দিনাজপুরে একই দড়িতে ঝুলছিল মা ও মেয়ের লাশ
Published: 18th, March 2025 GMT
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় একই দড়িতে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে উপজেলার এলুয়ারী ইউনিয়নের লিচুপাড়া গ্রাম থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, পার্বতীপুর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের চকযামেনি কাজীপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে লাকি বেগম (২৬) ও লাকি বেগমের মেয়ে মরিয়ম (০৬)। এ ঘটনায় লাকি বেগমের স্বামী ওই এলাকার আনসার আলীর ছেলে মহরম আলী (৪৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে লাকি বেগম ও মহরম আলীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানেরও জন্ম হয়। বেশ কিছুদিন ধরে লাকির স্বামী পরকীয়ার বিষয় নিয়ে সন্দেহ করতেন এবং এ বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। এর আগে মহরম আলীর বিয়ে হয়েছিল, সেই সংসারে তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকালে প্রথম স্ত্রীর মেয়েকে সেমাই-চিনি দিতে যান মহরম আলী। দুপুরে লাকি বেগম ও মরিয়মকে বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী মহরম আলীকে আটক করে।
আরো পড়ুন:
ছাত্র আন্দোলনে নিহত তানজিন তিশার সহকারীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন
নেত্রকোণার ধনু নদ থেকে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার
নিহত লাকি বেগমের মা মঞ্জিলা বেগম জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার জামাতা মহরম আলী ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মেয়েকে মেরে ফেলার কথা বলে। তার মেয়েকে তার জামাতা হত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ফুলবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লাশ দুটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে।
ঢাকা/মোসলেম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে উত্তাল রাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ বিক্ষোভ করছেন রাবি শাখা ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
চাকসু: ৩ পদ শূন্য রেখে বামপন্থিদের ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গাইবান্ধায় নেওয়া হলো খুবি শিক্ষার্থীর মরদেহ
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটা ফিরিয়ে নে’, ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘২৪-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘জামাই কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগামী ২৫ তারিখের রাকসু নির্বাচনকে পুঁজি করেই শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই অবৈধ পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি তুলেছেন এবং তা বাস্তবায়ন করেছেন। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যেই এ দাবি সামনে আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাকসুর জিএস পদপ্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “পোষ্যকোটার মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরিত করা হয়েছিল। অনেক সংগ্রাম আর ত্যাগের ফলে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আমরা রাকসু পেতে যাচ্ছি। রাকসুকে জিম্মি করে পোষ্য কোটা নামক অন্যয্য জিনিসকে তারা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। অর্থাৎ পুরাতন মদ তারা নতুন মোড়কে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।”
তিনি বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা থাকতে, আমরা থাকতে এই পোষ্য কোটা কখনো ফিরে আসতে দেব না। আমরা ২৫ তারিখেই রাকসু চাই এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার নামে পোষ্য কোটা ফিরিয়া আনার চেষ্টা করা হলে আমরা তা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।”
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এবং রাকসুর ভিপি পদপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “পোষ্য কোটা একটা মীমাংসিত ইস্যু হওয়া স্বত্বেও আবার তা পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং এটা প্রশাসনের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ তারিখ রাকসু নির্বাচন, এ মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটা দ্বিমুখী অবস্থায় নিয়ে আসা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “রাকসু বানচাল করার জন্য যে গোষ্ঠী কাজ করছে, তারা তাদের সর্বশেষ চেষ্টাটা কাজে লাগানোর জন্য এ পোষ্য কোটাকে কাজে লাগাচ্ছে। আমরা পোষ্য কোটাকে আবার ফিরে আসতে দিতে চাই না এবং রাকসুকে সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই।”
এর আগে, পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ তিন দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজকের মধ্যে দাবি বাস্তবায়িত না হলে ২১ তারিখ হতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার একটি বৈঠকে এই পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বেশকিছু শর্তসাপেক্ষে রাবিতে প্রতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যতম প্রধান শর্তের মধ্যে রয়েছে- স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ পেয়ে পাস করা শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী