৫ থেকে ১১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেবে স্টারলিংক। এই প্ল্যানে সীমাহীন ডেটা ব্যবহার করতে পারছেন গ্রাহক। নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে গেমিং, এইচডি ভিডিও স্ট্রিমিং ও ভিডিও কনফারেন্স।
এটা তো মাসিক ব্যয়। স্টারলিংক ব্যবহার করতে গেলে একধাপে বড় খরচ আছে একটি। সেটা হলো হার্ডওয়্যারের খরচ। সে ক্ষেত্রেও দুটি সুযোগ থাকবে—স্টারলিংক মিনি ও স্টারলিংক স্ট্যান্ডার্ড। খরচের বড় খাত এটি। এর মধ্যে স্টারলিংক মিনিতে বিল্ট ইন রাউটার থাকবে। ছোট এই ডিভাইসটি ব্যাকপ্যাকে বহন করা যাবে। এর জন্য ব্যয় হবে ১৭ হাজার রুপি।
স্টারলিংক স্ট্যান্ডার্ড হার্ডওয়্যারের জন্য ব্যয় হবে আরও বেশি। এই হার্ডওয়্যারের জন্য ব্যয় হবে ৩৩ হাজার রুপি।
তবে ভারতের ভোক্তাদের ব্যয় আরও বেশি হতে পারে বলে এবিপি লাইভের সংবাদে বলা হয়েছে। মাসিক ব্যয় হতে পারে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার রুপি আর এককালীন হার্ডওয়্যারের ব্যয় হতে পারে ২০ হাজার থেকে ৩৮ হাজার রুপি। ভারতের বাজারে ইন্টারনেটের মাসিক গড় ব্যয়ের চেয়ে তা অনেক বেশি। ফলে ভারতের বাজার ধরতে কোম্পানিটিকে দাম আরও কমাতে হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
স্টারলিংকের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে রেসিডেনসিয়াল লাইট প্যাকেজের মাসিক ব্যয় ৮০ ডলার এবং রেসিডেনসিয়াল প্যাকেজের ব্যয় ১২০ ডলার। বাণিজ্যিক সংযোগের মাসিক ব্যয় ১৪০ ডলার থেকে শুরু করে ১ হাজার ৪৯৯ ডলার।
মার্কিন উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তিবিদ ইলন মাস্কের মহাকাশ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স সারা বিশ্বে স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে। স্টারলিংক নামের এই সেবা বিশ্বের প্রত্যন্ত এলাকায় তারহীন ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে। শুধু একটি অ্যান্টেনা দিয়েই সরাসরি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাড়ি কিংবা অফিস বা দুর্গম পাহাড়ে ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাচ্ছে। বিমান, জাহাজ, দুর্গম পাহাড়, জনমানবহীন অরণ্য— সবখানেই স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায়। এই ইন্টারনেটের গতিও সাধারণ ইন্টারনেটের চেয়ে ভালো।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ র ডওয় য র র ব যবহ র কর স য ট ল ইট
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯
ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।