রূপগঞ্জে মোতাহার হোসেন নামের এক স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পূর্বাচল হেলপেট চত্বর ১৯নং সেক্টর এলাকায় ঘটে ঘটনা।

ভাঙ্গারি মালামাল বিক্রিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কামরুল ইসলাম এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পূর্বাচল হেলপেট চত্বর ১৯নং সেক্টর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মোতাহার হোসেন উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের কালনি এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি রুপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

মোতাহার হোসেন অভিযোগ করে জানান, কালনি এলাকার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে কামরুল ইসলাম বিগত আওয়ামী শাসন আমল থেকে এলাকায় প্রভাব বিস্তার খাটিয়ে বিভিন্ন চোরাইকৃত মালামাল বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে আসছে।

সোমবার দুপুরে পূর্বাচল হেলপেট চত্বর ১৯নং সেক্টরে ভেতরে কামরুল ইসলাম চোরাইকৃত ভাঙ্গারি মালামাল বিক্রি করার সময় ঘটনাস্থলে গিয়ে নিষেধ করি। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মাঝে তর্কবিতর্ক শুরু হয়।

তিনি জানান, একপর্যায়ে কামরুল লোহার রড দিয়ে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে বেধড়ক মারধর করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো হামলা করিনি। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা ঘটনাস্থলে এসে খোঁজখবর নিয়ে দেখুন।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার

দেশের প্রতি চারজনের একজন মানুষ এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা কমিশনে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন জিইডির সদস্য (সচিব) মনজুর হোসেন। আলোচক ছিলেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিবিএসের ২০১৯ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের (এমআইসিএস) তথ্য ব্যবহার করে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) নিরূপণ করা হয়েছে।  বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হলো দারিদ্র্য পরিমাপের একটি বিস্তৃত পদ্ধতি, যা শুধু আয় বা ভোগের মতো একক মাত্রার বাইরে গিয়ে দারিদ্র্যকে তার বিভিন্ন দিক থেকে বুঝতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের এ সূচকে তিনটি মাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাতে জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই মাত্রাগুলোকে ১১টি আলাদা সূচকে ভাগ করা হয়েছে। যেমন জীবনযাত্রার মানের মধ্যে রয়েছে—বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, খাওয়ার পানি, বাসস্থান, রান্নার জ্বালানি, সম্পদ এবং ইন্টারনেট সংযোগ।

এমপিআই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ২৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে রয়েছে, যা সংখ্যায় প্রায় ৩ কোটি ৯৮ লাখ। গ্রামীণ এলাকায় এই হার ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আর শহরে ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে এই দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর পাঁচটি জেলায় ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। জেলাগুলো হলো—বান্দরবান, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি ও ভোলা। শিশুদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

প্রধান অতিথি আনিসুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে এমপিআই-কে দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি নতুন ও উদ্ভাবনী কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পদ্ধতি সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে। তিনি এ সূচককে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এ ছাড়া কিছু জেলায় দারিদ্র্যের হার বেশি হওয়ার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে আরও গবেষণা করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এমপিআই ব্যবস্থাটি আয়ভিত্তিক দারিদ্র্য মাপকাঠিকে সম্পূরকভাবে সহায়তা করবে এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। সভাপতির বক্তব্যে মনজুর হোসেন জানান, জিইডি ভবিষ্যতেও নিয়মিত এই সূচক প্রকাশ করবে এবং নীতিনির্ধারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ