নিজের শরীর নিয়ে মাথাব্যথা কম থাকলেও স্মার্টফোনের পরিচালন বিপত্তির পেছনে কারণ খতিয়ে দেখতে অনেকে আগ্রহী। আবার ছোটখাটো হ্যাকের ঘটনাও ঘটে নিত্যনৈমিত্তিক। সুরক্ষার প্রশ্নে স্বাভাবিক কিছু ঘটনা সামনে আসে। কিন্তু বিশেষ নজর না দেওয়ার কারণেই ঘটে বিপত্তি। চিহ্নিত কয়েকটি কারণ নিয়ে লিখেছেন সাব্বিন হাসান
ঘুম ছাড়া স্মার্টফোন জীবনের নিত্যসঙ্গী। বিষয়টি গবেষণায় প্রমাণিত। নিজেরা যদি প্রশ্ন করি, তাহলে সদুত্তরে এমন তথ্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ডিজিটাল ডিভাইস বিশেষজ্ঞরা স্মার্ট গ্যাজেটস হ্যাক হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। যার মধ্যে অতিরিক্ত তাপ, বাড়তি কলচার্জ, অদ্ভুত ফোনকল, অনিয়ন্ত্রিত অ্যাডওয়্যার, বহুরূপী অ্যাপ ও ম্যালওয়্যার হগিং রিসোর্স অন্যতম কারণ হিসেবে দৃশ্যমান হয়েছে।
ধারাবাহিক কয়েকটি লক্ষণ দেখলে নিজের ব্যবহৃত স্মার্ট ডিভাইস হ্যাক হয়েছে কিনা, তার ঠিকঠাক ধারণা পাওয়া সম্ভব।
ব্যবহৃত স্মার্টফোন হুট করে বহুমুখী অদ্ভুত সব আচরণ দৃশ্যমান করবে– ঘটনা এমন হলে শঙ্কা হতেই পারে যে ডিভাইসটি হ্যাক হয়ে গেছে, আর তা হ্যাকারের নিয়ন্ত্রণে। সাধারণত বেশ কয়েকটি লক্ষণ দেখলে মোবাইল হ্যাক হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব। ঠিক যেসব কারণে ডিভাইস হ্যাক হওয়ার প্রচেষ্টা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়, সেসব কারণ শনাক্ত করলেই হ্যাক থেকে অনেকাংশে সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।
অতিরিক্ত তাপ
প্রথমত, ডিভাইসটি হ্যাক হলে তাতে ব্যাটারি খরচ তুলনামূলক ও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া দৃশ্যমান হয়। কারণ, হ্যাক হলে ডিভাইসের ব্যাকগ্রাউন্ডে ক্ষতিকারক সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ডিভাইস টানা ব্যবহার করলে স্মার্টফোন গরম হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ফোন গরম হওয়ার পেছনের কারণ ভিন্ন হতে পারে। বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করলে ডিভাইসে স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যার উপস্থিতির প্রমাণ মিললে বিশেষ সতর্ক হতে হবে।
বাড়তি কলচার্জ
ডিভাইস হ্যাক হলে সেখানে হুট করেই ডেটা খরচ বহুলাংশে বেড়ে যায়। ফলে বুঝতে হবে, আক্রান্ত ডিভাইস থেকে নিজের অজান্তে তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য প্রেরণে সক্রিয়। প্রিমিয়াম পরিষেবা বা আন্তর্জাতিক কলের জন্য চার্জ অনেকাংশে ও আগের তুলনায় নির্দেশনা ছাড়াই বাড়তি চার্জ কেটে নেওয়া।
অনিয়ন্ত্রিত অ্যাডওয়্যার
আবার ফোন হ্যাক হলে পপ আপ বা বিজ্ঞাপনের দৃশ্যমান মাত্রা আচমকা বহুলাংশে বেড়ে যায়। এমনকি কোনো ব্রাউজার ব্যবহার না করলেও ঘটনা এমন হতে পারে। অনেকে একে ‘অ্যাডওয়্যার’ সংক্রমণের লক্ষণ বলে চিহ্নিত করেছেন।
বহুরূপী অ্যাপ
ঘটনা এমনও হতে পারে, নিজের ডিভাইসে অচেনা অ্যাপ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ডাউনলোড হয়ে যেতে থাকে। যদি দৃশ্যমান পরিস্থিতি এমন হয়, তাহলে সেটা ফোন হ্যাক হওয়ার অন্যতম কারণ।
হগিং রিসোর্স
কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে ফোন আচমকা ধীরগতি (স্লো) হয়ে পড়েছে। এমনটা অনুভূত হলে বুঝতে হবে, ডিভাইসে ম্যালওয়্যার হগিং রিসোর্সের আক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। সর্বশেষ যা ঘটলে হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা প্রায় নিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া যায়।
অদ্ভুত ফোনকল
অন্যদিকে, কোনো ফোন হ্যাক হয়ে গেলে বিশেষ বা অপ্রয়োজনীয় কোনো কোনো অ্যাপ নিজে থেকেই স্বয়ংক্রিয় রূপ ধারণ করে বা অন্যের কাছে নিজ থেকেই মেসেজ বা ফোনকল করে বসে। যদি পরিচিতজনের কাছ থেকে এমন অভিযোগ সামনে আসে, তাহলে বুঝতে হবে ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে হ্যাকার চক্র। তখন ঘটতে পারে যে কোনো ধরনের ক্ষতি। ঘটনাটা অনুমান করা সহজ নয়। তবে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্যই এমনটা ঘটেছে, তা নিশ্চিত হয়ে যাবেন। উল্লিখিত সব কারণ থেকে ডিভাইসকে সুরক্ষা দিলে হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ য ক হওয় র হ য ক হল হ য ক হয় ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।